চ্যানেল বন্ধে মোদী সরকারের অতি সক্রিয়তা ও আদালত
Modi government's excessive activism

গোদি মিডিয়া, অর্থাৎ, নরেন্দ্র মোদী সরকার ও বিজেপি’র ধামাধরা সংবাদ মাধ্যম যদি আজকের বাস্তব পরিস্থিতির একটা দিক হয়ে থাকে, তবে সরকারের হুমকি ও ভীতি প্রদর্শনকে উপেক্ষা করে স্বাধীন ধারায় সংবাদ সম্প্রচারের প্রতি অনুগত থাকা মিডিয়ার বিদ্যমানতাও অনস্বীকার্য। মূল ধারার মিডিয়ার এক বড় অংশ মোদী সরকার অনুসৃত নীতিমালার প্রচারে যেমন সক্রিয়, এরসাথে হিন্দুত্বের প্রতি সমর্থনেও তারা কুণ্ঠাহীন। তবে, এরই পাশাপাশি মোদী সরকারের কার্যধারার, সংখ্যাগুরুবাদী পন্থার সমালোচক মিডিয়ার একটা অংশও — সেটা আকারে ছোট হলেও — নিজেদের অস্তিত্ব ঘোষণা করে চলেছে। ফলে তারা সরকারের বিষ নজরে পড়ে, তাদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তার প্রতি বিপজ্জনক হওয়ার ও দেশদ্রোহের অভিযোগ এনে, মানহানির মামলা করে তাদের সম্প্রচারকে আটকানোর চেষ্টা হয়। সরকারের সমালোচক সাংবাদিকদেরও জেলে পোরা হয়, তাঁরা দৈহিক হিংসার শিকার হন, এবং শাসক দলের অপ্রিয় কিছু সাংবাদিককে হত্যা করাও হয়েছে। সরকার যেমন চায় সেরকম সংবাদ সম্প্রচারের প্রতি অনুগত ছিল না কেরলের মালায়ালাম ভাষার চ্যানেল মিডিয়া ওয়ান, যার মালিক মধ্যমা ব্রডকাস্টিং লিমিটেড। নরেন্দ্র মোদী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক এবছরের ৩১ জানুয়ারি এক আদেশ বলে তাদের সম্প্রচার লাইসেন্স নবীকরণ করতে অস্বীকার করে, ফলে ঐ চ্যানেলের খবর সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক লাইসেন্স নবীকরণ না করার যুক্তি হিসাবে বলে এই চ্যানেল ‘জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক’, এবং ‘বিপজ্জনক’ হওয়ার এই সংবাদ তারা পেয়েছে অমিত শাহর নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছ থেকে। কিন্তু ‘বিপজ্জনক’ হওয়ার মত কি কাজ ঐ চ্যানেল করেছে তা তাদের জানানো হয় না। চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে ফলে আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়।

সরকার নিরাপত্তার কথা উত্থাপন করলে সবাই যেন কুঁকড়ে যায়, নির্দিষ্ট প্রসঙ্গের বিচার-বিবেচনা, সরকার গৃহীত অবস্থানের যৌক্তিকতার মূল্যায়ন চাপা পড়ে যায় ‘নিরাপত্তার বিপদের’ গুরুভার’এর নিচে। সুপ্রিম কোর্ট মনোহরলাল শর্মা বনাম কেন্দ্রীয় সরকার মামলায় বলেছিল যে, জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে পর্যালোচনার সুযোগ বিচারবিভাগের কাছে সীমিত, কিন্তু তার মানে এই নয় যে, যতবার নিরাপত্তার জুজু দেখানো হবে ততবারই তারা ফ্রী পাস বা অবাধ ছাড়পত্র পেয়ে যাবে। অর্থাৎ, সরকার যা বলছে সেটাকেই ধ্রুব সত্য বলে মেনে নেওয়া হবে। কিন্তু মিডিয়া ওয়ান’এর ক্ষেত্রে কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি এন নাগারেশ ‘নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক’এর কথা শুনেই সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞাতেই সায় দিলেন, খবরের চ্যানেলটি জাতীয় নিরাপত্তাকে বিপন্ন করার মতো কাজ করেছে কিনা তার বিচারেই গেলেন না। তিনি তাঁর রায়ে বললেন, “যেহেতু জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে, আমি তাই অন্তর্বর্তী আদেশটিকে এক ঘন্টা সম্প্রসারিত করতেও রাজি নই”। এরপর ডিভিসন বেঞ্চে আবেদনেও ভিন্ন কোনো ফল ফলল না। বিচারপতিরা তাঁদের কাছে মুখবন্ধ খামে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পেশ করা ফাইলগুলো পরীক্ষা করে বললেন — খবরের চ্যানেলের মালিক মধ্যমা ব্রডকাস্টিং লিমিটেড’এর সঙ্গে কিছু শক্তির যোগ রয়েছে বলে বলা হয়েছে যে শক্তিগুলো বিপজ্জনক। ডিভিসন বেঞ্চ তাদের রায়ে এই কথাটারও উল্লেখ করে যে, মধ্যমা ব্রডকাস্টিং ও তার প্রধান পরিচালকের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরোর কিছু সমালোচনামূলক রিপোর্টও রয়েছে। কিন্তু যে ফাইলগুলো আদালতের কাছে পেশ করা হল, সেগুলো পরীক্ষা করে আদালত কি মধ্যমা ব্রডকাস্টিং’এর দেশের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক হওয়া সম্পর্কে সুনিশ্চিত হয়েছিল? ডিভিসন বেঞ্চ তাদের উপলব্ধির কথা জানিয়ে বলেছে, “একথা ঠিকই যে, ফাইলগুলো থেকে বিষয়টার প্রকৃতি, প্রভাব এবং গুরুত্ব ও গভীরতা সম্পর্কে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। তবে, এরই সাথে জনজীবনে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার ওপর প্রভাব বিস্তারের সুস্পষ্ট ও তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত রয়েছে। …” অর্থাৎ, নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক হওয়ার যে অভিযোগ আনা হল, ফাইলগুলো পড়ে বিচারপতিরা সেই অভিযোগের সারবত্তাকে অনুধাবন করতে পারলেন না। কিন্তু, যেহেতু বিপজ্জনক হওয়ার ‘সুস্পষ্ট ও তাৎপর্যপূর্ণ’ ইঙ্গিত রয়েছে, তাঁরা তাই চ্যানেলটির সম্প্রচার বন্ধ রাখার পক্ষেই মত দিলেন। এইভাবে অভিযোগটির যৌক্তিকতার বিচারের পরিবর্তে নিরাপত্তার প্রতি বিপজ্জনক হওয়ার যে সংকেত কেন্দ্রীয় সরকারের ফাইলে দেওয়া হয়েছে, সেটাই তাঁদের রায়ের পক্ষে নির্ধারক হয়ে উঠল।

এরপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন হল সুপ্রিম কোর্টে এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, সুর্যকান্ত ও বিক্রম নাথের বেঞ্চ তাঁদের কাছে মুখবন্ধ খামে পেশ করা কেন্দ্রের ফাইলগুলো পরীক্ষা করলেন। এবং ১৫ মার্চ তাঁদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে বললেন, “পেশ করা ফাইলগুলোকে অধ্যয়ন করে ও সেগুলোর বিষয়বস্তুর যথাযোগ্য বিবেচনা করে বর্তমান পর্যায়ে আমাদের অভিমত হল, আবেদনকারীদের পক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন সুরাহা লাভের অনুকূলে যুক্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমরা অতএব আদেশ করছি এবং নির্দেশ দিচ্ছি যে, কেন্দ্রীয় সরকার নিরাপত্তার ছাড়পত্র প্রত্যাহার করে নিয়ে — যেটা আবেদনকারী মধ্যমা ব্রডকাস্টিংকে দেওয়া হয়েছিল — ২০২২’র ২১ জানুয়ারি যে আদেশ দিয়েছিল, পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেই আদেশ স্থগিত থাকবে।” কেরল হাইকোর্টের ডিভিসন বেঞ্চের রায় প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট একটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্যও করে — “ডিভিসন বেঞ্চ বলেছে যে ফাইলগুলো থেকে বিস্তারিত কিছু জানা যাচ্ছেনা। এটাই হল বিপদ।” অতএব, অভিযুক্তর অপরাধ সম্বন্ধে সুনিশ্চিত না হয়েও কেরল হাইকোর্টের সিঙ্গল ও ডিভিসন বেঞ্চ সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন জানিয়েছে।

খবরের চ্যানেল মিডিয়া ওয়ানকে যেভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল তা সামগ্ৰিক গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির গুরুতর অবনতিরই নির্দেশক। এরমধ্যে অবশীভূত চ্যানেলের প্রতি সরকারের প্রতিহিংসার মনোভাবের সুস্পষ্ট সংকেত ধরা পড়ছে। সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, মিডিয়া ওয়ান’এর মালিকানা যাদের, সেই মধ্যমা ব্রডকাস্টিং’এর পরিচালকরা মুসলিম। চ্যানেলটিতে মুসলিমদের ইস্যুগুলি নিয়ে প্রচার প্রধান্য পায়। আর সেই প্রচার অনেক সময়ই সরকারের অভিলাষিত ধারায় হয়না, এবং অনেক ইস্যুতে সরকারের সমালোচনাও ব্যক্ত হয়। এটাই কি তবে ঐ চ্যানেলের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের রক্তচক্ষু প্রর্দশনের কারণ? এরআগে, ২০২০ সালের মার্চ মাসে দিল্লী দাঙ্গার খবর সঞ্চার নিয়েও চ্যানেলটির সম্প্রচার ৪৮ ঘন্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সরকারের মতে, সেই সম্প্রচারে “উপাসনাস্থলে আক্রমণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল এবং সম্প্রচার একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের দিকে ঝোঁকা ছিল।” ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা নিউজক্লিক সংবাদ মাধ্যমের বিভিন্ন অফিসে আয়কর দপ্তরকে হানা দিতে এবং সংবাদ মাধ্যমের সম্পাদকদের ১০০ ঘন্টা ধরে জেরা করতে দেখেছিলাম। সরকার মুখে আয়কর ফাঁকির কথা বললেও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ঐ চ্যানেলে কৃষক আন্দোলন এবং সিএএ বিরোধী আন্দোলনের প্রচারে গুরুত্ব প্রদানই সরকারের বিদ্বেষ আকর্ষণ করেছিল। দৈনিক ভাস্কর এবং ভাস্কর সমাচার ছিল উত্তরপ্রদেশের সংবাদপত্র ও খবরের চ্যানেল। এই দুটো সংবাদ মাধ্যমেই কোভিড অতিমারীর ছড়িয়ে পড়া ও তার মোকাবিলায় মোদী-যোগী সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছিল। এই দুটোতেই ২০২১’র জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে আয়কর দপ্তরকে হানা দিতে দেখা গিয়েছিল। সরকারের সমালোচক হলে সরকারের রোষে পড়তে হবে — এই ব্যাপারটাকে জাহির করতে মোদী সরকারের কোনো রাখঢাক নেই, বুক ফুলিয়ে ঔদ্ধত্য জাহির করেই তারা হুমকিবাজি চালায়।

মিডিয়া ওয়ান মামলা আর একটি লক্ষণীয় বিষয়কেও সামনে নিয়ে এসেছে — আর সেটা হল অভিযুক্তর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তাকে জানতে না দেওয়ার অন্যায্যতা সম্পর্কে। বিষয়টা উঠেছে মুখবন্ধ খামে বিচারপতিদের কাছে রিপোর্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে। বিচারপতিরা মুখবন্ধ খামের রিপোর্ট পড়লেন, কিন্তু অভিযুক্তকে — আলোচ্য ক্ষেত্রে মধ্যমা ব্রডকাস্টিং লিমিটেডকে — মুখবন্ধ খামে তার বিরুদ্ধে বিধৃত অভিযোগ জানতে দেওয়া হল না। ফলে অভিযোগ খণ্ডনের সুযোগ থেকেও সে বঞ্চিত হল। এটা কি ন্যায়বিচার লাভের সঙ্গে আদৌ সঙ্গতিপূর্ণ? সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট পেশের সংস্কৃতির বিরুদ্ধাচারণ করেছেন। বিহার সরকার জড়িত ছিল এমন একটা মামলায় বিচারপতি রামানা বিহারের কৌঁসুলিকে বলেন, “অনুগ্ৰহ করে আমাদের মুখবন্ধ খাম দেবেন না, এখানে আমরা ওগুলো চাই না।” তাঁর অভিমত অতএব এটাই যে, আদালতের কাছে যা পেশ করা হচ্ছে তা জানার অধিকার অভিযুক্ত সহ সকলেরই আছে। বর্তমান বিচারপতি মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট পেশের বিরোধিতা করলেও সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন এক প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট পেশের এই রীতিটি চালু করেন (রাফাল যুদ্ধ বিমান ক্রয় দুর্নীতি মামলা ও অন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তিনিই সংশ্লিষ্ট পক্ষকে মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেন) এবং তারপর থেকে সর্বোচ্চ আদালত সহ নিম্ন আদালতগুলিতেও মুখবন্ধ খাম একটি চালু রীতি হয়ে ওঠে। আলোচ্য মামলাটিতে বিচারপতিরা অভিযুক্তকে মুখবন্ধ খামে পেশ করা রিপোর্ট এখনও দেখতে দেননি, তবে তাঁরা বিষয়টিকে খোলা রেখেছেন, এবং মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়ার আগে বিষয়টার ইতিবাচক ফয়সালা হবে বলেই মনে হয়।

মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনও বাকি থাকলেও সংবাদ সম্প্রচার শুরু করার নির্দেশ দিয়ে যে অন্তর্বর্তীকালীন সুরাহা বাদীপক্ষ মধ্যমা ব্রডকাস্টিং’এর করা হল তা কয়েকটি বিষয়ের গুরুত্বকে প্রশ্নহীন করে তুলেছে — প্রথমত, সরকার কারুর বিরুদ্ধে নিরাপত্তা হানির অভিযোগ আনলে তাতে সায় দেওয়াটাই ন্যায়বিচারের নিদর্শন হতে পারে না। অভিযোগের যৌক্তিকতা বিচারের পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এবং নিম্ন আদালতগুলিও এই নিয়মকে এড়িয়ে যেতে পারে না। দ্বিতীয়ত, অভিযুক্তর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অভিযুক্তকে জানতে দিতে হবে যাতে সে অভিযোগ খণ্ডনের সুযোগ পায়। অভিযোগকে মুখবন্ধ খামে শুধুই বিচারপতিদের অধ্যয়নের মধ্যে আটকে রাখলে চলবে না। তৃতীয়ত, নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ হাজির না করে এবং অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের অধিকার সরকারের থাকতে পারে না। চতুর্থত, সমালোচনা বা বিরোধী স্বর যেমন গণতন্ত্রের পক্ষে, তেমনই সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষেও অপরিহার্য।

মধ্যমা ব্রডকাস্টিং আইনি লড়াইয়ে সর্বোচ্চ আদালতের কাছ থেকে কিছুটা সুবিধা পেয়েছে ঠিকই। কিন্তু অপছন্দের সংবাদ মাধ্যম এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামলা যে হারে বাড়ছে তাতে সংবাদ জগতের স্বাধীনতাকে অপ্রতিহত রাখতে বৃহত্তর রাজনৈতিক ও গণপ্রতিরোধই যে আবশ্যক তার উল্লেখ বোধকরি নিষ্প্রয়োজন।

- জয়দীপ মিত্র

খণ্ড-29
সংখ্যা-12