অতিমারীর মারে ভারতে কাজ ছুটে যায় লক্ষ লক্ষ শ্রমজীবি মানুষের। তার কত শতাংশ কাজ ফিরে পেয়েছেন কেন্দ্রের মোদী সরকার তার কোনও হিসাব এখনও করেনি। এই কাজে গুরুত্ব দিয়ে হাত দিচ্ছে না। কোন যে তাগিদ রয়েছে তাও বোধগম্য হচ্ছে না। তবে মধ্যবিত্ত স্তর থেকে অর্থনৈতিক অবস্থার ক্রমাবনতি নিম্নবিত্তের শতাংশকে ক্রমেই বিপুলতর করে চলেছে। আর গরিবের অংশও বাড়ছে। বেড়ে চলেছে গরিবদের মধ্যে গরিবতম অংশ। কর্মহীনতা, অনিয়মিত মজুরি, মজুরি হ্রাস — এগুলোই এই সময়ে গরিবী বেড়ে যাওয়ার মূল মূল কারণ।
পক্ষান্তরে, এদেশে ২০২১ অর্থবর্ষ শেষে এসে অতি উচ্চ নিট ব্যক্তিগত আয় তথা সম্পদের অধিকারী অতি-ধনী বর্গের বৃদ্ধি হয়েছে ১১ শতাংশ। বিশ্ব প্রেক্ষিতে এই বর্গের বৃদ্ধি ঘটেছে যেখানে ৯.৩ শতাংশ, সেখানে ভারতীয় বাস্তবতায় সেটা আরও ছাপিয়ে গেছে। এক আন্তর্জাতিক পরিচিতি সম্পন্ন কনসালটিং ফার্মের তৈরি এক বিশ্ব ধনসম্পদ সংক্রান্ত রিপোর্ট কার্ডে উপরোক্ত তুলনামূলক বৃদ্ধির তথ্য পরিসংখ্যান উল্লেখ হয়েছে। তাতে উল্লেখ হয়েছে, কোটিপতিদের জনসংখ্যাগত দিক থেকে ভারতের ধনাঢ্য বর্গ রয়েছে বিশ্বে তৃতীয় শীর্ষতম স্থানে। মার্কিন মুলুক ও চীনের ঠিক পরে। এই মাত্রায় ধনকুবেরদের সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৭৪৮ ও চীনে ৫৫৪, আর ভারতে ১৪৫। ভারতের অভ্যন্তরে এই অংশের সম্পদ অধিকারিদের সংখ্যাগত আধিক্য সবচেয়ে বেশি মুম্বইয়ে, তারপরে যথাক্রমে রয়েছে হায়দ্রাবাদ, পুণে ও দিল্লীতে। এছাড়া স্টার্ট আপ পুঁজির যে হারে দ্রুতগতির বৃদ্ধি ঘটছে ও উক্ত পুঁজির রাজধানী হয়ে উঠছে বেঙ্গালুরু তাতে মনে করা হচ্ছে দু-তিন বছরে চলে আসতে পারে মুম্বইয়ের ঠিক পরেই, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে!
অসাম্যের ব্যবধান ক্রমাগত বেড়ে চলার অর্থব্যবস্থা আরও গেঁড়ে বসছে বিশ্ব চরাচরে, চেপে বসছে ভারতে।