সম্প্রতি ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকায় ইজরায়েলি সফটওয়্যার ‘পেগাসাস’ — যার মাধ্যমে সরকার বেআইনিভাবে অন্যের ব্যক্তিগত ফোনে বা কম্পিউটারে আড়িপাতে, সেই সম্পর্কে একটি তথ্যমূলক বিস্তৃত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে নির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে মোদী যখন ইজরায়েলে যান তখন মোদী এবং নেতানিয়াহু’র মধ্যে ২০০ কোটি ডলারের একটি প্যাকেজ কেনার সমঝোতা হয়। এই প্যাকেজের মূল বিষয় ছিল ফোনে আড়িপাতার প্রযুক্তি পেগাসাস এবং একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইজরায়েল ভারতকে রপ্তানি করবে।
আমরা জানি ভীমা কোরেগাঁও মামলায় বন্দীদের ফোনে পেগাসাসের সাহায্যে আড়িপেতে মিথ্যা প্রমাণ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া পেগাসাস এমন একটি গোয়েন্দাগিরি তথা আড়িপাতার ব্যবস্থা যা ফোনের ক্যামেরাকেও নিয়ন্ত্রণ করে। এহেন পেগাসাসকে দেশের বহু সাংবাদিক, বিরোধী নেতা, অন্যান্য নেতা ও বহু মহিলাদের ফোনেও গোপনে স্থাপন করা হয়। নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেছে ভারত সরকার এই পেগাসাস কিনেছেন। সুতরাং ভারতীয় নাগরিকদের ওপর এই গোয়েন্দাগিরি ও তাদের ব্যক্তিগত পরিসরে হানা দিয়ে নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারকে লঙ্ঘন করেছে মোদী সরকার। সরকারি কোষাগারের করদাতাদের কোটি কোটি টাকা এবং বাজেট বহির্ভূতভাবে পার্লামেন্টের অনুমোদন ছাড়া এই ব্যয়বহুল বেআইনি সফটওয়্যার (পেগাসাস) কেনা হয়েছে। কেবলমাত্র শাসক পার্টির কাছে রাজনৈতিকভাবে যারা বিপদজনক, তাদের ফোনেই এই আড়িপাতা হয়েছে। বিজেপি’র কয়েকজন নেতার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য জনগণের করের টাকা ব্যবহার করে এই বেআইনি পেগাসাস কেনা মহা দুর্নীতির নমুনা।
নাগরিকদের ব্যক্তিগত জীবনে নজরদারি বিশেষত সাংবাদিক, সমাজকর্মী, রাজনৈতিক নেতা যাঁরা সরকারের সমালোচক তাঁদের ফোনে পেগাসাসের মাধ্যমে আড়ি পাতার জন্য মোদী প্রত্যক্ষভাবে দায়ী ও তাঁর শাস্তি পাওয়া উচিত।
রাঁচীর অ্যালবার্ট এক্কা চকে সিপিআই(এমএল)-এর রাঁচী শহর কমিটি পেগাসাস দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ সভায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের পেগাসাস নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় বিজেপি নেতাদের একের পর এক মিথ্যাচারের মুখোশ খুলে যাচ্ছে। ভারতের মত দেশে যেখানে বহু মানুষ অনাহারে মারা যাচ্ছে সেখানে নজরদারি চালানোর জন্য কোটি কোটি টাকা সরকারিভাবে খরচ করাটা আপামর জনতার প্রতি অপমানজনক। মোদী সরকার মিথ্যাচার বন্ধ করুন, সত্যকে মেনে নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন।