সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে এক তৃণমূল সাংসদ কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের কাছে জানতে চান, গত পাঁচ বছরে পেট্রল-ডিজেলে শুল্ক-সেস বাবদ কেন্দ্রীয় সরকার মোট কত টাকা আদায় করেছে এবং ওই রাজস্ব থেকে কতটা অংশ রাজ্যগুলিকে ভাগ দিয়েছে?
প্রথম প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধরি জানান, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাস থেকে এ বছর মে মাস অবধি পেট্রল ও ডিজেল শুল্ক ও সেস মিলিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ১১.৭৪ লক্ষ কোটি টাকা আদায় করেছে। দ্বিতীয় প্রশ্নের সোজাসুজি জবাব এড়িয়ে গিয়ে বলেন, অর্থ কমিশনের কেন্দ্র-রাজ্য কর বণ্টনের ফর্মুলা মেনে প্রতি মাসে কেন্দ্রীয় রাজস্ব তহবিল থেকে রাজ্যগুলিকে প্রাপ্য মেটানো হয়। পণ্য ভিত্তিক কর বণ্টনের কোনও তথ্য আলাদা করে রাখা হয় না।
তৃণমূলের আরেক সাংসদ এদিন কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের কাছে জানতে চান, প্রতি লিটার পেট্রল ও ডিজেলে বর্তমানে কী পরিমাণ কেন্দ্রীয় শুল্ক নেওয়া হয় ও তার উপাদান-ভিত্তিক (যেমন, বুনিয়াদি উৎপাদন শুল্ক, সড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়ন সেস, কৃষি সেস প্রভৃতি) বিস্তৃত বিবরণ এবং এই কেন্দ্রীয় শুল্কের কতটা রাজ্যগুলির সঙ্গে ভাগ করা হয়? উত্তরে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে (৯ নভেম্বর থেকে পেট্রল-ডিজেলে উৎপাদন শুল্ক কমানোর পর) ব্র্যান্ডেড নয় এমন পেট্রলের প্রতি লিটারে ২৭.৯০ টাকা এবং ডিজেলে ২১.৮০ টাকা করে কেন্দ্রীয় শুল্ক নেওয়া হয়। এই কেন্দ্রীয় শুল্কের মধ্যে বুনিয়াদি (বেসিক) উৎপাদন শুল্ক হল, পেট্রলের জন্য লিটার প্রতি ১.৪০ টাকা এবং ডিজেলে ১.৮০ টাকা। মোট কেন্দ্রীয় শুল্কের মধ্যে মাত্র এইটুকুই কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে ভাগাভাগি হয় অর্থ কমিশনের ফর্মুলা মেনে। ওই ফর্মুলা অনুযায়ী, রাজ্যগুলি পায় ৪১ শতাংশ এবং কেন্দ্র পায় ৫৯ শতাংশ। লিটার পিছু পেট্রল ও ডিজেল বিক্রি থেকে অবশিষ্ট যথাক্রমে ২৬.৫০ টাকা এবং ২০ টাকা শুধুমাত্র কেন্দ্র পায় এবং রাজ্যগুলির সঙ্গে ওই টাকার কোনও ভাগাভাগি হয় না।
- এই সময়
গত পাঁচবছরে বেশিরভাগ রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে শিশু এবং মহিলাদের মধ্যে রক্তাল্পতার প্রকোপ বেড়েছে। ‘ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে’র সাম্প্রতিক ফলাফল অনুসারে, ২০১৬ সালে ৫৮.৬ শতাংশের বিপরীতে ২০২১ সালে ৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে রক্তশূন্যতার (অ্যানেমিক) হার বেড়ে হয়েছে ৬৭.১ শতাংশ।
বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের দ্বারা প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, ২৮টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রক্তশূন্য শিশুদের সংখ্যা বেড়েছে। জাতীয় রাজধানী দিল্লীতে ৬৯.২ শতাংশ শিশু এবং ৪৯.৪ শতাংশ মহিলা রক্তাল্পতায় ভুগছেন। রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথমে রয়েছে গুজরাট। সমীক্ষা অনুসারে, গুজরাটে অ্যানেমিক শিশুদের সংখ্যা ৭৯.৭ শতাংশ।
অসমে অ্যানেমিক শিশুদের সংখ্যা ২০১৬ সালের ৩৫.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২১ সালে ৬৮.৪ শতাংশ হয়েছে।
স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মতে, দীর্ঘ শীতকালে তাজা শাকসব্জি এবং ফলের স্বল্প সরবরাহের কারণে, লাদাখে ৯২.৫ শতাংশ অ্যানিমিক শিশু রয়েছে। এছাড়া, দাদারা এবং নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ (৭৫.৮ শতাংশ), মধ্যপ্রদেশ (৭২.৭ শতাংশ), জম্মু ও কাশ্মীর (৭২.৭ শতাংশ), রাজস্থান (৭১.৫ শতাংশ), পাঞ্জাব (৭১.১ শতাংশ), হরিয়ানা (৭০.৪ শতাংশ), তেলেঙ্গানা (৭০.০ শতাংশ), বিহার (৬৯.৪ শতাংশ), আসাম (৬৮.৪ শতাংশ) পশ্চিমবঙ্গ (৬৯.০ শতাংশ), মহারাষ্ট্র (৬৮.৯ শতাংশ) এবং উত্তরপ্রদেশ (৬৬.৪ শতাংশ)। সব মিলিয়ে, ১৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে তাদের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি শিশু রক্তাল্পতায় আক্রান্ত।
মহিলাদের মধ্যে প্রায় ৫৭ শতাংশ রক্তাল্পতা দেখা গেছে, যা ২০১৬ সালে ৫৩.১ শতাংশ থেকে ৩.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ২৩টি রাজ্যে মহিলাদের রক্তাল্পতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে মহিলাদের মধ্যে রক্তাল্পতায় প্রথম সারিতে হল পশ্চিমবঙ্গ (৭১.৪ শতাংশ), ত্রিপুরা (৬৭.২ শতাংশ), অসম (৬৫.৯ শতাংশ), জম্মু ও কাশ্মীর (৬৫.৯ শতাংশ), ঝাড়খণ্ড (৬৫.৩ শতাংশ), গুজরাট (৬৫.০ শতাংশ), ওড়িশা (৬৪.৩ শতাংশ) এবং বিহার (৬৩.৫ শতাংশ)।
যেসব রাজ্যে রক্তাল্পতাজনিত শিশু ও মহিলাদের সংখ্যায় বিপরীত প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে সেগুলো হল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, চণ্ডীগড়, দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ, হরিয়ানা, লক্ষদ্বীপ এবং মেঘালয়।
শিশু ও মহিলাদের মধ্যে রক্তশূন্যতার হার কম রয়েছে এমন রাজ্যগুলি হল কেরালা, মণিপুর, মিজোরাম এবং নাগাল্যান্ড।
- নিউজ ক্লিক, ২৬ নভেম্বর ২০২১