রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে গেল পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি
খুচরো বাজারের পাশাপাশি পণ্যের নজিরবিহীন মূল্যবৃদ্ধির সাক্ষী হল দেশের পাইকারি বাজারও। প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, অক্টোবরে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার ১২.৫৪ শতাংশ থাকলেও নভেম্বরে তা বেড়ে ১৪.২৩ শতাংশে পৌঁছেছে। ১৬ বছরের মধ্যে যা নতুন রেকর্ড।
সবজি-সহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, ভোজ্যতেলের পাশাপাশি শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত নানা কাঁচামালের পাইকারি মূল্যও অনেকটাই বেড়েছে বলে জানানো হয়েছে ওই সরকারি পরিসংখ্যানে। কেন্দ্রীয় শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘মূলত খনিজ তেল, মৌলিক ধাতু, অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস, রাসায়নিক পণ্য এবং খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার বেড়েছে।’’
অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, কেন্দ্র আরও আগে পেট্রল-ডিজেলে উৎপাদন শুল্ক কমালে হয়তো মূল্যবৃদ্ধি এত চড়তনা। তাঁদের আশঙ্কা এবার শিল্পক্ষেত্রের মূল্যবৃদ্ধির আঁচ পড়বে সাধারণ ক্রেতাদের উপর। তবে অর্থনীতিবিদদের আর এক অংশের মতে পাইকারি বাজারে এই মূল্যবৃদ্ধি আদতে চাহিদা বাড়ার লক্ষণ। আর এই চাহিদা বৃদ্ধি কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে আর্থিক বৃদ্ধির ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত।
সোমবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে জানানো হয়, খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার অক্টোবরে ছিল ৪.৪৮ শতাংশের কাছাকাছি। নভেম্বরে তা বেড়ে হয়েছে ৪.৯১ শতাংশ। সবজি-সহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির কথাও মেনে নেওয়া হয়েছে ওই রিপোর্টে।
- আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তলানিতে যোগীর উত্তরপ্রদেশ
স্বাস্থ্যে প্রথম কেরল, ফেল করল উত্তরপ্রদেশ। ভারত সরকারের নীতি আয়োগের ২০১৯-২০ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নয়নে একেবারের প্রথম হিসেবে উঠে এসেছে কেরলের নাম। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় উন্নত রাজ্য হিসাবে এরপরেই স্থান করে নিয়েছে তামিলনাড়ু। তারপরেই তেলঙ্গানার উল্লেখ। বড় রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা উত্তরপ্রদেশের, এমনই জানিয়েছে নীতি আয়োগের রিপোর্ট।
কী ভাবে স্বাস্থ্যে সেরা রাজ্যকে বেছে নেয় নীতি আয়োগ?
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সেরার তালিকায় স্থান পেতে হলে মোট ২৪টি সূচকের পরীক্ষা হয় বিভিন্ন বিভাগে। তারমধ্যে রয়েছে চিকিৎসা পরবর্তী ফলাফল, প্রশাসনিক দক্ষতা, তথ্য এবং মূল চিকিৎসা পদ্ধতি। এইসব সূচক থেকে জেনে নেওয়া হয় কোনও রাজ্যের সদ্যোজাত মৃত্যুর হার, পাঁচ বছরের নীচে শিশু মৃত্যুর হার, জন্মকালীন লিঙ্গ অনুপাত, প্রসূতি মৃত্যুর হার এবং পুষ্টি ও রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার হার সম্পর্কে।
প্রশাসনিক সূচকের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ, তথ্যভাণ্ডার-সহ অন্য বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হয়। পাশাপাশি প্রাথমিক ও মহকুমা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স এবং অন্য কর্মীদের দক্ষতা এবং উপস্থিতিকেও মান্যতা দেওয়ার ক্ষেত্রে খতিয়ে দেখা হয়।
এর পাশাপাশি রিপোর্টের চতুর্থ সংস্করণে একটি বিশেষ সূচকের উল্লেখ করা হয়েছে। সেটি প্রসূতি মৃত্যুর হার সংক্রান্ত। বলা হয়েছে, খতিয়ে দেখা হবে প্রসূতি মৃত্যুর হারের সঙ্গে আনুপাতিক হিসাবে মিলিয়ে দেখা হবে সেই সব অন্তঃসত্ত্বাদের সংখ্যা যাঁরা প্রসবের আগে অন্তত চারবার বা তার বেশি চিকিৎসকের পরামর্শ পেয়েছন।
নীতি আয়োগের এই বিশেষ রিপোর্টকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বড় রাজ্য, ছোট রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল। ছোট রাজ্যগুলির মধ্যে মিজোরাম স্বাস্থ্য পরিষেবায় সবচেয়ে এগিয়ে থাকা রাজ্য। অন্যদিকে শেষতম রাজ্য হিসেবে উঠে এসেছে নাগাল্যান্ডের নাম।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে সবথেকে উপরে রয়েছে চণ্ডীগড়। এরপর রয়েছে দাদরা ও নগর হাভেলি। পুদুচেরির স্থান সবচেয়ে নীচে।
পশ্চিমবঙ্গের স্থান সার্বিক ভাবে ১১ নম্বরে।
উত্তরপ্রদেশের স্থান নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে চাপান উতোর। ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনে পাখির চোখ উত্তরপ্রদেশে। সেখানে উন্নয়নের প্রচার চলছে জোরদার। কিন্তু ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে ৬৩ শিশুর মৃত্যু-সহ একাধিক ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের বদনাম হয়েছে বলেই মনে করছে সংশ্লীষ্ট মহল। এদিকে এই গোরক্ষপুরে এআইআইএমএস নিয়ে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবু নীতি আয়োগের রিপোর্টে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল সবচেয়ে খারাপ যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশে।
- এই সময়, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১