কলকাতা সহ পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন জেলা, দিল্লী, মুম্বাই, আমেদাবাদ, চন্ডীগড়, গৌহাটি থেকে শতাধিক অধ্যাপক, গবেষক, শিক্ষক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রশাসনিক পদাধিকারী গত ২২ সেপ্টেম্বর গণস্বাক্ষর সহ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে এক আবেদন পত্র পাঠিয়েছেন। ঐ আবেদনে এক আদিবাসী অধ্যাপকের প্রতি বিভাগীয় আরেক অধ্যাপকের জাতিবিদ্বেষী আচরণের প্রতিবিধান দাবি করা হয়েছে।
আবেদনপত্রে বলা হয়েছে,
“সবং সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক পাপিয়া মান্ডির প্রতি ওই বিভাগের অধ্যাপক ড. নির্মল বেরার ধারাবাহিক জাতিবিদ্বেষী আচরণ, লাঞ্ছনা ও অপমানজনক মন্তব্যের ঘটনার প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। এঘটনা ইতিমধ্যেই জনসমক্ষে এসেছে। মহাবিদ্যালয় স্তরেও মাতৃত্বকালীন ছুটি ও বকেয়া বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। সেই মর্মে তিনি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে অভিযোগ জমা করেছেন। এই ঘটনায় আমরা শ্রীমতী মান্ডির সহনাগরিক হিসেবে এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো প্রগতিপন্থী রাজ্যের বাসিন্দা হিসেবে উদ্বিগ্ন।
আদিবাসী ও দলিত পরিবারভূক্ত শিক্ষকদের জাত তুলে লাঞ্ছনা, চাকরি ক্ষেত্রে সংবিধান সম্মত জাতভিত্তিক সংরক্ষণের বিরুদ্ধে বিষোদগার এবং অসভ্য, অসহনীয় ব্যক্তিগত আক্রমণের ঘটনা বারংবার সামনে আসছে, অধ্যাপক মান্ডির প্রতি এই জাতিবিদ্বেষ তাতে আরেকটি গুরুতর সংযোজন। কিছুদিন আগে খড়গপুর আইআইটি’র অনলাইন ক্লাসরুমে শিক্ষকের জাতিবিদ্বেষী মন্তব্য, বছর দুয়েক আগে রবীন্দ্রভারতীতে চারজন অধ্যাপকের অভিজ্ঞতা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি ঘটনা, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকের নিগ্রহ — এসবই একদিকে রাজ্যবাসীর কাছে লজ্জার, এবং অন্যদিকে এক গভীর সমস্যার সূচক। এই প্রকার বিদ্বেষ ও বিভাজনের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের স্পষ্ট অবস্থান সত্ত্বেও এগুলো যেভাবে ঘটে চলেছে তা সংবিধান এবং সরকারি নির্দেশনামারও লঙ্ঘন।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও রাজ্যের উচ্চশিক্ষা কাউন্সিল যাতে অধ্যাপক পাপিয়া মান্ডির অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করে ও দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় সে ব্যাপারে আপনার হস্তক্ষেপের আবেদন জানাচ্ছি।
যেহেতু জাতিবিদ্বেষী মনোভাব বহুভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থিত আছে তাই এইসব ক্ষেত্রে অভিযোগকারীকে পরবর্তীতেও নানাভাবে অসহযোগিতা বা নীরব হেনস্থার শিকার হতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা কাউন্সিল ও রাজ্য সরকারী প্রশাসনকে এটাও নিশ্চিত করার আবেদন জানাই, যাতে শ্রীমতী পাপিয়া মান্ডিকে এরকম প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়তে না হয়।”
আবেদন পত্রে স্বাক্ষর করেছেনঃ তনুশ্রী হাঁসদা, মেরুনা মুর্মু, রাহী সরেন, সুব্রত টুডু, গুহীরাম কিস্কু, বিশ্বজিৎ মান্ডি, গণেশ টুডু, শত্রুঘ্ন টুডু, ড. মীর রেজাউল, ড. সুবীর মৈত্র, প্রদীপ বসু, সমীর সাহা, তনিকা সরকার, কুমার রাণা, অচিন চক্রবর্তী, উত্তম ভট্টাচার্য, কুমকুম রায়, মল্লারিকা সিংহ রায়, মৃন্ময় প্রামাণিক, আদিত্য শুক্লা, সৌপর্ণ অধিকারি, আজিমুদ্দিন আশররাফি, ওয়াসিম শেখ, ফিরোজ মোল্লা, দীপাঞ্জন চক্রবর্তী, সৈয়দ মিনাজ হোসেন, সায়েরি বসু, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, শুভজিত রায়চৌধুরি, পিনাকপানি নাথ, চন্দ্রদ্বীপ খামরাই, অরুণাভ অধিকারী, মঞ্জীরা সিনহা, ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল, ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী, তারা সিংহ, সায়ন প্রধান, শাইলাভ বদরা, প্রবাল দাশগুপ্ত, গুরুপ্রসাদ কর, শশাঙ্ক রায়, রামিজ রহমান, শুভেন্দু বিকাশ ঘোষ, তমাল গুহ, তথাগত গুপ্ত, সোমশঙ্কর ভট্টাচার্য, হাবিবি আহমেদ মোল্লা, সুদীপ মণ্ডল, দেবায়ন জানা, চিরঞ্জীব সিংহ, ড. সাইফুল্লা সামীম, অনুরাধা রায়, জয়তী দাস, রোচনা দাস পোদ্দার, কুণাল চট্টোপাধ্যায়, উভজিৎ নস্কর, মানস ঘোষ, প্রবুদ্ধ ঘোষ, শিল্পা মণ্ডল, সৌনক রায়, নবনীতা চক্রবর্তী, অমিত দাশগুপ্ত, প্রশান্ত শর্মা, পাপিয়া সেনগুপ্ত, শর্মিষ্ঠা দাশগুপ্ত, ইন্দ্রাণী মিত্র, সাদ্দাম হোসেন মণ্ডল, রক্তিম সুর, নবনীতা মুখার্জী, অভিজিৎ মজুমদার, ড. তামস রঞ্জন মজুমদার, অজিত রায়, শামিম আহমেদ, সোমা মারিক, পূর্বাশা মণ্ডল, বিশ্বরূপ ঘোষ, সঙ্ঘমিত্রা দাস, শ্যামলেন্দু মজুমদার, মাহফুজ আলম, পৃথা চট্টোপাধ্যায়, মিলন দত্ত, কণিষ্ক চৌধুরি, পার্থপ্রতিম রায়, দীপান্বিতা বসু, বিরাজলক্ষ্মী ঘোষ, সায়নদেব চৌধুরী, দীপ্যমান গাঙ্গুলী, অভিজিৎ করগুপ্ত, পার্থ সারথি মণ্ডল, শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তব্রত দাস, দেবর্ষি দাস, সায়ন চক্রবর্তী, দেবপ্রসাদ মাইতি, শুভাদিত্য ভট্টাচার্য, শোভন চক্রবর্তী, সৌমিত্র নন্দী, প্রিয়দর্শী শতপথী, সুনন্দা চট্টোপাধ্যায়, দেবপ্রতীম দাস, অরিত্র বিশ্বাস, মন্দিরা দাস, মধুমিতা কুণ্ডু, সুরজিৎ দাস, সায়ন লাহিড়ী, রিয়াজুল হক, গার্গী সেন, শেষাদ্রী মজুমদার, রাজেশ কর্মকার, সাহাবুব জাহেদি, স্বরূপ কান্তি সরকার, লোপামুদ্রা মুখোপাধ্যায়, পৌষালি মুখোপাধ্যায়, রম্যাণি চক্রবর্তী, অয়ন চক্রবর্তী, সৌরভ মণ্ডল, অঙ্কন প্রামাণিক, সঙ্কেত দাস, অভিরূপ নস্কর, অঞ্জিষনু বিশ্বাস, অনিন্দ্য বসু, অর্ঘ্য বিশ্বাস, আয়াজ আহমেদ, সৌগত গুহ, দিব্যেন্দু বিশ্বাস, সৌম্যশঙ্কর চক্রবর্তী, অরূপ কুমার মাইতি, বিদ্যা মণ্ডল, প্রণতি জানা, প্রসেনজিত সেন, সুদীপ্ত দাস প্রমুখ আরও অনেকে।