দাবি একটাই, ক্যাম্পাস খোলা চাই! হোক আনলক
campus Unlock

২৮ সেপ্টেম্বর, গত বছর একই দিনে আইসার ডাকে, শহীদ-এ-আজম ভগৎ সিংহের জন্মবার্ষিকীতে, নতুন শিক্ষানীতি ২০২০’র বিরোধিতায় মিছিল কর্মসূচি হয়েছিল কলেজস্ট্রিট চত্ত্বরে। এবছর, ওই দিনই, ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের ভ্যাক্সিনেশনের দাবিতে এবং হোস্টেল-ল্যাব-লাইব্রেরী সহ কোভিড বিধি মেনে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে কলেজস্ট্রিটে মিছিল করে গিয়ে, পুলিশের চোখে চোখ রেখে ১৪৪ ধারা অমান্য করে, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা অবরোধ করে, বৃষ্টি বিঘ্নিত দিনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন-মঞ্চ-পত্রিকা-ইউনিয়নের ডাকে কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়।

এই কনভেনশন বিভিন্ন দিক থেকেই ছিল নতুন ও অভিনব। এত ধরনের ছাত্র সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং আরও বহু ধরনের সংগঠনের সাথে হাত মেলানো এক নতুন প্রসারমান ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-যুব আন্দোলনের নয়া সূচনা বলা চলে। আইসা যাদবপুর ইউনিট এই লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। অন্যদিকে, রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে প্রায় তিন ঘন্টা চলা এই কনভেনশন ছাত্রছাত্রীদের দৃঢ় ও সাহসী সঙ্কল্পের জোরালো বার্তা দিয়েছে সরকারকে।

কনভেনশনে আইসা-র পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট সভাপতি রুদ্র প্রভাকর দাস এবং কলকাতা জেলা সম্পাদক সৌমেন্দু মিত্র, যাদবপুর আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের পক্ষ থেকে শুভায়ন, এবিপিটিএ-র পক্ষ থেকে পিনাখ রায়, এআইডিএসও-র পক্ষ থেকে সৌপ্তিক, মিহির রায়চৌধুরী স্মারক লাইব্রেরির পক্ষ থেকে অত্রি, পিএসইউ-র পক্ষ থেকে দেবজ্যোতি, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টস ইউনিয়নের পক্ষ থেকে অদ্রিজা, বিপ্লবী যুব অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে রণজয়, রিফ্র্যাকশান পত্রিকার পক্ষ থেকে দেবার্ঘ্য, আরএসএফ’র তরফে অয়ন, আনলক ক্যাম্পাস প্রচারের পক্ষ থেকে তথাগত, শহীদ প্রশান্ত পাল পাঠশালার তরফে সায়ন্তন, স্কীম ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের পক্ষ থেকে শীলা দে, শিক্ষক ঐক্য যুক্ত মঞ্চের তরফে ছবি চাকী, সনজিৎ মুর্মু পাঠশালার তরফে প্রতাপ, এসএফয়াই-এর কলকাতা জেলা সম্পাদক আতিফ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় লোকালের পক্ষ থেকে শুভদীপ ও রাজ্য কমিটি সদস্য শিল্পী। কনভেনশন পরিচালনা করে আইসার বর্ষা বড়াল ও এসএফআই-এর ইমরাজ।

আগের বছর অতিমারীর সময় পার্লামেন্টকে বন্ধ রেখে, ছাত্রছাত্রী-অভিভাবক-শিক্ষকদের সাথে কোনো রকম আলোচনা না করে যে নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে এসেছিল কেন্দ্রীয় সরকার, তারই নীল নকসা রূপায়িত হচ্ছে। শুধু আমাদের নিজেদের ক্যাম্পাস বা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নয়, পশ্চিমবঙ্গ তথা সারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বন্ধ করে রেখে কেন্দ্রের ছক রূপায়িত হচ্ছে। গ্রামীণ ক্ষেত্রে প্রাইমারি শিক্ষায় প্রায় ৬০% পড়ুয়া একটা বা দুটোর বেশি অক্ষর চিনতে পারছে না। তাদের দোষ না, দীর্ঘদিন শিক্ষার পরিসর থেকে দূরে সরে যেতে বাধ্য হয়ে এবং অনলাইন ক্লাসের বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে তাদের। গ্রামীণ এলাকায় ৪৬% ছাত্রছাত্রী গত এক, দেড় বছরে শিক্ষকের মুখই দেখেনি। এই লড়াই যতটা প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যুক্ত থাকা পড়ুয়াদের, তেমনই শিক্ষক-কর্মচারী সহ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে জীবনযাত্রা অতিবাহিত করে যে মানুষগুলো তাদের প্রত্যেকের। আগামী দিনে আমাদের দাবি না মানা হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যেতে পিছপা হবো না, এমনই ডাক উঠে আসে কনভেনশন থেকে।

- দীপায়ন

খণ্ড-28
সংখ্যা-35