২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
সিপিআই(এমএল) লিবারেশন টিম আসামের দরং জেলার ধলপুরে কুখ্যাত উচ্ছেদক্রিয়া ও হত্যার স্থান পরিদর্শন করেছে। দলে ছিলেন পলিটব্যুরোর সদস্য কবিতা কৃষ্ণান, বিহারের সিপিআই(এমএল) বিধায়ক রামবলি সিং যাদব, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং কর্ণাটক রাজ্য সম্পাদক ক্লিফটন ডি’রোজারিও, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং আসাম রাজ্য কমিটির সদস্য বলিন্দ্র সইকিয়া। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বিহারের যুবকর্মী রবি রঞ্জন, এআইকেএস নেতা জয়ন্ত গগৈ, জিপাল কৃষক শ্রমিক সংঘের নেতা প্রণব দোলে, সংগ্রামী কৃষক শ্রমিক সংঘের নেতা দীনেশ দাস এবং জহিরুল ইসলাম।
তথ্যানুসন্ধানী দলের প্রাপ্ত তথ্য হল, মঈনুল হককে হত্যা করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণ রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে
(১) যে মুখ্যমন্ত্রী সাম্প্রদায়িক উচ্ছেদনীতির জন্য দায়ী এবং যার ভাই দরং-এর এসপি এই হত্যাকাণ্ড চালান, সেই মুখ্যমন্ত্রীকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।
(২) পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ বনাম ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া [(২০১৪) ১০ এসসিসি ৬৩৫] (পুলিশ এনকাউন্টার হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে) মামলায় ২৩-০৯-২০১৪ তারিখে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। মঈনুল হক এবং শেখ ফরিদের হত্যার বিষয়ে এফআইআর নিবন্ধন হওয়া উচিত। এই বিষয়ে একটি স্বতন্ত্র তদন্ত অবশ্যই কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে অন্য থানার সিআইডি বা পুলিশ দল দ্বারা পরিচালিত হতে হবে। তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপাদান সহ ফরেনসিক এবং ব্যালিস্টিক বিশ্লেষণের দ্রব্যাদি/অস্ত্র সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারকে সমর্পণ করতে হবে।
(৩) গুলি চালানোয় ও অগ্নিসংযোগে জড়িত দরং-এর এসপি এবং পুলিশ কর্মীদের বরখাস্ত করতে হবে, গ্রেপ্তার করতে হবে এবং হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার চেষ্টাসহ উপযুক্ত সমস্ত অপরাধমূলক ধারায় অভিযুক্ত করতে হবে।
(৪) কোনো অজুহাতে দরিদ্রদের আর উচ্ছেদ করা যাবেনা। এর পরিবর্তে উচ্ছেদ করুন সেই সব অতি ধনী ব্যক্তিদের যারা বনভূমি অঞ্চলে রিসর্ট তৈরি করেছে, যেসব চা কোম্পানি চা বাগান স্থাপনের জন্য অবৈধভাবে ৬,৩৫৪ একর জমি দখল করেছে, যে সব শিল্পপতিরা আদিবাসীদের জমি জবরদখল করেছে এবং গুয়াহাটিতে সরকারি জমিতে যারা বিজেপি অফিস নির্মাণ করেছে।
(৫) সাম্প্রদায়িক প্রচার বন্ধ করুন, এসব দাবি করে মন্দিরগুলি ‘অবৈধ অভিবাসীদের’ দ্বারা দখল হয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে দরং-এ মন্দিরটি এমন একটি এলাকায় বরাবর নিরাপদে আছে যেখানে প্রায় ৯৯% পরিবার মুসলমান। মন্দিরের হিন্দু তত্ত্বাবধায়ক পার্বতী দাসকেও ভূমি নীতির অধীনে উচ্ছেদ করা হয়েছে। যদি সরকার পবিত্র স্থান (‘সাত্রগুলি’) সংরক্ষণের কথা বলে — তাহলে কেন সরকার বিমানবন্দরের কাছে জমি দখল অভিযানে ‘কৈটা সিদ্ধি সত্র’কে ধ্বংস করছে?
(৬) স্থানীয় জনগণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের ত্রাণ সাহায্য করছেন, কিন্তু সরকারকে অবশ্যই দায়িত্ব নিতে হবে এবং চিকিৎসা শিবির, পানীয় জল, খাদ্য, আশ্রয় এবং স্বাস্থ্যবিধি সহ ত্রাণ সরবরাহ করতে হবে।
(৭) দরং-এ সব উচ্ছেদ হওয়া ব্যক্তিদের তাঁদের জমিতে পুনঃস্থাপন করতে হবে এবং তাঁদের বাড়িগুলি পুনর্নির্মাণ করে দিতে হবে।