৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে দেশের কোটি কোটি মানুষের কলতানের মধ্যে একইসাথে কল্লোলিত হয় সিপিআই(এমএল) ও তার সমস্ত সহযোগী গণসংগঠন। পার্টি-কেন্দ্র থেকে আগে থাকতেই রাখা হয় এক সংগঠিত আহ্বান। ঘোষণা করা হয় জনগণের জন্য, জনগণের দ্বারা, জনগণের “অঙ্গীকার”। সেইমতো রাজ্যের জেলায় জেলায় শপথে শপথে মুখরিত হয় পার্টির ও পার্টি প্রভাবিত নানা শক্তি নানা রূপে। নিছক ‘পূজার ছলে ভুলে থাকা নয়’, রাষ্ট্রীয় দমন-সামাজিক অধীনতা ও অর্থনৈতিক শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির জন্য অব্যাহত সংগ্রামে সংগঠিত হওয়ার নিদান ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কোনো কোনো জায়গায় বিশেষ উদ্যোগে সামিল করানো হয়েছে শিশু ও কিশোরদের। কোনো কোনো ক্ষেত্রে জাতীয় পতাকা ও পার্টির রক্তলাল পতাকা উত্তোলন করেছেন মহিলা সংগঠক। কোথাও কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বীরাঙ্গনা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের মূর্তির সামনে। শ্লোগান উঠেছে “স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর শহীদ প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, ভগৎ সিং’দের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতা কর্পোরেটদের হাতে সঁপে দেওয়া চলবে না”! কোনো এক গাঁয়ের ধানের ক্ষেতের পাশের মাঠ থেকে ভেসে আসে বৃন্দগান “মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রাণ হল বলিদান, লেখা আছে অশ্রুজলে ...”। পার্টি আয়োজিত কোনো উদযাপন কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন সিপিএম থেকে আসা শক্তি, জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন তাদেরই বর্ষীয়ান নেতা। বিস্তারিত রিপোর্ট উল্লেখের অবকাশ নেই। গ্রাম-নগর, শহর-শিল্পাঞ্চল সর্বত্রই সংগঠিত হয়েছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামে অবিচল থাকার ঘোষণা। দিনের সকাল থেকেই কর্মসূচি শুরু হয়ে যায়, কোথাও কোথাও চলে সকাল-সন্ধ্যা দু’বেলা। সর্বত্র পাঠ করা হয় স্বাধীনতা দিবসের “অঙ্গীকার”, কোন কোন ক্ষেত্রে একযোগে সংবিধানের প্রস্তাবনাও। দেশ বাঁচাও, সংবিধান বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও ধ্বনিই আজকের বাংলা থেকে শুরু করে আসমুদ্র হিমাচলের রণধ্বনি।