বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকাকালীন গত ৫ জুলাই মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে ফাদার স্ট্যান স্বামীর মৃত্যু একই সাথে তীব্র শোক এবং ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে এটাকে মৃত্যু বলা হলেও দেশে-বিদেশে স্ট্যান স্বামীর মৃত্যু রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে চালিত হত্যা বলেই গণ্য হয়েছে। গ্ৰেপ্তারের পর তাঁরসঙ্গে যে বর্বোরচিত ও হৃদয়হীন আচরণ করা হয়েছে তা বর্তমান শাসককুলের মার্কামারা বৈশিষ্ট্যেরই পরিচায়ক। পার্কিনসন রোগে ভোগা নড়াচড়ায় অক্ষম ও অশক্ত ৮৪ বছরের বৃদ্ধের জামিনের আবেদনের বারবার বিরোধিতা করতে সরকারি পক্ষ তথা এনআইএ একটুও কুণ্ঠিত হয়নি। কম্পিত করজোড়ে বিচারপতিদের কাছে তিনি জামিনের আবেদন জানালেও বিচারপতিরা তাঁর মতো হীনবল মানুষকেও রাষ্ট্রের পক্ষে বিপজ্জনক বিবেচনা করে জামিন দিতে অস্বীকার করেছেন। বর্তমান শাসকদের চোখে তাঁর অপরাধ ছিল এই যে, তিনি পাঁচ দশক ধরে নিপীড়িত আদিবাসীদের পাশে থেকে তাদের অধিকার সচেতন করে তোলায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। এনআইএ’র হাতে গ্ৰেপ্তার হওয়ার ঠিক আগে একটা ভিডিওতে তিনি বলেছিলেন, “আমরা সবাই জানি কিভাবে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, লেখক, কবি ইত্যাদিদের জেলে পোরা হয়েছে, কারণ, তাঁরা তাঁদের বিরোধিতা প্রকাশ করেছেন অথবা ভারতের শাসক শক্তিদের সম্পর্কে প্রশ্ন তুলছেন। আমরা এই প্রক্রিয়ার অংশ। আমি এক দিক থেকে খুশি যে এই প্রক্রিয়ার অংশ হতে পেরেছি। আমি নীরব দর্শক নই, বিপরীতে এই খেলার অংশ, এবং এরজন্য যে মূল্যই হোক তা দিতে আমি রাজি।” আর নিজের জীবন দিয়ে কি ভয়ঙ্কর মূল্যই না তাঁকে দিতে হল। তিলে-তিলে তাঁর মৃত্যুকে ঘনিয়ে তোলা হল, এবং যে অস্ত্র প্রয়োগ করে তাঁকে ‘শহুরে নকশাল’এর তকমা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মাওবাদী যোগ এবং দেশ জুড়ে অশান্তি ও হিংসা উস্কিয়ে তোলার অভিযোগ আনা হল তা এক দানবীয় আইন-বেআইনি কার্যকলাপ নিরোধক আইন যা ইউএপিএ বলেই সমধিক পরিচিত। স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুর সঙ্গে ইউএপিএ বাতিলের দাবি তাই জোরালো হয়ে সামনে এসেছে।
যে কোনো বিরোধিতার দমনে মোদী সরকার একটা শর্টকাট বা সোজা সমীকরণকে বেছে নিয়েছে। সেটা হল, সরকার বা বিজেপি-আরএসএস বিরোধিতা মানেই সন্ত্রাসবাদী বা দেশদ্রোহী কার্যকলাপ। এরই ভিত্তিতে সরকারের বিরোধিতাকারী, জন আন্দোলনের সংগঠকদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ’তে অভিযোগ এনে জেলে পোরা হয়েছে এবং ইউএপিএ আইনকে সংশোধন করে জামিন লাভকে একরকম অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। ইউএপিএ’র অস্ত্রে সমাজ আন্দোলনের, রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীদের মাসের পর মাস, বছরের পর বছর জেলে আটকে রেখে যেমন প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হয়েছে, তেমনি সরকারের অন্যান্য সমালোচক ও সমাজ আন্দোলনের কর্মীদের কাছে বার্তাও পাঠানো হয়েছে যে, সরকারের বেঁধে দেওয়া গণ্ডি ছাড়ালে তাদেরও জেলে পচতে হবে।
ইউএপিএ আইন তৈরি হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। শুরুতে এই আইন তৈরির উদ্দেশ্য ছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপকে রোধ করা এবং ‘ভারতের সংহতি ও সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা’। এরপর বেশ কয়েকবারই এই আইন সংশোধন হয় এবং সর্বশেষ সংশোধনীটি আনা হয় ২০১৯ সালে। এই সংশোধনীর পর আইনটার রূপ ভয়ঙ্কর ধরনের দানবীয় হয়ে উঠেছে। শুরুতে আইনের লক্ষ্যবস্তু ছিল সংগঠন, সরকারের চোখে কোনো সংগঠনের কার্যকলাপ বিপজ্জনক ঠেকলে তাকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ তকমা দিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হত। কিন্তু ২০১৯’র সংশোধনের পর আইনের ধারা ৩৫ বলে যে কোনো ব্যক্তিকেই ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে দেগে দেওয়া সম্ভব। এই আইন অনুসারে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সংজ্ঞা হল — কোনো ব্যক্তির কোনো কার্যকলাপ কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটালে বা তাকে আহত করলে বা ঘটানোর সম্ভাবনা থাকলে, কেউ কোনো সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি বা ধ্বংসসাধন করলে, অথবা কোনো ব্যক্তিকে আটকে রাখলে বা তাকে অপহরণ করলে সেই কার্যকলাপকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বলে গণ্য করা হবে। তদন্তে নিয়োজিত অফিসারের যদি ‘বিশ্বাস করার কারণ থাকে’ যে কোনো ব্যক্তি উপরে উল্লিখিত কোনো কাজ করেছেন তবে তিনি ঐ ব্যক্তিকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে ঘোষণা করতে পারবেন। আইনে ‘হুমকি দেওয়ার সম্ভাবনা’, ‘জনগণকে সন্ত্রস্ত করে তোলার সম্ভাবনা’, ‘বিশ্বাস করার কারণ থাকার’ মতো কথাগুলোর ব্যবহার তদন্তকারীদের এমন ক্ষমতা দিয়েছে যার বলে যে কোনো ব্যক্তিকে অনায়াসেই ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে ঘোষণা করে গ্ৰেপ্তার করা তাঁদের পক্ষে অসুবিধার নয়।
এই আইনে জামিন লাভের সম্ভাবনাকে সুদূরপরাহত করা হয়েছে। আইনের ধারা ৪৩ডি(৫) বলছে, আদালত যদি কেস ডায়েরি পড়ে অথবা ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৭৩ ধারা অনুসারে তৈরি রিপোর্ট অধ্যয়ন করে মনে করে যে, ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে আপাতদৃষ্টিতে বিশ্বাস করার যুক্তিসম্মত কারণ আছে, তবে ঐ ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পাবেন না। এই ৪৩ডি(৫) ধারাকেই অসাংবিধানিক বলে স্ট্যান স্বামী আদালতে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। ইউএপিএ আইন ন্যাচারাল জাস্টিস বা স্বাভাবিক ন্যায়েরও বিরোধী। আইনশাস্ত্র বলে, কেউ অপরাধী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে নিরপরাধ বলে ধরে নিতে হবে। কিন্তু ইউএপিএ আইনে ব্যাপারটা উল্টো — অভিযুক্তকেই প্রমাণ করতে হবে যে সে নিরপরাধ, আর যতক্ষণ না তা করা যাচ্ছে ততক্ষণ তাকে অপরাধী বলে সন্দেহ করে চলা হবে।
মোদী জমানায় ইউএপিএ’র অধীনে মামলার কেমন বাড়বাড়ন্ত ঘটছে তা বোঝার জন্য কিছু পরিসংখ্যানের দিকে তাকানো যাক। ইউএপিএ’তে মামলার সংখ্যা ২০১৭ সালে যেখানে ছিল ৯০১, সেই সংখ্যা ২০১৮ সালে বেড়ে হয় ১,১৮২ এবং ২০১৯ সালে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১,২২৬। এছাড়া, ২০১৯ সালে অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার হার ছিল মাত্র ২৯ শতাংশ। সে বছর ইউএপিএ’র অধীনে ১৭৩টা মামলার বিচার শুরু হয় এবং বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয় ১১৩টার, যার মধ্যে দোষী সাব্যস্ত করা যায় মাত্র ৩৩টা ক্ষেত্রে। অর্থাৎ, ইউএপিএ’তে ব্যাপক সংখ্যাধিক ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত ও গ্ৰেপ্তার হওয়া মানুষের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ছিল ভিত্তিহীন। নিরপরাধ হওয়া সত্ত্বেও শাসকদের রোষ আকর্ষণ করে তাদের শুধু কারা যন্ত্রণাই ভোগ করতে হয়নি, জীবনের বেশ কয়েকটা মূল্যবান বছর অনর্থক নষ্ট হয়ে গেছে এবং হয়ে চলেছে। ভীমা কোরেগাঁও/এলগার পরিষদ মামলায় বন্দী ১৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক (গ্ৰেপ্তার করা হয়েছিল ১৬ জনকে, ভারভারা রাওয়ের জামিনে মুক্তি এবং স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুর পর এখন আটক ব্যক্তির সংখ্যা ১৪) যন্ত্রণায় দগ্ধ হতে-হতে উপলব্ধি করছেন তাঁদের জীবনের মূল্যবান বছরগুলো কিভাবে হারিয়ে যাচ্ছে। কেউ বলতেই পারেন সন্ত্রাবাদের মোকাবিলায় ইউএপিএ’র মতো আইনের দরকার আছে, কিন্তু নরেন্দ্র মোদী জমানায় তার অপব্যবহার হচ্ছে। সত্যিই কি তাই? অরুন্ধতি রায় কি বলছেন শোনা যাক, “কেউ যদি বলেন ইউএপিএ’র অপব্যবহার করা হচ্ছে, তাহলে তাঁরা ভুল বলছেন। এই আইনটা প্রণয়য়ন করা হয়েছে এই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য”।
ইউএপিএ’তে জামিনের আবেদন যে লাগাতার নাকচ হয়ে চলে তার গুরুত্বপূর্ণ এক কারণ হল এই আইনে জামিন সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের ব্যাখ্যা। ওয়াতালি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট ২০১৯ সালে যে রায় দেয় তা ইউএপিএ’তে জামিন পাওয়ার পথে এক প্রতিবন্ধক হয়ে রয়েছে। জাহুর আহমদ শাহ ওয়াতালি ছিলেন কাশ্মীরের এক ব্যবসায়ী। তিনি সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে অর্থ যুগিয়েছেন বলে এনআইএ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তাঁকে গ্ৰেপ্তার করে। দিল্লী হাইকোর্টে তাঁর জামিনের শুনানি হয় এবং হাইকোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে এনআইএ সুপ্রিম কোর্টে যায়। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি এ এম খানউইলকার দিল্লী হাইকোর্টের জামিন মঞ্জুরির রায়কে খারিজ করে দিয়ে বলেন, “এই স্তরে (জামিনের আবেদনের শুনানির সময়) সাক্ষ্যপ্রমাণগুলোকে বিশদভাবে খুঁটিয়ে দেখা বা সেগুলোর কাটাছেঁড়া করার দরকার নেই। আদালতের কাছে এটুকুই প্রত্যাশিত যে তাঁরা উল্লিখিত অপরাধ সংঘটনে অভিযুক্তর জড়িত থাকার সম্ভাব্যতা বা এর বিপরীতটা সম্পর্কে সিদ্ধান্তের উল্লেখ করবেন। যে রায়টি নিয়ে (দিল্লী হাইকোর্টের) প্রশ্ন তোলা হয়েছে সেটি বিশ্লেষণ করে আমাদের মনে হয়েছে যে হাইকোর্ট সাক্ষ্যপ্রমাণগুলোর দোষগুণ ও ত্রুটি বিচারে প্রয়াসী হয়েছে।” এরথেকে এটাই বেরিয়ে আসছে যে, জামিনের শুনানির সময় অভিযোগের সারবত্তা নিয়ে বিচার করার দরকার নেই এবং সরকারপক্ষের উকিলের অভিমতের ওপর গুরুত্ব দেওয়াটকেও জরুরি করে তোলা হয়েছে। আর এরকমটা হলে জামিন মিলবে কি করে। বিচারপতি খানউইলকারের এই রায়ের পর থেকেই হাইকোর্টের বিচারপতিরা ইউএপিএ মামলায় জামিন মঞ্জুরি থেকে হাত গুটিয়ে রাখেন।
অথচ, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় তাদেরই আগের নেওয়া অবস্থানের বিরোধী। ১৯৭৭ সালে স্টেট অব রাজস্থান, জয়পুর বনাম বালচাঁদ বালিয়া মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ‘জামিন’ হবে নিয়ম এবং ‘জেল’ হবে ব্যতিক্রম। ইউএপিএ’র ক্ষেত্রে জেলই নিয়ম হয়ে উঠেছে, জামিন হয়ে গেছে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। যখন সরকারের সমালোচকদের ধরে-ধরে ইউএপিএ’তে অভিযুক্ত করে জেলে পোরা হচ্ছে তখন সুপ্রিম কোর্টই তাদের ২০১৮ সালের এক রায়ে বলেছে, “বিরোধী মত প্রকাশ হল গণতন্ত্রের সেফটি ভালভ”। তবে, ইউএপিএ’তে ব্যাপক সংখ্যক গ্ৰেপ্তারির পিছনে শাসকদের কোন অভিপ্রায় কাজ করছে আদালত তাকে নির্দিষ্ট করেনি এমন নয়। ভীমা কোরেগাঁও/এলগার পরিষদ মামলায় জামিনের শুনানিতে সংখ্যালঘিষ্ঠ মত প্রদানকারী বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেছিলেন, গ্ৰেপ্তারিগুলোর পিছনে মূল কারণ হল, “বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ করা … এদের প্রত্যেকের বিররুদ্ধেই মামলা দায়ের করা হয়েছে কারণ তাঁরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিদের রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন।” সম্প্রতি দিল্লী দাঙ্গায় অভিযুক্ত আসিফ ইকবাল তানহা, দেবাঙ্গনা কলিতা এবং নাতাশা নারোয়ালের জামিন মঞ্জুর করতে গিয়ে দিল্লী হাইকোর্টও বলেছে, “আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমাদের কাছে এটা মনে হয়েছে যে, বিরোধী মতকে দমনের ব্যগ্ৰতায় এবং পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে এই হতাশজনক চিন্তা থেকে রাষ্ট্র সংবিধান প্রতিশ্রুত ‘প্রতিবাদ করার অধিকার’ এবং ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ’এর মধ্যে ভেদরেখাকে মুছে দিয়েছে। এই ধরনের মুছে দেওয়াটা যদি প্রবণতা হয়ে দাঁড়ায় তবে গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে পড়বে।” দিল্লী হাইকোর্টের রায়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদকে একাকার করে তোলার রাষ্ট্রের সীমাহীন স্পৃহাকে যেভাবে নির্দেশিত করা এবং গণতন্ত্রের বিপন্নতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে তা শুধু আজকের বাস্তবের প্রতিফলনই নয়, তা সবার কাছে এক চেতাবনি রূপেও হাজির হচ্ছে।
মোদী জমানায় গণতন্ত্র আজ তীব্র সংকোচনের আবর্তে। মানবাধিকারের প্রতিটি ক্ষেত্র আক্রমণের মুখে। খাওয়া, পরিধান থেকে ধর্ম — সবই নির্দেশিত করতে চাইছে ফ্যাসিস্ত বাহিনী। বুদ্ধিজীবীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে; সরকারের সমালোচনা থেকে দূরে থাকার নির্দেশই শুধু সাংবাদিকদের দেওয়া হচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ’তে মামলা হচ্ছে এবং তাঁরা আক্রমণের শিকারও হচ্ছেন; আইনজীবীদের চোখ রাঙিয়ে সরকার বিরোধী মামলা থেকে সরে দাঁড়াতে বলা হচ্ছে; মানবাধিকার রক্ষকদের জেলে পোরা হচ্ছে; বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতার ইতি ঘটিয়ে বিচাপতিদের কাছে সরকারপন্থী হওয়ার সংকেত পাঠানো হচ্ছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার আন্তর্জাতিক স্তরের নজরদারি সংস্থা রিপোটার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স-এর চোখেও নরেন্দ্র মোদী সংবাদপত্রের স্বাধীনতার এক ‘প্রিডেটর’, স্বাধীনতাকে জাহান্নমে পাঠানোই যাঁর লক্ষ্য। গণতন্ত্রের এই অন্তর্জলি যাত্রায় সরকারের কাছে বড় অস্ত্র হয়ে উঠেছে ‘ইউএপিএ’ ও ‘দেশদ্রোহ’ আইন। এই দুই আইনকে বিদায় জানানোর সময় তাই সমুপস্থিত। আজ আমাদের শ্লোগান হোক — ‘ইউএপিএ’ এবং ‘দেশদ্রোহ’ আইন বাতিল কর!
এই দুই আইনে আটক সমাজ ও রাজনৈতিক আন্দোলনের কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে!
-- জয়দীপ মিত্র