সারা জুন মাস ধরে সিপিআই(এমএল) লিবারেশন পার্টির বিষ্ণুপুর ব্রাঞ্চের কমরেডরা বিষ্ণুপুর পৌরসভার ২, ৫, ৬, ১৫ ও ১৯ নং মোট পাঁচটি ওয়ার্ডের কিছু বস্তি এলাকায় সমীক্ষা করেছিল প্রায় ৫০০টি পরিবারে। এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে বহু মানুষের বাড়ি নেই তার সংখ্যা প্রায় এইসব ওয়ার্ডে সাড়ে ৩৫০র বেশি। রেশন কার্ডের সমস্যা রয়েছে প্রায় ১০০টি পরিবারের। বেশিরভাগ মানুষ বস্তি এলাকাতে এখনও এই লকডাউন পরিস্থিতিতে ত্রিপল টাঙিয়ে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে রয়েছে কারোবা বাড়ির চাল ফুটো, কারো আবার দেওয়াল ভেঙে পড়েছে এরকম অসহায় অবস্থায় তারা অনাহারে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। এই সমস্ত বস্তি এলাকাতে সব বাড়িতেই প্রায় বেশিরভাগ মানুষদের করোনা ভ্যাকসিন-এর টিকাকরণ এখনো হয়নি। বস্তি এলাকাগুলোতে নোংরা আবর্জনার বিশাল স্তূপ এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তুলেছে। লকডাউনে বেশিরভাগ বাড়ির ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা লাটে উঠেছে। বাড়ির মহিলারা বিভিন্ন মাইক্রোফিনান্স কোম্পানির কাছ থেকে কিংবা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাছ থেকে লোনে জর্জরিত হয়ে উঠেছে এবং লোন এজেন্ট বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
এই সমীক্ষার ভিত্তিতে সমস্ত তথ্যগুলিকে বিশ্লেষণ করে আগামী ২৫ জুন ২০২১, বিষ্ণুপুর মহকুমা শাসকের কাছে এই সমস্ত সমস্যার দাবি জানিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সভা করে একটি ডেপুটেশন দেওয়া হয়। এই ডেপুটেশনে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এমএল) লিবারেশন পার্টির বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক বাবলু ব্যানার্জি এবং বিষ্ণুপুর পার্টি ব্রাঞ্চের সম্পাদক তিতাস গুপ্ত ও সায়ন্তন এবং লোকাল কমিটির অন্যতম নেতৃত্ব ফারহান খান।
উক্ত ডেপুটেশনের ভিত্তিতে বিষ্ণুপুর মহকুমা শাসক আশ্বাস দেন সমস্যাগুলি মেটানোর এবং ডেপুটেশনের অন্যতম দাবি সরকারি ঘর বানানো তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করা, এব্যাপারে পৌরসভার নেতৃত্বের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন।
ডেপুটেশন পরবর্তী পর্যায়ে যে সমস্ত ওয়ার্ডে সমীক্ষা করা হয়েছিল সেই সমস্ত মানুষদের সাথে যোগাযোগ করে মিটিং করা হয় বিষ্ণুপুর পার্টি অফিসে গত ২৭ জুন ২০২১। বর্তমানে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে লড়াই করার পর্যায় এসে দাঁড়িয়েছে, ঘর পাওয়া থেকে শুরু করে ভ্যাকসিনেশন ও রেশন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা চেয়ে এবং আগামী দিনে ঘরের তালিকা প্রকাশ বা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হওয়ার হিসাব চাইতে পৌরসভা ঘেরাওয়ের পরিকল্পনা চলছে। একই সাথে ব্যাপক মানুষের বাস্তু পাট্টার দাবিতে আন্দোলন বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে বলে জনতার দাবি উঠে আসছে।
প্রতিনিধি দলের কাছ থেকে এসডিও রেশন কার্ডহীনদের তালিকা নিয়েছেন এবং সমাধান করে দেবেন বলেছেন। দ্রুত সমাধান না হলে আবার ঘেরাও করা হবে। সমীক্ষা চলাকালীন তৃণমূল নেতৃত্ব স্রেফ গাত্রদাহর কারণে আমাদের সমীক্ষক দলের সদস্যদের ভয় দেখাতে এসেছিল, কিন্তু কোনো ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে জনগণকে আটকাতে পারেনি। ওই এলাকাতেই আমরা পাড়ার সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে স্মরণ অনুষ্ঠান সংগঠিত করি।