কৃষ্ণনগর বাসষ্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে সারি সারি বাস, কিন্তু যাত্রী সংখ্যা খুবই সীমিত। জ্বালানির দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার কারণে পরিবহন শিল্প চরম সংকটে। বিপন্ন হয়ে পড়েছে পরিবহন শ্রমিকদের রুটি রুজি। ইতিপূর্বে লকডাউনে কাজ না থাকায় আধপেটা খেয়ে তাঁদের কোনোরকমে দিন গুজরান করতে হয়েছে। এখন ডিজেল পেট্রোলের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রত্যক্ষ প্রভাবে কাজ কমে যাওয়ার কারণে তাঁদের রোজগার কমে গেছে। সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি আকাশছোঁয়া, রান্নার গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়া সংকটকে আরও তীব্রতর করে তুলেছে। এই অবস্থায় কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ডে প্রচার কর্মসূচি সংগঠিত করল সিপিআই(এমএল), কিষাণ মহাসভা ও এআইসিসিটিইউ। এক ঘন্টাব্যাপী প্রচার মিছিল পরিক্রমা করে পুরসভার সামনে শেষ হয়। প্রচারে দাবি তোলা হয়, পরিবহন শ্রমিকদের ৭৫০০ টাকা লকডাউন ভাতা দিতে হবে, অবিলম্বে ডিজেলের দাম কমাও, সরকারি করের বোঝা কমাও, আম্বানীদের স্বার্থে এই দামবৃদ্ধি করা চলবে না, তেল কোম্পানিগুলোকে অতিমুনাফা পাইয়ে দেওয়া চলবে না, সাধারণ মানুষের উপর মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে ডিজেল এবং পেট্রোলের দাম আজ লিটার প্রতি প্রায় ১০০ টাকা হয়ে গেছে। সবাই জানে যে সাধারণ মানুষ জ্বালানীর জন্য যে দাম দেন, তার ৬৫% সরকারকে ট্যাক্স হিসাবে দেন। প্রতিবেশী দেশগুলির তুলনায় এখন ভারতে জ্বালানীর দাম অনেক বেশি। প্রকৃতপক্ষে, কৃষকের মতো সাধারণ নাগরিকরা সেচের জল সরবরাহের কাজে পাম্প মেশিনে যে জ্বালানি ব্যবহার করে, তার তুলনায় বিমানের জ্বালানির দাম সস্তা ! কৃষিকাজে ব্যবহৃত এই ডিজেলের দাম বৃদ্ধি কৃষকদের চরম সংকটে ফেলে দিয়েছে। তাই কৃষি ক্ষেত্রে ভর্তুকি দিয়ে ডিজেল সরবরাহের দাবিও তুলে ধরা হয়।
এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে এবং শ্রমিক আন্দোলনের উপর দমন নামিয়ে আনতে কালা অর্ডন্যান্স জারি করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়। মানবাধিকার কর্মী ও আদিবাসী আন্দোলনের নেতা ফাদার স্ট্যান স্বামীর হেফাজতে হত্যার বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন, এআইসিসিটিইউ জেলা কমিটি সদস্য অমল তরফদার, জীবন কবিরাজ, সিপিআই(এমএল) জেলা কমিটি সদস্য সন্তু ভট্টাচার্য, স্বপন দাস, সম্পাদক জয়তু দেশমুখ, আরওয়াই নেতা রণজয় সেনগুপ্ত প্রমুখ।