ফাদার স্ট্যান স্বামীকে রাষ্ট্র কর্তৃক প্রাতিষ্ঠানিক হত্যার বিরুদ্ধে ৬ জুলাই কলকাতায় মৌলালিতে ধিক্কারসভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার উদ্যোক্তা সিপিআই(এমএল) লিবারেশন, ছাত্র সংগঠন আইসা, মহিলা সংগঠন আইপোয়া প্রভৃতি। ধিক্কারসভায় স্থানীয় চার্চের সিস্টাররা অংশগ্রহণ করেন। সভার শুরুতে ফাদারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়। বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এমএল) নেতা অতনু চক্রবর্তী, কার্তিক পাল, চার্চের জনৈক সিস্টার, মানবাধিকার কর্মী ছোটন দাস, অধ্যাপক শামিম আমেদ, আইসার নেতা অভিজিৎ সরকার, আইপোয়া নেত্রী ইন্দ্রানী দত্ত, গণআন্দোলনের কর্মী অসিত রায়। গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন কল্লোল দাশগুপ্ত, নীতীশ রায়। সভার শেষে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। কর্মসূচি পরিচালনা করেন বাসুদেব বসু।
রাজ্যের জেলায় জেলায় একই প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংগঠিত হয়।
নদীয়া
স্ট্যান স্বামীর হত্যার বিরুদ্ধে আজ সারা দেশ উত্তাল। তারই অঙ্গ হিসাবে আরওয়াইএ এবং সিপিআই(এমএল)-এর পক্ষ থেকে নদীয়া জেলার ধুবুলিয়া নেতাজী পার্কে সংগঠিত হয় এক প্রতিবাদ সভা। নেতৃবৃন্দ বলেন, হাসপাতালে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে বন্দী থাকাকালীন তিনি প্রয়াত হয়েছেন। ঘটনাক্রমে রাষ্ট্র তাকে হত্যা করেছে। দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সময় ধরে ঝাড়খন্ডে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে থেকে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি যুক্ত ছিলেন। আজ তাকে হত্যা করে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার বিরোধী কণ্ঠস্বরকে দমন করতে চাইছে। কেবল বিজেপি নয়, এ রাজ্যের শাসক তৃণমূলও আজ গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরছে। এ রাজ্যেও আন্দোলনকারীদের উপর কালাকানুন ইউএপিএ জারি করা রয়েছে। কিন্তু ইতিহাস শিক্ষা দেয়, যে শাসকদলই গণতন্ত্রকে হত্যা করবে মানুষ তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেই। ফাদার স্ট্যান স্বামীর সংগ্রামী জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে, রাস্তায় মানুষের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে ধুবুলিয়ার প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন আরওয়াইএ নেতা রণজয় সেনগুপ্ত, সন্তু ভট্টাচার্য, সিপিআই(এমএল) জেলা নেতা কাজল দত্তগুপ্ত ও জেলা সম্পাদক জয়তু দেশমুখ।
বাঁকুড়া
২১-এর ডাক অভিযানের ব্যানারে আজকে বাঁকুড়া শহরের মাচানতলায় এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত ক'দিন আগে পুলিশ হেফাজতে আদিবাসী অধিকার আদায়ের নেতা ও মানবাধিকার আন্দোলনের কর্মী ফাদার স্ট্যান মারা যান এটা আসলে রাষ্ট্র কর্তৃক একটি হত্যা। এতে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র দপ্তর যেমন যুক্ত তেমনি বিচার বিভাগ ও সমান দায়ী কারন ৮৪ বছরের একজন মানুষ যিনি কঠিন পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন। নিজের হাতে খেতে পারতেন না এমনকি গ্লাসে চুমুক দিয়ে জলও খেতে পারতেন না। এইরকম রোগীকে জল খাওয়ার জন্য স্ট্র ব্যবহারের অনুমতি না দিয়ে দিনের পর দিন জামিন নামঞ্জুর করে ইউএপিএ ধারায় আটক করে রাখলো। যে আইন আসলে পরাধিন ভারতে ইংরেজদের তৈরি রাউলাট অ্যাক্টের সমতুল। এইরকম একজন মানুষের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। কুখ্যাত এই ইউএপিএ আইন বাতিল করে আমাদের রাজ্য সহ সারা দেশে আটক রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। এই প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন বাঁকুড়া কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক বিশ্বাস, ছাত্র আন্দোলনের নেতা ফারহান হোসেন খান, যুব নেতা সঞ্জু বরাট, জেলার বিশিষ্ট কবি আলোক মন্ডল, পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী শান্ত ব্রত সেন, আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চের রামনিবাস বাস্কে। সভা পরিচালনা করেন ২১-এর ডাক অভিযানের পক্ষে বাবলু ব্যানার্জী।