নাকাশিপাড়া ব্লকে আদিবাসী গ্রাম মীরাইপুরে হুল দিবস পালন করা হয় ৩০ জুন। গ্রামের স্কুল মাঠের কাছে বটতলায় লাল পতাকা টাঙিয়ে, সিধু, কানুর ছবি দিয়ে, মাইক খাটিয়ে সভার আয়োজন করা হয়। পাশের আদিবাসী গ্রাম লোহাগাছার মহিলা কমরেডরা সহ আদিবাসী নয় এমন গ্রামের কমরেডরা সভায় উপস্থিত হন। বক্তারা গ্রামের আদিবাসী জনগণকে সাঁওতাল বিদ্রোহের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। জমিদার, সুদখোর, ব্যবসাদার, মহাজনদের চরম শোষণের বিরুদ্ধে, পুলিশ ও সরকারি কর্মচারীদের নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। অবশেষে এই লড়াই ইংরেজ শাসকদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার লড়াইয়ে পরিণত হয়। বীরত্বপূর্ণ এই লড়াইয়ে আদিবাসী মানুষের জীবন দান থেকে শিক্ষা নিতে হবে কিভাবে সংগঠিত হয়ে দেশীয় শোষকের বিরুদ্ধে, বিদেশি শোষক শাসকের বিরুদ্ধে লড়তে হয়। স্বাধীন ভারতের সংবিধানে রক্ষিত আদিবাসীদের অধিকারগুলো বর্তমান শাসক মোদি সরকার বড় বড় পুঁজিপতিদের স্বার্থে একের পর এক কেড়ে নিচ্ছে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে ইউএপি নামক আইনে জেলে আটকে রাখা হচ্ছে। তবুও প্রতিবাদ-প্রতিরোধ চলছে।
ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আদিবাসী গ্রামগুলিতে বেশিরভাগ মানুষ কৃষি মজুর। ১০০ দিনের কাজ হয় না বলেই চলে। মহামারীর এই সময়ে আদিবাসী কৃষি মজুরদের অবস্থা আরো খারাপ। ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতি ক্রমাগত আদিবাসী সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। বিজেপি-আরএসএস এব্যাপারে সক্রিয়। এখনো প্রচুর জমি আছে যা আদিবাসীদের নামে থাকলেও তাদের দখলে নেই। একসময় পশ্চিমবঙ্গ কৃষক সমিতি সংগঠিত হয়ে এই জমি দখল করে তাদের হাতে তুলে দিয়েছিল। আগামীদিনে আবার সেই আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এমএল) জেলা কমিটির সম্পাদক জয়তু দেশমুখ, কৃষ্ণপদ প্রামানিক, কাজল দত্ত গুপ্ত। গণসঙ্গীত গেয়ে শোনান বিকাশ বিশ্বাস।