উত্তরপ্রদেশে ব্লক পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচন — ব্যাপক হিংসা চালানোয় অভিযুক্ত বিজেপি
BJP accused of wreaking havoc

উত্তরপ্রদেশে গত ১০ ও ১২ জুলাই ব্লক পঞ্চায়েত প্রধানদের নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের শেষ পর্যায় অনুষ্ঠিত হল এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটল। কিন্তু নির্বাচনের ফল নিজেদের অনুকূলে আনতে শাসক দল বিজেপি ব্যাপক হিংসার আশ্রয় নিয়েছে, এমন অভিযোগ এনেছে বিরোধী দলগুলো। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গোটা প্রশাসনকেই ব্যবহার করে বিরোধী সদস্যদের হুমকি দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। শুধু হুমকি নয়, বিরোধী সদস্যদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে না দেওয়া, প্রার্থীদের অপহরণ করা, নারী প্রার্থীদের সঙ্গে অশালীন অচারণ, উৎকোচ দিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া থেকে বিরোধী প্রার্থীদের বিরত করার মত ভুরি-ভুরি অভিযোগ উঠেছে। এক কথায় বললে, এপ্রিল মাসের গ্ৰাম পঞ্চায়েত সদস্য ও ব্লক পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচনে নিকৃষ্ট ফলের তুলনায় ব্লক পঞ্চায়েত প্রমুখ নির্বাচনে বিজেপির ফল যে ভালো হয়েছে তার পিছনে বিজেপির পেশি ও অর্থ শক্তি মূল ভূমিকায় থেকেছে এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনও শাসক দলের আজ্ঞাবহ সংস্থার মত আচরণ করেছে বলে সমাজবাদী পার্টি সহ অন্যান্য বিরোধীপক্ষ অভিযোগ এনেছে।

হিংসা ও বলপ্রয়োগের যে সমস্ত অভিযোগ প্রকাশিত হয়েছে তার দু’একটা এখানে তুলে ধরা হচ্ছে।

ভিডিও-১: এই ভিডিও’টাতে দুটো লোককে এক মহিলার শাড়ি ধরে টানতে দেখা যাচ্ছে। তিনি এক ব্লক পঞ্চায়েত প্রধান প্রার্থীর প্রস্তাবক। তাঁর জিনিসপত্র ও ৭,৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়, এবং প্রস্তাবককে এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হওয়ায় প্রার্থী নিজের মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন না। রিটার্নিং অফিসার এবং পুলিশের সামনেই বিজেপির দুষ্ক‌তিরা মহিলার অসম্মান ঘটানোর স্পর্ধা দেখায়। এই ঘটনায় হাত গুটিয়ে রাখার জন্য সাত পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

ভিডিও-২: এই ভিডিও’তে এক পুলিশ অফিসারকে তাঁর ঊর্ধ্বতন অফিসারকে পরিস্থিতি সম্পর্কে ফোনে অবহিত করতে দেখা যাচ্ছে। তিনি জানাচ্ছেন, “বিজেপি বিধায়ক আর জেলা নেতৃত্বের লোকজন ইট-পাথর ছুঁড়ছে স্যর! বোমা এনেছে। আমাকে থাপ্পড়ও মেরেছে।”

ভিডিও-৩: এই ভিডিও’তে দেখা যাচ্ছে উন্নাওয়ের প্রধান উন্নয়ন অফিসার দিব্যাংশু প্যাটেল সাংবাদিক কৃষ্ণ তিওয়ারির কান ধরে আছেন এবং তাঁকে মারছেন। সাংবাদিক বিজেপি দুষ্কৃতীদের চালানো হিংসার ছবি তুলছিলেন।

ভিডিও ছাড়াও আর যে সব অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে তার মাত্র দুটো এখানে রাখা হচ্ছে। সুন্দরলাল হলেন ব্লক ডেভেলপমেন্ট সদস্য ইয়াদুরাই দেবীর স্বামী। তাঁর বড় ভাই কিভাবে বিজেপি দুষ্কৃতীদের হাতে নিহত হন সে সম্পর্কে তিনি জানান — “ব্লক প্রমুখ প্রার্থী সবিতা যজ্ঞাসাইনির স্বামী সুধীর যজ্ঞাসাইনি ও তারসঙ্গে আসা দুষ্কৃতীরা রাত দুটোয় দিবাপূর্বা গ্ৰামে আমাদের বাড়ি থেকে আমার স্ত্রীকে অপহরণের চেষ্টা করে। আমার বড় ভাই মায়ারাম ওদের ঠেকানোর চেষ্টা করলে ওরা রাইফেলের বাঁট দিয়ে ওর মাথায় মারে এবং সঙ্গে-সঙ্গেই সে মারা যায়।” সুধীর যজ্ঞসাইনি বিজেপি কর্মী বলে সুপরিচিত।

সিতাপুরের জেলা শাসক বিশাল ভরদ্বাজ জানিয়েছেন — কাসমণ্ডার ব্লক প্রমুখ পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় গুলি চলেছে, গুলিতে একজন আহত হলে চিকিৎসার জন্য তাকে লক্ষ্ণৌ নিয়ে যাওয়া হয়, হিংসায় যুক্ত থাকার জন্য চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

খণ্ড-28
সংখ্যা-27