সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতির রাজ্য ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা কমিটি ও সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের জেলা কমিটির উদ্যোগে গত ২১ জুন ইয়াস ঝড়-বিধ্বস্ত ও তার সাথে গঙ্গার বাঁধ ভেঙ্গে জলপ্লাবনে বিপর্যস্ত গ্ৰামে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জায়গাটি কুলতলি থানার জয়নগর ২ ব্লকের অন্তর্ভুক্ত সোনা টিকারি গ্রাম পঞ্চায়েতের নলগোড়া গ্রাম। প্রায় ১০০ জন মহিলা উপস্থিত ছিলেন। এদের বেশিরভাগ চাষবাস করেন, অনেকে মাছ ধরেন, কেউ চাষের সব্জি নিয়ে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালান। এই মহিলারা বারে বারে বোঝাতে চাইছিলেন কী করুণ অবস্থা তাদের। নোনা জল ঢুকে বাড়িঘর, চাষজমি সব ভেসে গেছে। সামনের স্কুল বাড়িতে তারা আশ্রয় নিয়েছেন। ওরা বললেন, “সরকারি কোন ত্রাণ এখনো আসেনি। দু-এক বার দেখে গেছে মাত্র। আপনারাই প্রথম এলেন।” আমরা যে রাস্তা দিয়ে গিয়েছিলাম সেটি এত খারাপ যে গাড়ি প্রায় উল্টে যাচ্ছিল। মাটির রাস্তা। অবহেলিত গ্ৰাম বলতে যা বোঝায়। দু-ধারে ধান জমি সব জলে ডোবা। যারা ত্রাণ নিতে এসেছেন কারও মুখে মাস্ক নেই। ত্রাণসামগ্রীর সঙ্গে একটা দেশলাই পর্যন্ত দিতে হল। সেটাও ওদের ছিল না। সরকার নাকি এত ব্যবস্থা করেছে! অথচ ওদের প্রায় সব শেষ হয়ে গেছে। যত গ্ৰামের ভিতর ঢোকা যাবে তত করুণ অবস্থা চোখে পড়বে। মাঠ থেকে যে শাক তুলে খাবে সেও জলে ডুবে গেছে। এত নোনা জল ঢুকেছে যে আগামীদিনে কী করে চাষ করবেন ওরা জানেন না। সরকার উন্নয়নের দায়িত্ব তার আমলাদের হাতে তুলে দিয়েছে। গ্ৰামের মহিলারা ভোট দেবেন উন্নয়নের আশা করে আর নিজের ভাগ্যকে ভগবানের হাতে ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন। এই তো দেশের মহিলাদের অবস্থা!
ত্রাণ কাজে উপস্থিত ছিলেন মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদিকা ইন্দ্রাণী দত্ত, কাজল দত্ত, দেবযানী গোস্বামী ও লোকাল কমিটির নেত্রী সুলেখা পাল, পূর্ণিমা হালদার, রেখা ও ছাত্রী অনিন্দিতা।
- কাজল দত্ত