কমরেড মানসিন হেমরম
Comrade Mansin Hembram

নাম মানসিন হেমরম। জন্ম ১৯৪৫ সালে। উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ জেলা থেকে হরিণঘাটা ফার্মে কাজের জন্য আসেন। কাজের ফাঁকে শিকার করতে করতে শ্রীকৃষ্ণপুরে বাবুদের কথায় জঙ্গল সাফ করে অনাবাদি জমি আবাদি করে বাবুদের হাতে তুলে দেওয়ার সময়েই অধিকারের লড়াইয়ে সামিল হয়ে যান। ঠিক সেই সময় নকশালবাড়ির কৃষক বিদ্রোহের আঁচ পড়ে শ্রীকৃষ্ণপুরে। কমরেড চিত্তরঞ্জন ভট্টাচার্য, কমরেড প্রবীর মিত্রের নেতৃত্বে লুকু গুইপাই (ওরফে লুকু সর্দার), শ্যাম টুডু, ফতুরাম মান্ডি’দের সঙ্গে মানসিন হেমরম ও আরও অনেকে বিপ্লবী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এবং সিপিআই(এমএল)-এ যোগ দেন। আন্দোলনের শুরুর দিকে কমরেড লুকু গুইপাই শহীদ হলেন জমিদারদের গুন্ডাবাহিনীর হাতে। পরবর্তী সময়ে পার্টির অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে কিছুদিন কারাবাস করতে হয় কমরেড মানসিনকে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবার লড়াই শুরু। জমির পাট্টার দাবি, মজুরি বৃদ্ধির দাবি, রেশন কার্ডের দাবিতে নতুন করে আন্দোলন শুরু হল। সত্তর দশকের শেষভাগে পার্টি পুনর্গঠন শুরুর সময় পশ্চিমবঙ্গ কৃষক সমিতির কাজ যখন শুরু হল, শ্রীকৃষ্ণপুর অঞ্চল থেকে দুই শতাধিক মানুষ কমরেড মানসিন হেমরমদের সঙ্গে বাঁকুড়া জেলার সমাবেশে অংশ নেন। পরবর্তী সময়ে কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পার্টি কর্মসূচিতে কমরেডের সক্রিয় অংশগ্রহণ থেকেছে। আন্দোলনের বহু ঘাত-প্রতিঘাতে তিনি পার্টির প্রতি অবিচল থেকেছেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পার্টির প্রতি বিশ্বাসে তাঁর কোনো খাদ ছিল না। কমরেড মানসিন পার্টির আদর্শের প্রতি আস্থা ও ভরসা রেখে পরবর্তী প্রজন্মকে পার্টিতে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রেখে গেছেন। কিছুদিন আগে তিনি প্রয়াত হয়েছেন। কমরেডের শেষযাত্রায় পার্টির নবীন সদস্যদের হাতে রক্তিম পতাকায় বিদায় জানানো হয়। কমরেড মানসিন চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। কমরেড মানসিন হেমরম লাল সেলাম।

- অনুপ মজুমদার 

খণ্ড-28
সংখ্যা-22