পশ্চিমবঙ্গ গণসংস্কৃতি পরিষদের অন্তর্ভুক্ত বসিরহাটের নির্মাণ সাংস্কৃতিক সংস্থার প্রথম বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় গত ২০ জানুয়ারী। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শুরু হয় উদ্বোধনী সঙ্গীত দিয়ে। তারপর আবৃত্তি প্রতিযোগিতা চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। ৩৪ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়, “ক” বিভাগের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হাট/’আমাদের ছোট নদী’ এবং ‘‘খ’’ বিভাগের জন্য সুকান্ত ভট্টাচার্য ‘একটি মোরগের কাহিনী/দেশলাই কাঠি’ কবিতা নির্দিষ্ট ছিল। ৪ জন সঙ্গীতও পরিবেশন করেন।
দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় ৩-৩০টায় সংস্থার সম্পাদক মলয় মন্ডলের স্বাগত ভাষণ দিয়ে। সম্পাদকের ভাষণে দেশের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতিতে সংস্থার উদ্দেশ্য-কাজ বিস্তৃত উপস্থাপন উপস্থিত লেখক-কবি সহ সমস্ত মানুষকে উৎসাহিত করে। সংস্থার সভাপতি জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জন্মের ২০০ বছর উপলক্ষে পর্যালোচনায় বর্তমান সময়েও ধর্মীয় কুসংস্কার-ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের লড়াই ও শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা অসাধারণ ভাবে তুলে ধরেন। সংস্থার পত্রিকা ‘আজকের নতুন দিন’, প্রথম বর্ষ, প্রথম সংখ্যা প্রকাশ করা হয় ৪২ জন লেখক-কবিকে দিয়ে। পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক এমএফযর আল জামান ও আব্দুল্লা সাহাজী। উপস্থিত সকল লেখক-কবি একে একে তারা তাদের কবিতা-বক্তব্যর মধ্য দিয়ে মানুষে মানুষে ধর্মীয়-জাতপাতের বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সমস্ত ধর্ম-জাত-বর্ণের মধ্যে সম্প্রীতির বাতাবরণ গড়ে তুলে ঐক্যবদ্ধ ভারতবর্ষের কথা বলেন।
সন্ধ্যায় সংস্থার ‘চেতনায় বিজ্ঞান’ মঞ্চের প্রযোজনায় শ্রুতি নাটক ‘আদাব’ মঞ্চস্থ হয়। অংশগ্রহণ করেন সংস্থার সম্পাদক মলয় মন্ডল, অসিত চট্টোপাধ্যায়, অলোক সরকার এবং শব্দ সংযোজনায় শিশু শিল্পী ঈশান মন্ডল।
আমন্ত্রিত ভারতীয় গণনাট্যের বসিরহাট শাখার পক্ষ থেকে এরপরে সঙ্গীত পরিবেশন করেন উজ্জ্বল ব্যানার্জী, বাণী হালদার এবং উত্তম বিশ্বাস। পশ্চিমবঙ্গ গণসংস্কৃতি পরিষদের সম্পাদক নীতীশ রায়, বাবুনী মজুমদার সঙ্গে গোবিন্দ, সুমন, গৌতমকে নিয়ে এবং দীপক চক্রবর্তীর সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে বিজেপি সরকারের এনআরসি-সহ সমস্ত জনবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সকল মানুষের ঐক্যবদ্ধ লড়াই-এর আহ্বান জানিয়ে নির্মাণ সাংস্কৃতিক সংস্থার প্রথম বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হয়। সমস্ত অনুষ্ঠানটি অসাধারণ সঞ্চালনা করেন সংস্থার সদস্য কবি-বাচিকশিল্পী বরুণ পাল এবং সম্পাদক মলয় মন্ডল।