৮ ডিসেম্বর হুগলীর বলাগড় ব্লকের সদ্যপ্রয়াত পার্টি নেতা ও পুনর্গঠনের অন্যতম স্থপতি কমরেড অসীম ব্যানার্জীর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হল গুপ্তিপাড়ার বন্দনালয় অনুষ্ঠান গৃহে। পার্টির দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা থেকে শুরু করে পরিবার, পরিজন সহ অন্যান্য বামপন্থী দলের নেতৃত্ব — কে ছিলেন না সেই সভায়। প্রথমেই কমরেডের অসীম ব্যানার্জীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন উপস্থিত সকলে। এরপর কমরেডের প্রয়াণের ঘটনায় পার্টির তরফ থেকে অশ্রুসজল চোখে শোকবার্তা পাঠ করেন বলাগড় ব্লক কমিটির সম্পাদক সেখ আনারুল। সভাগৃহে তখন যেন আলপিন পড়ার শব্দও শোনা যায়! এরপরে একে একে প্রয়াত কমরেডের সাথে সাংগঠনিক কাজের অভিজ্ঞতা, শিক্ষা, পারিবারিক সান্নিধ্য ও বন্ধুত্বের মূল্যবান মুহূর্তের স্মৃতি ভাগ করে নেন সংগঠনের পলিটব্যুরো সদস্য কার্তিক পাল, হুগলী জেলা সম্পাদক প্রবীর হালদার, রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ সহ পার্টি ও তার বিভিন্ন গণসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। অন্যান্য বামপন্থী দলের মধ্যে সিপিআই এবং এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) দলের তরফ থেকে ঐ এলাকার নেতৃত্ব কমরেড অসীমদার সাথে তাঁদের কাজের অভিজ্ঞতার অনুভূতি এবং শিক্ষাগুলো তুলে ধরেন। অসীমদার পরিজনদের মধ্যে তাঁর দাদা, দিদি ও ছোট বোন তাঁদের পরিবারে কলকাতার জ্যোতিষ রায় রোডের বাড়িতে কমরেডের শৈশব-কৈশোরের দিনগুলো থেকে ছাত্রজীবন, সামাজিক জনপ্রিয়তা ও পরবর্তীতে ব্যক্তিগত সুখস্বাচ্ছন্দ্য ছেড়ে নকশালবাড়ির রাজনীতিতে চলে যাওয়া সবটা সম্পর্কে তাঁদের গর্ব, বাৎসল্য প্রকাশ করেন বেদনাহত কণ্ঠে। অসীমদা’র পুত্রবধূ ও পার্টি সদস্যা অঙ্গনা একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। পুত্র অভিজিতও সংগঠনের সদস্য। অন্যান্য কমরেডরাও কয়েকজন স্মৃতিচারণ করেন। অসীমদার সাথে পরিচয় থেকে পরিণয় পর্যন্ত যাত্রাপথ ও একই রাজনৈতিক পথে চলার সিদ্ধান্ত কোনো অনুভূতি থেকে তা অত্যন্ত মর্মস্পর্শীভাবে তুলে ধরেন কমরেডের স্ত্রী তথা পার্টির হুগলি জেলা কমিটির সদস্যা শোভা ব্যানার্জী। সমগ্র সভাটি সঞ্চালন করেন বর্ষীয়ান পার্টি নেতা মুকুল কুমার। কমরেড অসীমদার স্মৃতি থেকে শিক্ষা ও অনুপ্রেরণা নিয়ে চলার শপথে মীনা পাল সহ অন্যান্যদের কণ্ঠে সমবেত আন্তর্জাতিক সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে এ’দিনের সভার কাজ শেষ হয়।
কমরেড অসীম ব্যানার্জী অমর রহে!!