নদীয়ার শালিগ্রামে কমরেড বিমান বিশ্বাসের স্মরণসভা

নদীয়া জেলার গ্রামাঞ্চলে সংগ্রামী এলাকার অন্যতম গ্রাম শালিগ্রাম। শহীদ কমরেড জালালের রক্তে ভেজা এই গ্রামটি ছিল বিমান বিশ্বাসের সংগ্রামী জীবনের নানাবিধ কর্মকান্ডের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। সেখানে গত ২৪ নভেম্বর আয়োজিত স্মরণ সভায় উঠে এলো কৃষক প্রতিরোধের সেইসব দিনগুলির স্মৃতি, স্বপ্ন, শপথ। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, শত্রুর হামলার মুখে চরম প্রতিকুলতার মধ্যেও জনগণের গভীরে থেকে পাল্টা লড়াই গড়ে তোলা — স্মৃতিচারণায় এই সব বিষয়গুলি তুলে ধরলেন তাঁর সহযোদ্ধা কমরেডরা। সমস্ত কিছু ছাপিয়ে সামনে উঠে আসে বর্তমান সময়কালের কথা। সারাটা জীবন ধরে বিমান বিশ্বাস যে লড়াই চালিয়ে গেছেন সেটাকে আজকের দিনেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানালেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ। এই গ্রামের পার্টি কর্মী কমরেড কদর খান সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন। স্মরণ সভায় তাঁর প্রতিও শ্রদ্ধা জানানো হয়। এছাড়া কমরেড জালাল সহ এই গ্রামের প্রয়াত পার্টি কর্মী কমরেড ইদ মহম্মদ, কমরেড মোসলেম বিশ্বাসকেও স্মরণ করে নীরবতা পালন ও শহীদ বেদীতে মাল্যদান করা হয়। কলকাতার হাসপাতালে দেহদান করার কারণে তাঁদের প্রিয় নেতা প্রয়াত বিমান বিশ্বাস তথা মধু বাগকে শেষ বিদায় জানাতে বা শেষ দেখা দেখতে না পারার দুঃখ বুকে নিয়েই শালিগ্রামের ভালোসংখ্যক মানুষ স্মরণসভায় এসেছিলেন। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় এবং পার্শ্বর্তী বিভিন্ন এলাকার পার্টি কর্মীরা।

saligram w

 

স্মরণসভায় এই সময়কালের রাজনৈতিক বিষয়গুলি সামনে উঠে আসে। নাগরিক আইন পাল্টে দেওয়া, নাগরিক পঞ্জীকরণের নামে বন্ধুকে শত্রু বানিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা তুলে ধরলেন পার্টির রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ। তিনি বলেন দেশব্যাপী একটা ভয়ভীতির আবহাওয়া গড়ে তোলা হচ্ছে। কখনও গণপিটুনিতে হত্যা, কখনও বা ইউএপিএ কালাকানুন, কাশ্মীর, এনআরসি, নাগরিকত্ব আইন এ ধরনের নানা উপায়ে এই ভীতি ছড়িয়ে দিয়ে মানুষের প্রতিবাদকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে মোদী সরকার। অপরদিকে চরম আর্থিক সংকট সৃষ্টি করে গরীব মানুষের রুটি- রুজির উপর হামলা নামিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু পাশাপাশি দেশজুড়ে কৃষক শ্রমিক ছাত্র যুব সহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রতিবাদ প্রতিরোধও গড়ে উঠছে। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন বিমানদা। আজকের দিনে সেই পথেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। অযোধ্যা রায়কে অবিচার বলে তুলে ধরে তিনি বলেন, বাবরি ধ্বংসকারী অপরাধীদের বিচার বিলম্বিত করে শেষমেষ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৬ ডিসেম্বর বাবরি ধ্বংসের দিনটিকে কালা দিবস রূপে পালন করে অপরাধীদের শাস্তির দাবি তুলতে হবে। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজ্য নেতা কাজল দত্তগুপ্ত, সুবিমল সেনগুপ্ত, নদীয়া জেলা নেতা ধনঞ্জয় গাঙ্গুলী, স্থানীয় কর্মী ইউনুস খান, ঠান্ডু সেখ। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য নেতা জয়তু দেশমুখ সহ জেলা ও লোকাল কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।

খণ্ড-26
সংখ্যা-38