২৬ জুলাই আয়ারলা এবং মনরেগা মজদুরসভা সহ বিভিন্ন বাম গ্রামীণ মজদুর সংগঠনের সম্মিলিত প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হল জেলা এবং ব্লকস্তরে। তৎসহ প্রধানমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয় যে দাবিতে তা হল, সমস্ত মনরেগা মজদুর ও অন্যান্য গ্রামীণ শ্রমিক কোভিড অতিমারীর জন্য যে পীড়াদায়ক পরিস্থিতির মধ্যে দিন যাপন করছেন তারজন্য ৩ মাসের মনরেগা মজুরি তাদের দিতে হবে। দেশের সব রাজ্যেই অন্যান্য যে দাবি নিয়ে প্রতিবাদ হয়েছে তা হল,
• মূল এমএনআরইজিএ আইন ২০০৫ চালু কর।
• সমস্ত কর্মপ্রার্থীদের বছরে ২০০ দিনের কাজ নিশ্চিত কর।
• এমএনআরইজিএ কাজের জন্য দিনপ্রতি ন্যূনতম ৬০০ টাকা দিতে হবে।
• সমস্ত সংশোধনী এবং উপদেষ্টাদের বাতিল কর।
দিল্লীতে যন্তর-মন্তরে এইসব দাবি নিয়ে প্রতিবাদসভা হয়েছে। সংগঠনগুলির তরফ থেকে রাষ্ট্রপতিকে মনরেগা মজদুরদের কেন্দ্রীয় সরকারের উপদেষ্টা দ্বারা জাতপাতের ভিত্তিতে ভাগ করা ও সেইমতো মজুরি প্রদানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলা হয়েছে গত ২ মার্চ ২০২১ গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে উপদেষ্টা কর্তৃক রাজ্য সরকারগুলিকে বলা হয়েছে, তারা যেন এসসি/এসটি ও অন্যান্য মজদুরদের তাদের বর্গ অনুযায়ী মজুরি প্রদান করেন। সংগঠনগুলি বলেছেন যে ‘এই উপদেষ্টাদের দেখে আমরা অবাক হয়েছি’। মজদুরদের বিভিন্ন জাতপাত ও বর্গে ভাগ করা অনৈতিক এবং সমকাজে সমমজুরি প্রযোজ্য। উপদেষ্টাদের জন্য মজুরি প্রদানে, বিতরণে এবং কাজ বন্টণে ব্যাঘাত ঘটবে। তাঁরা রাষ্ট্রপতিকে স্মরণ করিয়ে দেন মনরেগা একটি সর্বজনীন প্রকল্প যেখানে গ্রামীণ ভারতের যে কোনও কায়িক শ্রম দিতে ইচ্ছুক সাবালক কর্মপ্রার্থী যথাবিহিত ন্যূনতম মজুরিতে কাজ পাওয়ার অধিকারী। এই প্রকল্পে চাহিদা অনুযায়ী কর্মের সংস্থান করা হয়। কিন্তু কাজের সংস্থান যদি জাতপাতের ভিত্তিতে করা হয় তাহলে এই আইনের মূল ভিত্তিকেই দূর্বল করা হবে এবং কর্মপ্রার্থীদের পৃথকীকরণ ঐ আইনকে পথভ্রষ্ট করবে। জানা গেছে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জাতপাত নিরপেক্ষভাবে সবার জন্য সুযোগের নীতিকে প্রভাবিত করছেন। বিভিন্ন রাজ্যে এসসি/এসটি’দের মজুরি প্রদানে শুধু দেরী করাই হচ্ছে না, তাদের কম মজুরিও দেওয়া হচ্ছে বেআইনিভাবে। এর সামাজিক অভিঘাতে দেখা যাচ্ছে গ্রামীণ এলাকায় জাতপাতের ভিত্তিতে কিছু কিছু গোষ্ঠীর মজদুর কাজ পাচ্ছেন, আর সেই কারণে মনরেগার কাজের ক্ষেত্র সেই জাতের এলাকায় চলে যাচ্ছে। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে মনরেগার কাজে দলিতরা কম মজুরি পাচ্ছেন।
চিঠির শেষভাগে বলা হয়েছে মনরেগার কাজের জন্য প্রচুর চাহিদা রয়েছে। গ্রামে গ্রামে পরিযায়ী শ্রমিকরা বিগত বছর থেকে কোভিডের জন্য ফিরে আসায় কাজের চাহিদা আরও বেড়ে গেছে। পরিবহণ, গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে গ্রামীণ দরিদ্ররা প্রায় অভুক্ত অবস্থায় রয়েছেন। তাই আমাদের দাবি এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে মনরেগার উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করুন এবং মনরেগায় বছরে ২০০ দিন কাজ ও দিনপ্রতি ৬০০ টাকা মজুরি দেওয়া হোক যাতে গ্রামের দরিদ্ররা বেঁচে থাকেন।