আয়ারলা’র অন্তর্ভুক্ত সদৌ অসম গ্রামীণ শ্রমিক সংস্থার রাজ্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক অরূপ কুমার মহন্ত, রাজ্য সমিতির সদস্য আয়েফা বেগম এবং ধরমতুল শাখার কাবেরী দাস ও হেমলতা দাসকে নিয়ে গঠিত চার সদস্যের একটি দল সরেজমিন তদন্তের জন্য অসমের জাগীরোড বিধানসভা কেন্দ্রের দক্ষিণ ধরমতুল গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ ধরমতুলে হাজির হয়। কিছুদিন আগেই অসমিয়া দৈনিক ‘অসমিয়া প্রতিদিন’ কাগজের একটি প্রতিবেদন সারা অসম জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। খবরটি এমন যে এই অঞ্চলের দারিদ্র ক্লিষ্ট গ্রামবাসীরা মাইক্রোফিনান্স কোম্পানির ঋণের কবলে পড়ে সুদ সহ কিস্তি পরিশোধ করতে না পারার দরুণ কলকাতার মুকুন্দপুরে রবীন্দ্রনাথ টেগোর ইন্টান্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্সেস-এ কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য হন।
এই খবরটি সামনে আসার অব্যবহিত পরেই আর দেরী না করে চটজলদি সেখানে যাওয়া হয়। এবং যাঁরা কিডনি বিক্রি করেছেন তাঁদের সঙ্গে দেখা করা হয়। জানা যায় গ্রামটি বন্যা কবলিত। প্রায় সাতশো পরিবার কপিলি নদীর বাঁধের উপর মনুষ্যেতর জীবন কাটান। গ্রামবাসীরা দিন মজুরি, কুমোর বৃত্তি, খড়ি বিক্রি করেই দিন গুজরান করেন। আজ পর্যন্ত এঁদের না আছে কৃষিভূমি — না আছে পাট্টা। বাসভূমি সর্বাধিক তিন কাঠা থেকে সর্বনিম্ন দশ লোচা। বেশিরভাগ বাড়িগুলো বাসযোগ্যই নয়। সরকারি অনেক স্কিম এই অঞ্চলে ঢোকেইনি। বছরের পাঁচ মাস বাঁধের উপরেই বাস করাটা এখন অভ্যেসে দাঁড়িয়েছে। এঁদের বেশিরভাগ পরিবারের রেশন কার্ড নেই। যাঁদের আছে তাঁরা সরকার নির্ধারিত পরিমাণ থেকে কম পরিমাণে চাল পান। জবকার্ড আছে কিন্তু কাজ নেই। বন্ধন, আরজিভিএন মাইক্রোফিনান্স কোম্পানির ঋণের কবলে। এই ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে মহাজনী ঋণের কবলে পড়েছেন। মাসিক শতকরা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সুদ গুনতে হয়। ঋণের নাগপাশ এঁদের এমনভাবে আষ্টে-পৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে যে বেঁচে থাকার সমস্ত পথই আস্তে আস্তে রুদ্ধ হয়ে আসছে। আর এখানেই মানব অঙ্গের কারবারিরা চোরাবালিতে ফেঁসে যাওয়া মানুষের ত্রাতা সেজে দুরাবস্থার পুরো সুযোগ নিতে তৎপর হয়ে ভাগাড়ের শকুনের মতো নেমে পড়েছে। কিডনি বিক্রি করা মানুষটিকে যখন কলকাতায় প্রায় ৪-৭ মাস থাকতে হয় তখন প্রতিবেশিরা জানেন যে সেই ব্যক্তিটি রোজগারের তাগিদে বাইরে কাজ করতে গেছেন। মোদীর গরিব কল্যাণ যোজনার অন্তঃসারশূন্যতা এখানেই মুখ থুবড়ে পড়ে। কিডনি বিক্রি করার পর দালালেরা প্রতিশ্রুতি মতো দেয় টাকা কিডনি বিক্রেতাদের না দিয়ে ঠকায়।
আমরা প্রথম দেখা করি দীনেশ দাসের সাথে। তাঁর বয়স ৪০। কিন্তু সব মিলিয়ে অকাল বার্ধক্যের ছাপ স্পষ্ট, পেশায় দিন মজুর। কখনও মাটির জিনিস বিক্রি করেন। বাবার নাম মাধোরাম দাস। তিন সদস্যের পরিবার। তাঁর বাসযোগ্য জমি মাত্র দশ লোচা। চাষ জমি নেই। প্রায় দু’বছর আগে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। সন্তানটির মাথায় জল জমা হয়। ফলে চিকিৎসার জন্য প্রায়ই গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজে যেতে হয়। সেখানেই তাঁরসঙ্গে গুয়াহাটির চাঁদমারির দিলীপ দাসের সঙ্গে পরিচয়। সেই দিলীপ দাস তাঁকে বললেন যে তাঁর কিডনির দরকার আর ছেলেটির চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব তিনি নেবেন। তখন তিনি গোলাঘাট জেলার উরিয়ামঘাটের বুল বরার সঙ্গে ফোনে আলাপ করিয়ে দেন। দীনেশ দাস ছেলের জীবন বাঁচাতে কিডনি বিক্রি করতে সম্মত হন এবং সাড়ে চার লাখ টাকায় কিডনি বিক্রির মৌখিক চুক্তি হয়। অ্যাডভান্স হিসেবে এক লাখ ষাট হাজার টাকা দীনেশ দাস হাতে পান; তাঁকে বলা হয় কোনকিছুর অভাব হলে জানাতে আর প্রয়োজন হলে আরো টাকা দেয়া হবে। কয়েকদিন বাদে দীনেশ দাসকে ফোন করে জানানো হয় যে কলকাতায় যেতে হবে। গুয়াহাটির দিলীপ দাস ও ভারতী বরা স্থানীয় রাজস্ব দফতর থেকে কাগজ বের করে বলেন যে দীনেশ দাসকে দেড় মাসের জন্য কলকাতায় যেতে হবে। তারপর দীনেশ দাস কলকাতায় যান। ছেলের চিকিৎসার জন্য আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়। তিনি মোট তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা পান। বাকি এক লাখ টাকা দালালরা মেরে দেয়। তাঁর রেশন কার্ড নেই। জবকার্ড আছে কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে কোনো কাজই হচ্ছেনা। ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘর আছে কিন্তু পায়খানা নেই। বন্ধন থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ১০৪ কিস্তিতে সেই ঋণ পরিশোধ করার শর্ত ছিল। ৭০টি কিস্তি পরিশোধ করেছেন মাসিক ১০ শতাংশ সুদে ১৫,০০০ টাকা ঋণ নিয়ে। প্রথম প্রথম দীনেশবাবু মুখ খুলতে নারাজ ছিলেন কারণ তার আগের দিনই অর্থাৎ ১৪ জুলাই নগাওঁ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ প্রদ্যোত বরদোলইকে বিজেপি’র লোকজন অপদস্থ করে। কিন্তু যখন আমরা আমাদের পরিচয় দিলাম আর সংগঠনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে বললাম তখন আস্তে আস্তে সন্দেহের দৃষ্টি হটিয়ে শুধু মুখ খুললেন তাই নয় বরং প্রতারণার শিকার অন্যান্যদের মুখ খুলতেও উৎসাহিত করলেন।
এরপর দেখা করা হয় সুমন্ত দাসের সঙ্গে। তাঁর বাবার নাম বসন্ত দাস। বয়স ৪০ ছুঁই ছুঁই। পাঁচ সদস্যের পরিবার। পেশায় রাজমিস্ত্রি। কৃষি জমি নেই কিন্তু মাথা গোঁজার ঠাঁই দশ লোচা। তাঁর মেজ ছেলে ধ্রুবজ্যোতির হার্টের ব্যামো। তিনি পূর্ব ধরমতুলের রমেন মেধির কাছে তাঁর ছেলের সমস্যার বিষয়ে জানানোর পর রমেন মেধি বিজেপি যুব মোর্চার দোর্দণ্ড প্রতাপশালী নেতা নীতু দাসের সঙ্গে পরিচয় করান। নীতু দাস সুমন্তকে নিয়ে কলকাতায় গেলে পাঁচ লাখ টাকায় কিডনি বিক্রির বন্দোবস্ত হয়। কলকাতায় প্রায় সাত মাস তিনি থাকেন এবং নগদ দেড় লাখ টাকা পান। বাকি টাকা চাইলে গুয়াহাটির লিলিমাই বড়ো ফোন করে সুমন্ত দাসের স্ত্রীকে কিডনি দিতে বলে আর বিনিময়ে ছেলের চিকিৎসার খরচ বহন করা হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু আজ অবধি সুমন্তবাবু বাকি টাকা আর পাননি। সুমন্তবাবুর আইএওয়াই ঘর আছে কিন্তু রেশন কার্ড নেই। বন্ধন থেকে ঋণ নিয়েছিলেন ৯০,০০০ টাকা। শোধ করেছেন ৪৫,০০০ টাকা।
তারপর দেখা করা হয় তৃষ্ণা দাসের সঙ্গে। বয়স ৩০ বছর। স্বামী ললিত দাস। পেশায় মৎস্যজীবীই। এই দাস দম্পতি নিঃসন্তান। বাসোপযোগী ঘরের অভাব। এরমধ্যেই বিপত্তি। গাছ থেকে পড়ে ললিত বাবুর হাত-পা ভেঙে যাওয়ার ফলে আয় বন্ধ হয়ে যায়। ইতোমধ্যেই বন্ধন থেকে ৭০,০০০ টাকা আর আরজিভিএন থেকে ২৫,০০০ টাকা ঋণ নিয়েছেন। দু’বছরের মধ্যে দুটো কোম্পানির ঋণ পরিশোধ করার শর্তে। একবছর দুটি কোম্পানির কিস্তি ঠিকমতো পরিশোধ করা হয়। এরপর স্বামীর চিকিৎসার জন্য কিডনি বিক্রি করা হয়। সাড়ে চার লাখ টাকায় কিডনি বিক্রির বন্দোবস্ত হয় যদিও সাড়ে তিন লাখ টাকা হাতে পান। কিডনি বিক্রির টাকা দিয়ে স্বামীর চিকিৎসা আর কাঠের একটি ছোট্ট ঘর তৈরি করা হয়। বাকি টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করেন। কৃষি জমি নেই। জবকার্ড আছে, কাজ নেই। বিজেপি যুব মোর্চার নেতা নীতু দাসই তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যান। যতই ভেতরে যেতে থাকি ততই দেখি আম জনতার দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে কিভাবে রাজনৈতিক নেতা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রের মুনাফাখোর ব্যবসায়ী-পুলিশ-দালাল চক্রের অশুভ আঁতাত তার জাল প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বিছিয়েছে।
হাঁটতে হাঁটতে পথেই দেখা হল বছর তিরিশের তরতাজা যুবক বুল দাসের সঙ্গে। বুল পেশায় দিন মজুর। বাবা মনোরঞ্জন দাস। চার সদস্যের পরিবার। সাড়ে চার লাখ টাকায় তিনি কিডনি বিক্রি করেছেন এবং সম্পূর্ণ টাকাই পেয়েছেন। এখানেও বিজেপি যুব মোর্চার নেতা নীতু দাসই কিডনি বিক্রি চক্রের আসল পাণ্ডা। এবার এই গ্রামে শেষ যে মানুষটির সঙ্গে দেখা করা হয় তাঁর নাম ভীমরাজ দাস। বয়স পঁয়ত্রিশ বছর। বাবা প্রয়াত কাদিত দাস। চার সদস্যের পরিবার। কৃষি জমি নেই। স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলেই দিনমজুরি করে সংসার চালান। কোনো সরকারি ঘর নেই। জবকার্ড আছে, কিন্তু কাজ নেই। রেশন কার্ড আছে, কিন্তু সরকার নির্ধারিত পরিমাণ চাল পাননা। বন্ধন থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ সুদ সহ দাঁড়িয়েছে এক লাখ কুড়ি হাজার টাকা। এই দেনা থেকে মুক্তি পেতে আবার মহাজনী ঋণ মাসিক ১০ শতাংশ সুদে মাঝে মাঝেই ঋণ নিয়ে থাকেন। এর মাঝেই ভীমরাজের মা মারা যান এবং মেয়ে প্রথম রজঃস্বলা হয়। মেয়েদের প্রথম রজঃস্বলা হওয়া বিষয়টি অসমিয়া গ্রামীণ সমাজে আনন্দের বিষয়। এই সময় তাঁর টাকার প্রয়োজন হওয়ায় তিনি উত্তর ধরমতুলের রমেন দাসের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার বিষয়ে জানান। এরপরই কিডনি বিক্রির প্রস্তুতি শুরু হয়। প্রথমে ভীমরাজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয় গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজে। তাঁকে মাঝে মাঝে হাজার-পাঁচশ টাকা দেওয়া হয়েছিল। ভীমরাজের সঙ্গে গুয়াহাটির হাতীগাওঁ-র সুমি দাসের সঙ্গে পরিচয় করানো হয়, আর পাঁচ লাখ টাকায় কিডনি বিক্রি চূড়ান্ত হয়। ভীমরাজ বাড়িতে এসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে দেরি করার দরুণ গুয়াহাটি থেকে তিনজন লোক এসে জোর করে ভীমরাজকে নিয়ে যেতে চাইলে তিনি ওই তিনজনকে তাড়িয়ে দেন। এরপর সেই তিনজন গিয়ে নেলী থানায় কেস দেন। এটি ২০১৯ সালের ঘটনা। নেলী থানায় পুলিশ ভীমরাজকে ডেকে পাঠায় এবং ধমক দিয়ে কিছু কাগজে সই করিয়ে বলে যে কলকাতায় গিয়ে কিডনি দিতে হবে আর সুমি দাসের সঙ্গে দেখা করতে বলে। এর পরদিনই ভীমরাজ কলকাতায় যান এবং সেখানে তিন মাস থাকেন। তিনি তিন লাখ টাকা পান কিন্তু বাকি দুই লাখ টাকা তাঁকে দেওয়া হয়নি। এনিয়ে সুমি দাসকে ফোন করলে সুমির মোবাইল ফোনের সুইচ অফ থাকে আর তাঁর অফিসেও তালা ঝোলানো থাকে।
অনুরূপ কিডনি বিক্রির ঘটনা নগাওঁ জেলার সদর শহর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে হুজ কৈবর্ত গ্রামেও সংঘটিত হয়েছে। এটিও অনুসূচিত জাতি অধ্যূষিত গ্রাম। বিষ্ণু গোয়ালা ওরফে বাপোতি শর্মা দাসের বাড়িতে গিয়ে আমরা তাঁরসঙ্গে দেখা করে জানতে পারলাম যে বন্ধন থেকে ঋণের পরিমাণ ৫০,০০০ টাকা আর আশা ইণ্ডিয়াতে ঋণের পরিমাণ ২৫,০০০ টাকা। এবার মাইক্রোফিনান্স কোম্পানির দেনা শোধ করতে গিয়ে মহাজনী ঋণ মাসিক ১০ শতাংশ সুদে ৭০,০০০ টাকা ঋণ নিয়ে একেবারে ঋণের ফাঁদে ফেঁসে গেছেন। তারপর সবকিছু থেকে মুক্তি পেতে এবার কিডনি বিক্রি। কলকাতায় তিনি তিন মাস ছিলেন। কিডনি বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা পান। এই গ্রামের কিডনি বিক্রেতাদের চোখে মুখে এক অজানা ভয়ের ছাপ স্পষ্ট ফুটে উঠেছিল। ফলে আর বেশিদূর এগোতে পারেনি।
কিডনি বিক্রির বিষয়টি ডিব্রুগড় জেলার লাহোয়াল বিধানসভা কেন্দ্রেও সংঘটিত হয়েছে। এখানে কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন আদিবাসী চা শ্রমিকরা। আসলে বিজেপি সরকারের আমলে অসমের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কথা নিতি আয়োগের রিপোর্টেই সামনে এসেছে। অসম দেশের সর্বাধিক ঋণগ্রস্ত রাজ্য। কিছু চমকপ্রদ হিতাধিকারী সৃষ্টির রাজনীতি করতে গিয়ে অসমে উপার্জন ও সংস্থাপনের অর্থাৎ রুটি-রুজির জন্য স্থায়ী কাঠামো গড়ে তোলার বিষয়টি বিসর্জন দিয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্র ভেঙে পড়ছে। একটার পর একটা শিল্প মৃত্যুর দিন গুণছে।
অনুন্নত জাতির উন্নয়নের প্রশ্নে অসমে একটি উন্নয়ন বোর্ড আছে। অনুন্নত জাতির উন্নয়নের প্রশ্নে এই বোর্ড মারফত কোটি কোটি টাকা কোথায় যায়? তার খরচ জনসমক্ষে আনা খুবই দরকার। আমরা সদৌ অসম গ্রামীণ শ্রমিক সংস্থা থেকে দাবি করি,
- ভাষান্তর: শুভ্রজ্যোতি বর্ধণ
সভাপতি, সদৌ অসম গ্রামীণ শ্রমিক সংস্থা, অসম রাজ্য সমিতি