মোদী ও রূপানী সরকারের আদিবাসী-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে গুজরাটে আদিবাসীরা সোচ্চার

সুপ্রীম কোর্ট আদিবাসীদের থেকে বনাঞ্চলের সমস্ত বিতর্কিত জমি নিয়ে নেওয়ার রায়দানের পর কেন্দ্রীয় সরকার দেশজুড়ে অরণ্যভূমি থেকে আদিবাসী-মূলবাসীদের উচ্ছেদ অভিযানে প্রমত্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এমন এক নয়া অরণ্য আইন বানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে যার পরিণামে আদিবাসীদের যে কোনো জমির প্রশ্নে শুধু বঞ্চনা করা হবে তা নয়, এমনকি তা কার্যকরি করতে প্রয়োজনে প্রকাশ্যে আদিবাসীদের গুলি করে মারা ক্ষমতার অধিকারী হবে। অন্য কথায়, এযাবৎ ‘মাওবাদী’ অজুহাত দিয়ে আদিবাসীদের গণ-আকারে হত্যা করার যে অভিযান চালিয়ে আসা হচ্ছে তাকেই এরপর থেকে আইনি ও বৈচারিক বৈধতা দেওয়া হবে।

এই পরিস্থিতিতে গুজরাটের বলসড় জেলার ব্যাপক আদিবাসী অধ্যূষিত অঞ্চল তালুকা ধরমপুর নিবাসী আদিবাসী জনতা রাস্তায় বেরিয়ে এসে মোদী ও রূপানি সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এই বিক্ষোভ সংগঠিত করার নেতৃত্বে রয়েছে সিপিআই(এমএল)। ব্যাপক নারী-পুরুষ, যুববৃদ্ধ নির্বিশেষে লাল ঝান্ডা উড়িয়ে তাদের ক্ষোভের কারণ জানিয়ে দেয়। ধরমপুর মহকুমা শাসকের মাধ্যমে গুজরাট মুখ্যমন্ত্রী রূপানির উদ্দেশে এক স্মারকলিপি পাঠানো হয়। ঐ দাবিপত্রে দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করা হয়েছে ২০০৬ সালের অরণ্য আইনই সমগ্রভাবে বলবৎ রাখতে হবে। এই একই সরকার, যে কীনা কাশ্মীরী পন্ডিতদের পুনর্বাসনের ইস্যুকে গত কয়েক বছর ধরে একটা বড় জাতীয় ইস্যু প্রতিপন্ন করতে উঠেপড়ে লেগেছে; অথচ এই একই সরকার আদিবাসীদের তাদের বংশ পরম্পরায় অধিবাসের চিরাচরিত অরণ্যভূমি থেকে উচ্ছেদ করতে শতাধিকবার চেষ্টা চালিয়ে এসেছে, এবং এখন দানবীয় খুনে পরিকল্পনা আঁটছে যে কোনো আদিবাসী প্রতিবাদীকে নিকেশ করে দেওয়ার। স্মারকলিপির দাবিতে উল্লেখ করা হয়, গুজরাটের পূর্বাঞ্চলে যে সকল আদিবাসী চিরাচরিত বসবাস বা চাষবাস করে আসছেন তাদের সেইসমস্ত জমির উপর অধিকার ন্যস্ত রাখতে হবে। এই মান্যতার অন্যথা চলবে না। সরকার ঐ বিস্তীর্ণ প্রান্তরে লাগানো বেড়া, দাগানো সীমারেখা, বসানো পিলার, চারাগুল্মো ইত্যাদি যদি প্রত্যাহার না করে তাহলে আদিবাসী জনতা সমুচিত জবাব দেবে, যে জমিগুলো ছিনিয়ে নেওয়া সেগুলো পুনর্দখল করে নেবে এবং তার দায় বর্তাবে মোদী-রূপানি সরকারদ্বয়ের ওপর।

আদিবাসীদের যে রাস্তার মিছিল সংগঠিত হয় তাতে নেতৃত্ব দেন সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের গুজরাট রাজ্য শাখার সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ।

খণ্ড-26
সংখ্যা-27