এই কনভেনশনে উপস্থিত আমাদের সমস্ত অতিথি ও সাথী কমরেডদের কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে অভিনন্দন। অনেক আন্দোলন, লড়াই, প্রতিবাদের পরেও ২০১৯ এর নির্বাচনে মোদি সরকার আবার ক্ষমতায় ফিরে এসেছে এবং তারপর থেকেই সংসদের ভেতরে বাইরে লাগাতার গণতন্ত্রের উপর তীব্র হামলা চলছে। এই পরিস্থিতিতে দেশে আজ ব্যাপক ঐক্য ও প্রতিরোধের দরকার। আমাদের ভালো লাগছে তিস্তা শীতলবাদ, বিনায়ক সেন, পরাঞ্জয় গুহঠাকুরতা, পূরবী মুখোপাধ্যায়ের মতো মানুষরা সময় বার করে এসেছেন সংহতি ও প্রতিরোধের এই কনভেনশনে। এসেছেন বাংলা ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ। ধর্ম ও ভাষার ভিত্তিতে দেশের ঐক্যকে নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে। একে নস্যাৎ করতে আশেপাশের রাজ্য থেকে কমরেডরা এসেছেন।
জুলাই মাসটা আমাদের এমন কিছু নাম মনে করিয়ে দেয়, যারা এই চ্যালেঞ্জের মুহূর্তে আমাদের শক্তি ও অনুপ্রেরণা যোগান। ২৮ জুলাই লালবাজারে চারু মজুমদারকে হত্যা করা হয়েছিল। এটা তাঁর জন্মশতবর্ষ। ৩১ জুলাই প্রেমচাঁদের জন্মদিবস। তাঁর কলম স্বাধীনতা আন্দোলনকে সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করেছিল। মৈত্রী ও প্রগতির লড়াইয়ে তিনি আমাদের বিরাট বড় প্রেরণা। বিদ্যাসাগরের মৃত্যুদিন ২৯ জুলাই। বাংলার শিক্ষা আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা অবিস্মরণীয়। শিক্ষায় সবার অধিকার - মহিলাদের অধিকার, নিম্নবর্গের অধিকারের জন্য তিনি লড়াই করেছিলেন। অমিত শাহর রোড শো-এর সময়ে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হল। ওরা এঁদের নস্যাৎ করতে চায়, কিন্তু আমরা এই মনীষীদের কাছ থেকে প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যাব।
কলকাতা শহর স্বাধীনতা আন্দোলনের গোড়ার কাল থেকেই প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের প্রাণকেন্দ্র। স্বাধীনতার পরেও এখানে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের ওপর হামলার বিরুদ্ধে, কৃষক শ্রমিকের ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে, দেশ বিদেশের নানা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আওয়াজ উঠেছে। সেই কোলকাতায় আমরা এই কনভেনশন করছি। যে সমস্ত চিন্তাবিদ, লেখক, সমাজ সংস্কারক, স্বাধীনতাসংগ্রামী, কমিউনিস্ট বিপ্লবী এবং শহীদেরা এখানকার প্রগতিশীল সংস্কৃতির বুনিয়াদ নির্মাণ করেছেন, তাঁদের সবাইকে আমরা শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
কোলকাতা অনেক ট্রাজেডিও দেখেছে। ১৯৪০ এর দশকের দুর্ভিক্ষ, দেশভাগের সময় সাম্প্রদায়িক হিংসা, সিদ্ধার্থ জমানার দমন পীড়ন বা এখনকার সঙ্ঘী বর্বরতা। কিন্তু কোলকাতা কখনোই এইসব ট্রাজেডির সামনে মাথা নোয়ায়নি। জোরের সাথে প্রতিবাদ প্রতিরোধে সামিল হয়েছে। সঙ্ঘী বর্বরতা ও ভীড় হিংসা আজকাল বাংলায় মাথা তুলছে। আমরা এই ফ্যাসিবাদী আগ্রাসনকে দৃঢ়তার সঙ্গে রুখতে চাই। আমরা আমাদের ঐক্যকে সুদৃঢ় করার বিষয়ে প্রত্যয়ী। আমরা এখানে আমাদের লড়াই ও বিজয়ের শপথ নিতে এসেছি।
এই কনভেনশনে আমরা দেখছি গোটা দেশের নানা জায়গা থেকে কমরেডরা এখানে এসেছেন। আমাদের আলাদা আলাদা ভাষা, আলাদা আলাদা ধর্ম, আলাদা আলাদা খাদ্যাভ্যাস। এই বহুত্বই হল ভারতবর্ষ। অন্যদিকে ভারতীয় জনতা পার্টি চায় তাদের সংকীর্ণ একমাত্রিক দৃষ্টিকোণে সবকিছুকে বেঁধে রাখতে। সবকিছুকে একরঙে রাঙাতে। আমাদের দেশের সমস্ত বৈচিত্র্যকে, ভিন্নতাকে বিজেপি আরএসএস হিংসায় ঘৃণায় বদলে দিতে চায়। আমরা এর বিরুদ্ধে লড়ব। কোনও সরকার, সে যতই শক্তিশালী হোক না কেন, কোনো দল, সে যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন – তাদের আমরা কিছুতেই আমাদের কথা বলার ভাষা, খাবার তালিকা বা পরিধানের ধরন-ধারণ ঠিক করে দেবার সাহস দেখাতে দেব না। আমরা আমাদের বহুত্বকে ভালোবাসি, বৈচিত্র্যকে শ্রদ্ধা করি। আমাদের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকেও বিজেপি ভেঙে দিতে চাইছে। ভারতের সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ ও বহুরঙা চরিত্রকে অস্বীকার করে কেন্দ্রীকরণের স্টীমরোলার চালানোর অর্থ হল দেশের অসংখ্য মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে দেশকে দুর্বল করে দেওয়া। আমরা তা হতে দেব না।
ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় থেকে আধুনিক গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল। ছাত্র যুব মহিলা শ্রমিক কৃষক আদিবাসী মানুষ যখন স্বাধীনতার জন্য লড়ছিলেন তখন সাম্প্রদায়িকতার বিষও প্রবেশ করেছিল। সেটা দেশকে ভাগও করে দিয়েছিল। আমরা সেখান থেকে শিক্ষা নিয়েছিলাম দেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতাকে সম্পূর্ণভাবে দূর করতে হবে। নাহলে এই সাম্প্রদায়িকতা আমাদের স্বাধীনতাকেই নষ্ট করে দেবে। স্বাধীনতার শত্রুরাই আজ আবার এই বিষ ছড়াচ্ছে, কিন্তু যারা স্বাধীনতাপ্রেমী তারা এই সাম্প্রদায়িকতাকে অবশ্যই রুখে দেবে।
নাগরিকতার সাথে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু এখন নাগরিকতার সাথে ধর্মকে জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এই দেশের মানুষদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেওয়া হচ্ছে। এনআরসি আসামে চল্লিশ লক্ষ মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে এমন আশঙ্কা রয়েছে।
আজকে অনেকে দেশপ্রেমের ঠিকা নিয়ে নিয়েছেন। স্বাধীনতার যে লড়াই মঙ্গল পাণ্ডে, লক্ষীবাঈরা ১৮৫৭ সালে শুরু করেছিলেন তার প্রেরণায় গান লিখেছিলেন আজিমুল্লা খান, সেখানে তিনি সরাসরি বলেছিলেন এই দেশ আমাদের, আমরাই এই দেশের মালিক।
যে সাভারকর মুচলেকা দিয়ে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন তাকেই বিজেপি, আরএসএস দেশপ্রেমিক বলে তুলে ধরে যা আমাদের লজ্জা। তাদের ভাণ্ডারে আর কোনও নাম নেই। আমাদের কাছে আছে ভগৎ সিং থেকে শুরু করে হাজার হাজার স্বাধীনতাসংগ্রামীর উজ্জ্বল উত্তরাধিকার। আমাদের ওদের থেকে দেশপ্রেম শিখতে হবে না।
সেদিন ট্রাম্প বললেন যে মোদি তাকে বলেছেন তিনি যেন কাশ্মীর প্রশ্নে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করেন। সেনাবাহিনীর কমাণ্ডার অভিনন্দন পাকিস্থানে বন্দী হওয়ার পরও আমরা দেখেছিলাম আমেরিকা আমাদের বিদেশনীতির মধ্যে ঢুকে পড়েছে। বাজেটের আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে বেসরকারী বিদেশী আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মোদি সরকার বিদেশী মুদ্রায়, বিশেষ করে মার্কিন ডলারে ধার নেওয়ার কথা বলছে। আমরা কার থেকে তেল কিনব বা কিনব না, কার থেকে গ্যাস কিনব, সে বিষয়ে মত দেবার ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে আমেরিকা। রেল থেকে শুরু করে সমস্ত ক্ষেত্রের বেসরকারীকরণ করা হচ্ছে। আদিবাসী বনবাসীদের তাদের জমি থেকে উৎখাত করার উদ্দেশ্য নিয়ে অরণ্য আইনকে বদলানো হচ্ছে। সরকার যদি আদানি আম্বানিদের কাছে ভারতের স্বার্থকে বন্ধক দিয়ে দেয়, সিধু কানু বীরসার উত্তরাধিকারিরা নতুন হুল উলগুলানের পথে হাঁটবে। আমাদের দীর্ঘ উজ্জ্বল স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে আরএসএসের কোনও ভূমিকাই নেই। তারা বরাবর ব্রিটিশের সাথে সমঝোতাই করে এসেছে। এখনো দেখা যায় একদিকে তাদের মুখে দেশপ্রেমের বুলি, অন্যদিকে দেশের সার্বভৌমত্ব, দেশের সম্পদকে বিদেশের কাছে, দেশ বিদেশের কর্পোরেটদের কাছে বিকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
তারা মনুস্মৃতি-কে নিয়ে আসছে। আমাদের সামাজিক ন্যায়ের জন্য লড়াইকে শক্তিশালী করতে হবে। ফুলে আম্বেদকর থেকে শুরু করে যাঁরাই সামাজিক স্তরে স্বাধীনতা ও সমতার জন্য লড়েছিলেন, আমাদের তাঁদের থেকে প্রেরণা নিয়ে এর প্রতিরোধ করতে হবে।
যারা এখন ক্ষমতায় বসে আছেন তারা ঠিক ইংরেজরা যেভাবে শাসন করত, সেভাবেই রাজত্ব করছে। ১৯১৯ এ আনা হয়েছিল রাওলাট আইন। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে রুখতে জালিওয়ানওয়ালাবাগ হয়েছিল। নাইট উপাধি ত্যাগ করে তার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। উঠে এসেছিলেন ভগৎ সিং। ২০১৯-এ এনআইএ, ইউএপিএ-কে সংশোধন করে সেই রাওলাট আইনকেই ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। আর টি আই আইনকে বাতিল করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য এইসব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমাদের জোরদার লড়াই চালাতে হবে।
আমরা দেখছি আধারের নামে খাদ্যের অধিকার কেড়ে নেওয়ার ঘটনা হচ্ছে ঝাড়খণ্ডে। পঞ্চাশ ষাটের দশকে বাংলায় ব্যাপক খাদ্য আন্দোলন হয়েছিল ক্ষুধার বিরুদ্ধে। গড়ে উঠেছিল নকশালবাড়ির কৃষক আন্দোলন। সত্তরের দশকে এইসব আন্দোলনকে দমন করতে সন্ত্রাস নামিয়েছিল সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের স্বৈরাচারী জমানা। চারু মজুমদারকে পুলিশী হাজতে হত্যা করা হয়। আজও সরকারী খাতায় সরোজ দত্ত নিখোঁজ। কিন্তু এর বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানায় শক্তিশালী বাম আন্দোলন, দৃপ্ত কন্ঠে ঘোষিত হয় “এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয়”। বাম ও গণতান্ত্রিক শব্দদুটি প্রায় সমার্থক হয়ে ওঠে এখানে। বামেরা ক্ষমতায় আসার পর ভূমিসংস্কার, বর্গা, পঞ্চায়েতীরাজ প্রভৃতির মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্রকে প্রসারিত করার উদ্যোগ শুরু হয়। ইতিহাসের নিষ্ঠুর মোড় পরিবর্তনে তিন দশক পরে আশ্চর্যজনক ভাবে এই জমি ও গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলনকে পুঁজি করেই বামেদের সরিয়ে ক্ষমতায় আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু যে তৃণমূল গণতন্ত্রর কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিল, সেই ক্ষমতায় আসীন হয়ে সন্ত্রাস ও স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে। ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীদের ওপর নামানো মারাত্মক সন্ত্রাস, রাজ্য সরকারের ক্রমবর্ধমান নৈরাজ্য, দুর্নীতি এবং তাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের কর্মীদের নানা বেআইনি কার্যকলাপের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস ক্রমশই জনবিচ্ছিন্ন হচ্ছে, আর বিজেপি এটা ব্যবহার করছে। ছড়িয়ে দিচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার বিষ। তৃণমূলকে ভেঙে তারই কর্মী ও নেতাদের ব্যবহার করে ব্যাপক রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও হিংসার মিলিত আক্রমণে বিজেপি আজ বাংলা দখলের মরিয়া অভিযান চালাচ্ছে।
একে রুখতে আজ গোটা বাংলায় সমস্ত বামপন্থী ও গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষকে একজায়গায় আসতে হবে। কোনও আলাদা দলের কথা নয়, সব সচেতন মানুষের কাছেই এটা আমাদের আন্তরিক আবেদন।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে এসেছে। নির্বাচন কমিশন তার কোনো সদুত্তর দিচ্ছে না। ইভিএম নিয়ে সংশয়ের নিরসনের জন্য আমরা ব্যালটে ফিরে যাবার দাবি জানাচ্ছি।
জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে মুসলিমদের মারা হচ্ছে, তাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। অমর্ত্য সেন বলেছেন এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়। তারা বলছে অমর্ত্য সেনকে এই নিয়ে কথা বলতে হবে না। অপর্ণা সেন থেকে শুরু করে অন্যান্য বুদ্ধিজীবীরা যখন প্রতিবাদপত্র লিখছেন, তখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। পাল্টা চিঠি তৈরি করা হচ্ছে। চারিদিকে চুপ করিয়ে দেওয়া, ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা চলছে।
নানাভাবে প্রতিবাদীদের ভয় দেখিয়ে আমাদের চুপ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের চুপ করানো যাবে না। কখনো কখনো একলাই সাহসের সঙ্গে প্রতিবাদে নেমে পড়তে হয়। যে কোনও গুণ্ডাগিরির বিরুদ্ধে আমাদের দ্রুত নানা পদ্ধতিতে প্রতিবাদে নেমে পড়তে হবে। বিরোধীরা আজ সংসদের মধ্যে দুর্বল হতে পারে। এই দুর্বলতার সুযোগে বিভিন্ন জনবিরোধী বিল একের পর এক পাশ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তার লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এই কনভেনশনে আমরা কোনও দলীয় ঐক্য বা প্রতিবাদের কথা বলছি না। আমরা মানুষের ঐক্য ও প্রতিরোধের কথা বলছি। তামিল, তেলেগু, পাঞ্জাবি, সাঁওতালি, বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি অসমীয়া, ওড়িয়া ইত্যাদি নানা ভাষায় একতা ও প্রতিরোধের কথা আমরা এই কনভেনশনের হলে লিখেছি। ফ্যাসিবাদী শক্তি ক্ষমতায় বসে থেকে আগামী দিনে এই রাষ্ট্রের সমস্ত কিছুর পূর্ণ ফ্যাসিবাদীকরণ করতে চায়। আমরা সবাই একজোট হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়ব। জয় আমাদের হবেই।
জাতি ধর্ম বর্ণনির্বিশেষে আমরা সকলে একত্রিত হয়েছি। যে বিষয় নিয়ে এখানে আলোচিত হচ্ছে তা হল পশ্চিমবঙ্গে জাতি ও ধর্মনিয়ে অত্যাচারের যে নয়া জমানা শুরু হয়েছে আমি তার দ্বারা আক্রান্ত। শুধু টুপি দাড়ি রয়েছে বলেই আমরা কি সারা দেশে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবনা!
পশ্চিমবাংলায় আগে এরকম কখনও হয়নি। আমরা ভাবিনি এরকম কখনও হবে। পরিকল্পিত অশান্তির ছায়া অহিন্দু ও মুসলমানদের ওপর পড়েছে। আমাদের এবিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের ঐতীহ্যশালী ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখব আমরা। লাগাতার ধারাবাহিক সাম্প্রদায়িক অশান্তিগুলিকে ভ্রাতৃত্ব একতা ও আত্মীয়তা দিয়েই প্রতিরোধ করতে হবে। ধর্মের নামে জাতিভেদ ও মানুষে মানুষে বিভেদের বিরুদ্ধে এক হতেই হবে। জোর পূর্বক জয় শ্রীরাম বলানোর বিরুদ্ধে এক হতেই হবে। শুধু টুপি দাড়ি পাঞ্জাবির জন্য একজনকে অত্যাচার করা হবে, দেশ ছাড়ার হুমকি দেওয়া হবে – এ অভূতপূর্ব। এর বিরুদ্ধে আমাদের একতাই আমাদের জয়ী হওয়ার উপায়।