রেলের বেসরকারীকরণ ও বিভিন্ন উৎপাদন ইউনিটের কর্পোরেটাইজেশনের বিরুদ্ধে রেলের শ্রমিক-কর্মচারীরা গত ১০ জুলাই দিল্লীর যম্তর-মন্তরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ জানায়। অন্যান্য ক্ষেত্রের শ্রমিকরাও ঐ প্রতিবাদ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন সংহতি জানাতে। বিক্ষোভ জমায়েতে রেল কর্মীরা একইসাথে তাদের বিভিন্ন বকেয়া দাবিগুচ্ছও তুলে ধরে অবিলম্বে সেসব বাস্তবায়নের চাপ সৃষ্টি করেন। দিনের কর্মসূচীটি সংগঠিত করে এআইসিসিটিইউ।
রেলে বছরের পর বছর যাবৎ প্রচুর শূন্যপদ পড়ে থাকছে, শিক্ষানবীশ কর্মীরা তাদের নিয়মিতকরণ ও প্রকৃত কাজের পরিবেশের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে আসছে, সপ্তম বেতন কমিশন বেতনবৃদ্ধির যে সমস্ত সুপারিশ করেছে সেগুলো বকেয়া ফেলে রাখা হচ্ছে; এইসব কাজের কাজ না করে রেলকে নিরাপদ, সুরক্ষিত ও কার্যকরি করে তোলার নামে মোদী সরকার সম্পূর্ণ উল্টো লাইনে চলা শুরু করছে, সরকারের ‘ একশ দিনের পরিকল্পনায়’ রেলকে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার ফন্দি করছে।
রেল যেখানে জনগণের জাতীয় সম্পত্তি এবং তুলনামূলকভাবে কম খরচে মানুষের পরিবহণ পরিষেবা পাওয়ার গুরুত্বপূর্ণক্ষেত্র গণ্য হওয়া উচিত, সেখানে রেলকে কর্পোরেটদের হাতে হস্তান্তর করার অপচেষ্টা চলছে! মোদী সরকার সংসদে কত কী গরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় ফিরে পেয়েছে তার জোরে রেলকে বেসরকারি কোম্পানিগুলির কাছে বিক্রি করে দেওয়ার নৈতিক অধিকার থাকতে পারে না। তবু তা করার দুঃসাহস সরকার যদি দেখাতে চায় তবে সেটা হবে জনগণের প্রতি পুরোপুরি বিশ্বাসঘাতকতা করা, জনগণের স্বার্থকে এভাবে পেছন থেকে ছুরি মারতে সরকারকে সফল হতে রেল শ্রমিকরা কিছুতেই দেবে না। এই লড়াইয়ে এআইসিসিটিইউ সামনের সারিতে আছে এবং থাকবে। এই প্রতিশ্রুতি দেন ইউনিয়নের দিল্লী রাজ্য সভাপতি সন্তোষ রায়। আইআরইএফ(ইন্ডিয়ান রেলওয়ে এমপ্লয়িজ ফেডারেশন) নেতা কিষাণ কুমার বলেন, রেলের কোচ ফ্যাক্টরিগুলোর কর্পোরেট হস্তাম্তরের সরকারের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে রেল কর্মীদের বিভিন্ন প্রডাকশন ইউনিটগুলি ইতিমধ্যে যুদ্ধকালীন পথে নেমেছে। মোদী সরকারের সিদ্ধান্তগুলি রেল কর্মীরা কিছুতেই মানবে না। এআইসিসিটিইউ নেত্রী শ্বেতা রাজ বলেন, মোদী সরকারের আমলে যাত্রীভাড়া বেড়েছে, রেলের আলাদা বাজেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এখন সরকার উঠে-পড়ে লেগেছে বিবেক দেবরায় কমিটি ও নীতি আয়োগের শ্রমিক বিরোধী সুপারিশগুলিকে রূপ দিতে। কোনো সন্দেহ নেই কেন্দ্রীয় সরকার রেল শিল্প ও পরিষেবাকে ধ্বংস করতে চাইছে, যা লক্ষ লক্ষ মানুষের দূর্দশা ডেকে আনবে।
রেল কর্মীদের ঐ প্রতিবাদী কর্মসূচীতে সংহতি জানাতে সামিল হয় দিল্লী পরিবহণ শ্রমিকদের ঐক্য কেন্দ্র, নির্মাণ শ্রমিক ও গৃহ পরিচারিকাদের ইউনিয়ন এবং সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন বিভাগীয় প্রতিনিধিত্বকারি সাথী ও বন্ধুরা।