খবরা-খবর
রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে অচল অবস্থার অবসান চিকিৎসকদের একতাকে এআইপিএফ-এর অভিনন্দন

কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ জুন রাতে মৃতের পরিজনের নামে কিছু দুষ্কৃতিকারীর আক্রমণে ডাঃ পরিবহ মুখার্জি মারাত্মকভাবে আহত হন। তাঁর মাথার খুলিতে পাথরের কুচি ঢুকে যায় যা পরবর্তী কালে অস্ত্রপ্রচার করে ঠিক করতে হয়েছে। চিকিৎসকদের উপর এই হামলার প্রতিবাদেই সারা রাজ্য জুড়ে সরকারি হাসপাতালের সমস্ত জুনিয়র ডাক্তার কর্মবিরতি শুরু করেন। এনআরএস-র ধর্নামঞ্চ থেকে হাসপাতালের পরিকাঠামোর উন্নতি এবং চিকিৎসকদের উপর হামলা বন্ধ করার নিশ্চিত পদক্ষেপের দাবি জানানো হয়। আন্দোলনকারি জুনিয়র ডাক্তারগণ মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিরও দাবি রাখে। সারা ভারত জনমঞ্চ অর্থাৎ এআইপিএফ শুরু থেকেই ডাক্তারদের আন্দোলনের প্রতি পুর্ণ সমর্থন জানিয়ে চারটি বিষয়কে সামনে নিয়ে আসে

 ১) ডাক্তারদের হুমকি নয়, বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি চাই। ২) ডাক্তার স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। ৩) ডাক্তার-রোগীর পরিবারের মধ্যে বৈরি সম্পর্ক সৃষ্টি করার চক্রান্ত ব্যর্থ করুন। ৪) চিকিৎসা পরিষেবা বজায় রেখে আন্দোলন জারি থাকুক।

এসএসকেএম হাসপাতালে আন্দোলনরত ডাক্তারদের তিরস্কার, হুমকি দিয়ে উদ্ধত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যখন পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে নিয়ে গেলেন, এআইপিএফএনআরএস হাসপাতালের ২নং গেটে ১৪ জুন এক গণ কনভেনশনের আয়োজন করে। এখানে বক্তব্য রাখেন এআইপিএফ-এর জাতীয় প্রচার সমিতির অন্যতম সদস্য ডাঃ বিনায়ক সেন, ডাঃ সঞ্জীব মুখার্জি, ডাঃ নীলাদ্রি শেখর পাল, ডাঃ শান্তসবুজ দাস, ডাঃ ঘোষাল, ফোরাম ফর পিপলস হেলথ-এর রাজ্য সম্পাদক ডাঃ দেবাশীষ মুখার্জি, পিইউসিএল-এর সম্পাদক অম্লান ভট্টাচার্য, এআইপিএফ-এর রাজ্য কনভেনর ডঃ তুষার চক্রবর্তী এবং বিশিষ্ট কবি মন্দাক্রান্তা সেন। সমগ্র কনভেনশনটি পরিচালনা করেন জাতীয় পরিষদ সদস্য আইনজীবী দিবাকর ভট্টাচার্য।

ডাক্তারদের এই আন্দোলনে অনেক সিনিয়র ডাক্তার প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন জানান। সমস্যা দ্রুত নিরসনে কলকাতার বেশ কয়েকজন অগ্রণী চিকিৎসকের উদ্যোগ নেওয়া অবশ্যই অভিনন্দন যোগ্য। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন, সুশীল সমাজের সদস্যদের পথে নামায় সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হল। মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তারদের মুখোমুখি বসে চুক্তি হল। নিরাপত্তার বিষয় ছাড়াও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোন আলোচনায় এবার থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিত্ব রাখারও প্রতিশ্রুতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই আন্দোলনে ধর্মীয় রঙ লাগানোর চেষ্টা হয়েছিল কিন্তু চিকিৎসক এবং ছাত্রদের সচেতনতার ফলে সে অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়। রাজ্যের বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিষয়ে এআইপিএফ শীঘ্রই রাজ্য স্তরে কনভেনশনের উদ্যোগ নেবে।

খণ্ড-26