সারা ভারত কিষাণ সংঘর্ষ সমিতির (এআইকেএসএসসি) উদ্যোগে মন্দসৌর কৃষক হত্যার দ্বিতীয় বার্ষিকীতে শহীদ কৃষকদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌর জেলার টাকারাওয়াদ গ্রামে ৬ জুন সংঘর্ষ সমিতির চেয়ারম্যান বলরাম পাতিদারের পরিচালনায় হাজার হাজার কৃষক সমবেত হয়ে শহীদ কৃষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। বলরাম পাতিদার হলেন এক শহীদ কৃষকের কাকা।
কৃষক হত্যার দ্বিতীয় বার্ষিকীতে সারা দেশের প্রায় ২০৮টি কৃষক সংগঠন কৃষকদের উপরে চাপানো মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং হত্যায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারির দাবি জানান। মন্দসৌরে শহীদ কৃষকদের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের আকাঙ্খাও প্রকাশ করা হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর একটি ট্যুইট করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে এআইকেএসএসসি-র আহ্বায়ক এবং রাষ্ট্রীয় কিসান মজদুর সংগঠনের সভাপতি ও প্রাক্তন বিধায়ক সর্দার ভি এম সিং বলেন, ‘‘কৃষক সংগঠনগুলি প্রধানমন্ত্রীকেও কৃষকদের ইস্যুগুলিতে বক্তব্য রাখতে বাধ্য করেছে। আর ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইটের মধ্যে দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন যেটা আদৌ কার্যকরী বা সহায়ক নয়। আমরা কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ সংগঠন গড়ে তুলেছি, এই সংগঠনের কাছে সরকারগুলিকে নত হতে এবং কৃষকদের দাবিগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে।’’
এআইকেএসএসসি-র কার্যনির্বাহি সভাপতি এবং প্রাক্তন বিধায়ক সুনিলম বলেন, মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস সরকারের দিন ঘনিয়ে এসেছে। তিনি তাঁর বক্তব্যে জানান, ‘‘এই সরকার গঠনে কৃষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এবং সেই কারণে কংগ্রেস সরকারকে কৃষকদের দাবিগুলো অবিলম্বে পূরণ করতে হবে। ট্যুইট না করে মুখ্যমন্ত্রীর উচিৎ মন্দসৌরে গিয়ে শহীদ কৃষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা এবং আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়া।’’
প্রাক্তন সাংসদ এবং মহারাষ্ট্রের কৃষক নেতা রাজু শেট্টি বলেন, কৃষকদের দাবিগুলোর প্রতি আশ্বাস আর যথেষ্ট নয়। তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘‘মহারাষ্ট্রের স্বভিমানি সন্তকারী সংগঠন যদি সরকারকে আখ ও দুধের দাম বাড়াতে বাধ্য করতে পারে তবে সরকার মধ্যপ্রদেশের কৃষকদের প্রতি সুবিচারও করতে পারে।’’ তিনি জানান, কৃষকদের দাবিগুলো পূরণ করা না হলে কৃষকরা মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির বাইরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংগঠিত করবেন।
জাতীয় মোর্চার জাতীয় সাধারণ সম্পাদক রাজারাম সিং বলেন, ‘‘সরকার যেহেতু আমাদের দাবিতে কর্ণপাত করছে না, আমাদের আন্দোলন তাই অব্যাহত থাকবে।’’ এই মোর্চার জাতীয় আহ্বায়ক মধুরেশ বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলন নিপীড়ন শোষণ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে, তা নর্মদা, মন্দসৌর বা তুতিকোরিন যেখানেই সংঘটিত হোক না কেন। আমাদের লক্ষ্য বর্তমান ব্যবস্থাটাকে পাল্টানো।’’
বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের বক্তারাও সেদিনের সভায় বক্তব্য রাখেন। সভায় উপস্থিত সকলে বুধা গাঁওয়া শহীদদের স্মৃতিতে নির্মিত মূর্তিগুলিতেও মালা দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।