মুখে শ্লোগান নিয়ে টানা সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলো ওরা, সাইকেলের প্যাডেলে প্রতিটা চাপে মিশে যাচ্ছে প্রবীণ রতনদা আর আর ক্লাস টুয়েলভের রাহুলের বয়সের ব্যবধান; ক্লান্তিহীন, দুর্দম আবেগে ভরপুর, চোখে মুখে ফুটে ওঠা প্রত্যয়, সাইকেল চালাচ্ছিলো ওরা। যে টোটোগুলো নেওয়া হয়েছিলো বয়স্ক কমরেডদের জন্য, তাদের হুমকি দিয়েছে কোন প্রচারে গেলে স্ট্যান্ডে বসতে দেবেনা; তবু ওরা টোটো নিয়ে সামিল হয়েছিলো র্যালিতে। ৮-৯ জানুয়ারি ধর্মঘট—১৮০০০ টাকা বেতন, ৬০০০ টাকা পেনশনের দাবীতে গলা মেলাচ্ছে সকলে। মিছিল চলছে—বেলুড় বাজারে ম্যাটাডোর থেকে নেমে একটা দোকান থেকে সিগারেট কিনছি, র্যালি বেশ কিছুটা এগিয়ে গেছে হিন্দিভাষী দোকানি বললো ‘অব তো মোদি গ্যায়া, যানা হি চাহিয়ে’। বাড়ির সমস্যা, মাঠে প্র্যাকটিস ছিলো তবু সব ছেড়ে মিছিলে সামিল ক্লাশ টেনের মোমেন আলি। আগের দিন সারা রাত জেগে মিলিলের প্রস্তুতি করা তীর্থ, রাতুল, শুভদীপরা এক অদ্ভূত প্রাণ শক্তিতে সাইকেল চালিয়ে গেল বালি থেকে বার্ণ পর্যন্ত। নির্মাণ শ্রমিক কমরেড সুষমা দাস, একমুখ হাসি নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছিলেন সাইকেল, কোন শ্রান্তি নেই, আছে শুধু অটুট প্রত্যয়। দেশজোড়া সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে এই সাইকেল মিছিলের আয়োজন করেছিলো এ আই সি সি টি ইউ, আইসা, আইপোয়া, আয়ারলা, আর ওয়াই এ, এ আই কে এম হাওড়া জেলা কমিটি। বালি জুটমিল থেকে মিছিলের উদ্বোধন করেন এ আই সি সি টি ইউ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক অতনু চক্রবর্তী। বালির বিভিন্ন এলাকাসহ বেলুড়-ঘুসুড়ি-সালকিয়ার ক্ষুদ্র শিল্পাঞ্চল পরিক্রমা করে মিছিল বার্ণ স্ট্যান্ডার্ড হয়ে ফাঁসিতলা মোড়ে শেষ হয়। এই মিছিল কমরেডদের উৎসাহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ৮-৯-এর ধর্মঘট সর্বাত্মক করার লক্ষ্যে।