বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, যুব সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন এবং নাগরিক সমাজের সদস্যরা গত ১৪ জানুয়ারি যন্তর মন্তরে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রত্যাহার এবং হীরেন গোঁহাই, অখিল গগৈ, মনজিত মহন্ত ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আনা দেশদ্রোহের অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবিতে এক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সংগঠিত করে। এ আই এস এ, আর ওয়াই এ, এ আই পি এফ, এ আই সি সি টি ইউ, ইউনাইটেড এগেনস্ট হেট, সি পি আই (এম এল)-এর মত সংগঠন এবং অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ প্রতিবাদে অংশ নেয়। আর ওয়াই এ-র সাধারণ সম্পাদক নীরজ কুমার বিক্ষোভ সভা পরিচালনা করেন। দিল্লী এ আই এস এ-র সভাপতি কাওয়ালপ্রীত কউর তাঁর ভাষণে বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আমাদের দেশের ধর্মনিরপেক্ষ বুনটের প্রতি এক আঘাত। এই বিল ধর্মকে নাগরিকত্ব প্রদানের ভিত্তি করেছে। এটা স্পষ্টতই আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের লঙ্ঘন।’’ এ আই পি এফ-এর সদস্য বরিষ্ঠ সাংবাদিক কিরণ সাহীন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘‘হীরেন গোঁহাই, অখিল গগৈ সমাজ আন্দোলনের সুপরিচিত কর্মী ও পণ্ডিত ব্যক্তিত্ব, এটা অত্যন্ত লজ্জার যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য বিজেপি সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ এনেছে। নাগরিকত্বর ভিত্তিকে পরিবর্তন করাই এই বিলের লক্ষ্য হওয়ায় তা আর শুধু আসাম বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিষয় নয়, গোটা দেশকেই তা আঘাত দেবে।’’ সি পি আই (এম এল)-এর দিল্লী রাজ্য সম্পাদক রবি রাই বিজেপির অভিপ্রায়কে ধিক্কার জানিয়ে বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করিয়ে বিজেপি তার অভিপ্রায়কে সুস্পষ্ট করে দিয়েছে। ধর্মকেই নাগরিকত্বের ভিত্তি করা এবং মুসলিমদের তার আওতা থেকে বাদ দেওয়ার মধ্যে দিয়ে ঐ বিল হল হিন্দু রাষ্ট্রকেই বৈধ করে তোলার এক প্রয়াস। আজ আসাম জ্বলছে, কিন্তু সেখানে যা ঘটছে তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কোন মাথাব্যথা নেই, সে বরং বিলের বিরোধিতাকারীদের গ্রেপ্তার করতেই ব্যস্ত। বিজেপি যাতে সারা দেশেই প্রতিবাদের মুখে পড়ে সেই চেষ্টাই আমরা করব এবং মোদী সরকারের ব্যর্থতা থেকে জনগণের দৃষ্টিকে ঘোরাতে তাকে আমরা দেব না। আমরা দাবি জানাচ্ছি, এই সংশোধনী এবং বরিষ্ঠ নাগরিকদের বিরুদ্ধে আনা দেশদ্রোহের অভিযোগ প্রত্যাহার করা হোক।’’