নিজস্ব সংবাদদাতা: বারাসাত: যশোর রোডের ৩৫৬ টি গাছ কাটার সুপ্রিম কোর্টের অনুমতিতে অখুশি পরিবেশ কর্মীরা। রেলওয়ে ওভার ব্রিজ তৈরির প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্ট শতাব্দী প্রাচীন গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে সম্প্রতি। রায়ের বিশ্লেষণ ও আগামী কর্মসূচি ঠিক করে নিতে গত ৫ মার্চ বারাসতের যুগল ভবনে যশোর রোড গাছ বাঁচাও কমিটির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বারাসত এপিডিআর ২০১৫ সাল থেকে ঐতিহাসিক যশোর রোডের গাছ বাঁচানোর দাবী তুলতে শুরু করে। এরপর ২০১৭ থেকে মুলত ছাত্র যুব সমন্বয়ে গড়ে ওঠা প্রতিবাদ পথে নামে। শতাব্দী প্রাচীন গাছ বাঁচানোর জন্য লাগাতার লড়াই আন্দোলন গড়ে ওঠে। কলকাতা হাইকোর্ট গাছ কাটায় স্থগিতাদেশের রায় দেয়। আন্দোলনকারীদের মত, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর যে হতাশা তৈরি হয়েছিল জনমানসে, বারাসাতের সভা তার বিরুদ্ধে মুখর হতে অক্সিজেন যোগালো। সভার শুরুতে আন্দোলনকারীদের পক্ষে আন্দোলনের ঘটনা ক্রম তুলে ধরা হয়। কেমনভাবে পুলিশ ও স্থানীয় মস্তান বাহীনি এবং কাঠ-মাফিয়াদের বিরুদ্ধে পথে নেমে মানুষ শতাব্দী প্রাচীন গাছগুলিকে রক্ষা করে এসেছিলেন। এরপর সভায় উপস্থিত বিভিন্ন পরিবেশ ও অধিকার আন্দোলনের কর্মী নেতৃত্ব একে একে এই বিশ্লেষণ ও শতাব্দী প্রাচীন গাছ বাঁচিয়ে রাখতে মত দেন। ভারতীয় সংবিধান ও বিশ্ব জুড়ে পরিবেশ বর্তমান সমস্যার কথা উল্লেখ করে আন্দোলন জোরদার করার উৎসাহ দেন। এবং আগামীদিনে বিভিন্ন আন্দোলনের কর্মীরা শতাব্দী প্রাচীন গাছ বাঁচাতে সক্রিয় ভূমিকায় থাকবেন সেই অঙ্গিকার করেন। আন্তর্জাতিক সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে উঠে আসে বিকল্প পথের কথা। প্রশ্ন ওঠে আন্তর্জাতিক সীমান্তে অত্যধিক গাড়ির চলাচল যেখানে সেখানে দিন-রাত কেন সীমান্ত খোলা থাকবে না? যেমনটা অন্যত্র হয়ে থাকে। কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষজ্ঞ কমিটি যে গাছগুলিকে হেরিটেজ বলে উল্লেখ করেছেন সেই গাছ কাটার অনুমতিতে সুপ্রিম কোর্টের সংবেদনশীলতার সঙ্গে বিচার করার অবকাশ ছিল। সভায় বিভিন্ন কর্মসূচির প্রস্তাব আসে। বিভিন্ন আন্দোলনের কর্মী ও পরিবেশ সংবেদী মানুষের কাছে ঐতিহ্য মন্ডিত এইসব গাছ ও পথ দেখতে আসার আহ্বান জানানো হবে। ভারতের গাছ বাঁচানোর আন্দোলনের অন্যতম, ‘চিপকো আন্দোলন দিবস’ পালিত হয়ে আসছে ২৬ মার্চ। তাকে স্মরণ করে কলকাতাতে সাংবাদিক সম্মেলন ও মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ঐদিনের সাধারণ সভায়।