উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গ নিয়ে যাই বিতর্ক চলুক এত বড় শ্রমনিবিড় চা শিল্পে শ্রমিকদের আন্দোলনের খবর সংবাদপত্রগুলিতে জায়গা পায় না। এটাই সত্য।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি চা শিল্পে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নের যুক্ত মঞ্চ বৈঠক করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চা বাগানে শ্রমিকদের আবাসস্থল লিজ হোল্ডের বদলে ফ্রি হোল্ড জমির নামে রাজ্য সরকার কর্পোরেটদের স্বার্থে লুঠেরাতে পরিণত হচ্ছে। টি-ট্যুরিজম আইনের বলে সরকারের জমি হরণের অপচেষ্টাকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করা হবে। গত ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ দার্জিলিঙে, ১১ ফেব্রুয়ারি তরাইয়ের বাগডোগরায় ও ১২ ফেব্রুয়ারি চালসায় চা শ্রমিকদের কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। এই কনভেনশনগুলিতে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে, ন্যুনতম মজুরি চালু, চা শ্রমিকদের বসত জমির পাট্টার দীর্ঘস্থায়ী কর্মসূচি ঘোষিত হয়। এই সফল কনভেনশনগুলির ফোরামের নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন ২ মার্চ ২০২৩ শিলিগুড়িতে মিত্র সম্মিলনী হলে পাহাড়-তরাই-ডুয়ার্স মিলিয়ে কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। গত ২ মার্চ কনভেনশন থেকে সিদ্ধান্ত হয় ১৪ মার্চ ২০২৩ সমস্ত বাগানের গেটে সভা ও ডেপুটেশন প্রদান হবে। ১৪ মার্চ ২০২৩ পাহাড়-তরাই-ডুয়ার্সে বাগানগুলির গেট মিটিং ও ডেপুটেশন প্রদান হয়।
বর্তমান রাজ্য সরকার চা সুন্দরী প্রকল্পের নামে শ্রমিকদেরকে বিচ্ছিন্ন করে বা উৎখাত করে কর্পোরেটদের হাতে জমি তুলে দিতে চায়। ২০১৪ সাল থেকে ন্যুনতম মজুরি নিয়ে বহু বৈঠকের পরও রাজ্য সরকার মালিকপক্ষের সাথে আঁতাত করে ন্যুনতম মজুরি কার্যকরী করতে অনিচ্ছুক। ট্রেড ইউনিয়নের সমস্ত ত্রি-পাক্ষিক বৈঠক এড়িয়ে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মালিকদের কাছে অবনত হয়ে মাত্র ১০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির কথা একতরফা ঘোষণা করেন।
চা শ্রমিকদের মধ্যে সম্প্রদায়গত ভাগাভাগির বিরুদ্ধে পাহাড় থেকে সমতল রাজ্য সরকারের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শ্রমিকরা আজ এককাট্টা। আগামী ১৪ এপ্রিল ২০২৩ জয়েন্ট ফোরামের নেতৃত্বে চা বাগান অধ্যুষিত সমস্ত ব্লকে জমির পাট্টার দাবিতে বিএলআরও দপ্তর ঘেরাও করা হবে। এই প্রস্তুতিতেই উত্তরবঙ্গ জুড়ে চা শ্রমিকদের একটাই আওয়াজ “চা মজদুরকো ন্যুনতম মজুরি দেনা হোগা, জমিন কা পাট্টা দেনা হোগা, সরকার আউর বাগান মালিক হোশ মে আও, কালা সাজিস বন্ধ করো”।