সময় দ্রুত পাল্টে চলেছে। কিন্তু চলমান সময়ে তা পুরো বোঝা যায় না। পরিবর্তনের নকশাতেও থাকে অনেক খামতি, আসে হুমকি। নারীদের কথাই বলছি। বাস্তবিকই এ এক কঠিন যুদ্ধ। প্রতিদিনের। সব সহনশীলতারও একটি মাপকাঠি থাকে। সেটাও বোধ হয় পেরিয়ে যেতে হয় এক নারীকে!
ভোর থেকে রাত্রির বিছানা পর্যন্ত এক লম্বা লড়াই। সেই পিতৃ-অঙ্গন থেকে শ্বশুর-অঙ্গনের আলিঙ্গনে এসে কেমন যেন বদলে যেতে থাকে এক একটি নারীর জীবন। আগুনের আঁচের উত্তাপে সেও পুড়তে থাকে, খোলা আকাশ বন্দি হয়, রোদ্দুরের সাথে আড়ি, শুধু একটি নদীর স্রোত ভেসে চলে দুটি চোখের পাতায়। সত্যি কি নারীরা স্বাধীন!
আজ জীবিকার তাগিদে মহিলাদের বাইরে বেরিয়ে আসতে হয়েছে কল-কারখানায়, সরকারি অফিসে, অসংগঠিত শ্রমিক বা পরিচারিকার কাজে। তারপরেও শুনতে হয় নোংরা ভাষা, “এতো দেরি করে বাড়ি ফের কেন, কোনো আউট ইনকাম আছে নাকি” ইত্যাদি। অথচ এই নারীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে করে সংসারের সিংহভাগ খরচ বহন করে চলে। গৃহ পরিচারিকাদের মধ্যেও কেউ অসুস্থ হয়ে দু’চার দিন কাজে না যেতে পারলে, কাজ থেকে ছাঁটাই করে আরো একটু কম টাকায় কাজের লোক খুঁজে নেয় মধ্যবিত্ত গৃহস্থ। কোভিডের পর ওরা যেন আরও অসহায়। কাজের সুযোগ কমে গেছে। তাই পারিশ্রমিক আরও কমে গেছে। ঘর থেকে তাই বেরোনোর সাহস ও উৎসাহও কমে গেছে।
বেখোফ আজাদি কিংবা নারী স্বাধীনতার কথা আমরা বলি, সত্যিই কি নারীরা স্বাধীন! অনেক সময় দেখেছি, অদম্য ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেয়েরা পায়ের শিকল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে পারে না। তাই নারীদেরকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে নারীদেরই। শেখাতে হবে জোট বাঁধতে। সামাজে, পরিবারে সব শোষণের বিরুদ্ধে আরো বেশি করে সামিল করতে হবে। নারী-পুরুষের মধ্যে সুন্দর বোঝাপড়া, সুগম পথের দিশায় এগিয়ে চলার কথাই বলতে হবে। তবেই প্রগতিশীল কথাটির অর্থ বাস্তবিকই গতিময় হয়ে উঠবে।
- মীরা চতুর্বেদী