সমুদ্রপথে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা গত ৫ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে কার্যকর হয়েছে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ার পেছনে এটিকে একটি কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। ‘দ্য ইকোনমিস্ট’এর এমন একটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করে রুশ বার্তা সংস্থা ‘রাশিয়া টুডে’র এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
সমুদ্রপথে রাশিয়ার আমদানি করা তেলের প্রতি ব্যারেলের দাম ৬০ ডলার বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদন বলছে, বিশ্ববাজারে রাশিয়ার তেলের দাম বাড়লে পশ্চিমা ভোক্তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বৈশ্বিক বাজারে প্রভাব বজায় রাখতে গিয়েও সমস্যার সম্মুখীন হবে পশ্চিমারা।
ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর থেকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মস্কোকে চাপে ফেলার চেষ্টায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্ররা। সেই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার ২ ডিসেম্বর রাশিয়ার জ্বালানি তেলের দাম বেঁধে দেওয়া হল। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে এই প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও জাপান নিয়ে গঠিত জোট জি-৭ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
রুশ তেলের দাম বেঁধে দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, এরই মধ্যে রাশিয়ার অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে। দেশটির জাতীয় বাজেটও আকারে ছোট হয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে তেলের দাম বেঁধে দেওয়ায় পুতিনের আয়ের সবচেয়ে বড় খাতটি ধাক্কা খাবে। জি-৭, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়ার এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তেল বিক্রির আয় দিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছেন পুতিন। সেই পথ এবার অনেকটা বন্ধ হবে। তবে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তেলের মূল্য পশ্চিমারা বেঁধে দিলেও সংকট কাটাতে রাশিয়া তার তেলের জন্য ক্রেতাদের সন্ধান চালিয়ে যাবে।
৫ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে রাশিয়ার ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন একটি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে যাচ্ছে। সেদিন থেকে এই জোটের কোনো দেশ সমুদ্রপথে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে না। একই সময়ে নতুন করে দাম বেঁধে দেওয়ার অর্থ হলো, ইউরোপের বাইরে অন্য দেশগুলোতেও রাশিয়ার তেল রপ্তানিকে সমস্যার মুখে ফেলা।
এখন থেকে পশ্চিমাদের বেঁধে দেওয়া দামের সঙ্গে একমত দেশগুলোকে সমুদ্রপথে রাশিয়ার তেল কেনার ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলার বা এর কম দাম পরিশোধ করতে হবে। অন্যদিকে যেসব দেশ এই প্রস্তাব মানবে না, সেসব দেশে রুশ তেল সরবরাহকারী জাহাজগুলোকে বিমা সুবিধা দেবে না ইউক্রেনের মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো।
তবে রাশিয়া কিন্তু আগে থেকেই ভারত ও চীনের কাছে কম দামে তেল বিক্রি করছে। বর্তমানে এই দুই দেশ তাদের তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। তাই দাম বেঁধে দেওয়া রাশিয়ার ওপর চরম কোনো আঘাত হানবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাশিয়ার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ লিওনিড স্লুতস্কি বলেছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পশ্চিমারাই নিজেদের জ্বালানি নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের অর্ধেকের বেশি কিনত ইউরোপের দেশগুলো। সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল যথাক্রমে জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও পোল্যান্ড। তবে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রুশ তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে দেশগুলো। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র রুশ তেলের আমদানি বন্ধ করেছে। আর যুক্তরাজ্য এই বছরের শেষ নাগাদ রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করবে বলে জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইউক্রেনের চাওয়া ছিল, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৩০ থেকে ৪০ ডলারে বেঁধে দেবে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার প্রস্তাব অনেকটাই মেনে নিয়েছে। পুতিনের চাওয়া ছিল, ৬০ ডলারেই তেল কিনবে পশ্চিমারা। সেই ৬০ ডলারে তেল কেনার ব্যাপারে একমত পশ্চিমারা।
৫ ডিসেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের আগেই একটা ঐকমত্যে পৌঁছানো ইউরোপের জন্য বেশ জরুরি ছিল। কারণ, যেসব জাহাজ রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল পরিবহন করবে, তাদের ক্ষেত্রে বিমা প্রযোজ্য হবে না। এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে চীন, ভারতসহ আর যেসব দেশ রাশিয়া থেকে তেল কিনছে, তারা বিপাকে পড়বে। কারণ, জাহাজের অধিকাংশ বিমাকারী ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক।
আরটির প্রতিবেদনে এই দাম বেঁধে দেওয়াকে জ্বালানির বাজারে শক্তিশালী ধাক্কা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। তেলের ট্যাংকারগুলোর ৯৫ শতাংশ ইনস্যুরেন্স যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ করে। রাশিয়ার তেল বিক্রি নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি পশ্চিমাদের একটি কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।
যদি রাশিয়ার তেল বাজারে জায়গা করে নিতে না পারে, তাহলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তে পারে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পশ্চিমা ভোক্তারা।
ইকোনমিস্টের খবর বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ শুরু থেকেই রাশিয়ার তেলের বাজার নিয়ে ছক কষছে। ইউরোপীয় সংস্থাগুলোকে সুবিধা দিতে পশ্চিমারা রাশিয়াকে তেল কেনাবেচায় দর বেঁধে দিয়েছে।
ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন বলছে, পশ্চিমাদের তেলের দর বেঁধে দেওয়ায় রাশিয়া কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দর বেঁধে দেওয়ায় ক্রেমলিন তেল রপ্তানি কমিয়ে আনতে পারে। যারা পশ্চিমা নয়, সেসব ট্যাংকার ও ইনস্যুরারদের ওপর নির্ভরতা বাড়াতে পারে। এতে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তে পারে।
আরেকটি অনিশ্চয়তা হলো, বৈশ্বিক তেলের বাজারে পশ্চিমারা কতটা প্রভাব বজায় রাখবে।
ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন বলছে চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও বিধিনিষেধ এড়িয়ে চলতে চায়। এই দেশগুলো প্রতিনিয়ত ইনস্যুরেন্সের বিকল্প উৎসগুলো খুঁজছে। কারণ, ছ’মাস আগে এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়। আর নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়ার মতো সময় এখনো আছে।
ইকোনমিস্ট বলছে, পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার পর তেলের বাজার কতটা ভারসাম্যপূর্ণ থাকবে, তা ৫ ডিসেম্বরের পরের কয়েক দিনে বোঝা যাবে। কারণ, এ সময়ে তেলের দাম অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে।
এ ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পশ্চিমাদের ব্যাংকিং–ব্যবস্থাকে এড়িয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা শক্তিশালী করেছে। এতে পশ্চিমাদের জ্বালানি অবকাঠামো এড়িয়ে গিয়ে চীন ও ভারত নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পাবে।
বিশ্বজুড়ে রাশিয়ার তেল সরবরাহে নিযুক্ত জাহাজগুলোর বিমা ও অর্থায়নকারী ইইউ’র কোম্পানিগুলো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। তবে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহকৃত রাশিয়ার তেলের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা নেই।
আল-জাজিরায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) তথ্যানুযায়ী, রাশিয়া থেকে ইইউ দিনে ২২ লাখ ব্যারেল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল আমদানি করে থাকে। এরমধ্যে পাইপলাইন দিয়ে প্রতিদিন সাত লাখ ব্যারেল তেল সরবরাহ হয়। পাশাপাশি দিনে ১২ লাখ ব্যারেল পরিশোধিত জ্বালানি পণ্যও সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আইইএ আরও বলেছে, প্রতিদিন ১০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল এবং ১১ লাখ ব্যারেল জ্বালানি পণ্যের জন্য ইইউ’কে এখন বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।
ওই প্রতিবেদনে ইউরোপিয়ান পলিসি সেন্টারের জ্বালানি নীতিমালা বিষয়ক বিশ্লেষক ফিলিপ লসবার্গ একই রকমের কথাই বলেছেন। তিনি মনে করেন, তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে তেলের মূল্যের ওপর। তেলের দাম বেড়ে যাবে। যেদিন রাশিয়ার তেলের দাম বেঁধে দেওয়া হয়, সেদিনই বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য দুই শতাংশ বেড়েছে।
তেলের মূল্য বেঁধে দেওয়ার প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৬৪ সালে চালু হওয়া দ্রুজবা তেল পাইপলাইন দিয়ে জার্মানি, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, অস্ট্রিয়াসহ ইউরোপের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলীয় অনেক দেশে রাশিয়ার তেল সরবরাহ করা হয়ে থাকে। জার্মানি, পোল্যান্ড ও অস্ট্রিয়া ইতিমধ্যে এ নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন দিয়েছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে দেশগুলো।
হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভাকিয়া ও বুলগেরিয়া এখনো রাশিয়ার পাইপলাইনে সরবরাহকৃত তেলের ওপর নির্ভরশীল। বিকল্প ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এসব দেশকে সাময়িকভাবে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি করতে দেওয়া হবে। ইউরোপীয় কমিশনের বক্তব্য অনুযায়ী, পাইপলাইনের মাধ্যমে আমদানি করা এসব তেল ইইউ’ভুক্ত দেশ কিংবা ইইউ’র বাইরের দেশে আবার বিক্রি করা যাবে না।
ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর আগে ২৭ সদস্যের এই জোট রাশিয়ার তেলের ওপর প্রচণ্ড রকমে নির্ভরশীল ছিল। ২০২১ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৭ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার মূল্যের অপরিশোধিত তেল ও পরিশোধিত জ্বালানি পণ্য আমদানি করেছিল।
মাৎস কুভেলিয়ার বলেন, ছ’মাস ধরে এ বিধি নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো তেল সরবরাহের বিকল্প পথ খুঁজে বের করার মতো যথেষ্ট সময় পেয়েছে। ইউরোপিয়ান পলিসি সেন্টারের জ্বালানি নীতিমালা বিষয়ক বিশ্লেষক ফিলিপ লসবার্গ একই রকমের কথাই বলেছেন। তিনি মনে করেন, তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে তেলের মূল্যের ওপর। তেলের দাম বেড়ে যাবে। আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, ব্রেন্ট তেল অনেক ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে। এরজন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে প্রস্তুত থাকতে হবে। যেদিন রাশিয়ার তেলের দাম বেঁধে দেওয়া হয়, সেদিনই বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য ২ শতাংশ বেড়েছে। তবে লসবার্গ বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতির ধীরগতি আসন্ন মাসগুলোতে আন্তর্জাতিকভাবে তেলের চাহিদা কমিয়ে দেবে। এতে আরও একবার তেলের দাম কমবে। তেলের দাম বেঁধে দেওয়া ও তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে কোম্পানিগুলো সমুদ্রপথে রাশিয়ার তেল তৃতীয় কোনো দেশে পৌঁছে দিতে বিমা ও অর্থায়ন করত, তারাও বাধার মুখে পড়বে। ইউরোপিয়ান পলিসি সেন্টারের জ্বালানি নীতিমালা বিষয়ক বিশ্লেষক ফিলিপ লসবার্গ মনে করেন, এতে বিশ্বের বাকি দেশগুলোতে অপরিশোধিত তেল ও জ্বালানি পণ্য রপ্তানি অব্যাহত রাখাটা রাশিয়ার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।
ভারত, চীন ও অন্য দেশগুলোর অনেক জাহাজেরই ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলোতে বিমা করা। এসব জাহাজকে এখন ইইউ, জি-৭ ও অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে তৈরি বিধিগুলো মেনে চলতে হবে।
যদিও রাশিয়া বলছে, তাদের প্রচলিত আইন অনুযায়ী এ বিধিগুলো স্বীকৃতি পায় না। এই নতুন বিধিগুলোর আওতায় এসব দেশে ক্রেমলিন কীভাবে তেল রপ্তানি অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা করছে, তা এখন দেখার বিষয় বলে মনে করছেন লসবার্গ। আইইএ বলছে, সমুদ্রপথে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানির ওপর ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে আগামী বছর রাশিয়ার তেল রপ্তানির পরিমাণ দিনে ১৪ লাখ ব্যারেল কমে যেতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্রাসেলসভিত্তিক আইনজীবী মাৎস কুভেলিয়ার মনে করেন, রুশ জাহাজগুলো মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ বা লাইবেরিয়ার সঙ্গে নিবন্ধিত হয়ে কিংবা রাশিয়ার পতাকা সরিয়ে ফেলে এসব নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর চেষ্টা করতে পারে। তবে এ ধরনের পরিস্থিতি যেন না হতে পারে, তা নিশ্চিত করতে ইইউ সমুদ্রসীমায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
ভারত, চীন ও তুরস্কের মতো দেশগুলো রাশিয়ার তেলের ওপর নির্ভরশীল। এসব দেশ মস্কোর কাছ থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখবে। নয়া দিল্লী ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ফেলো বিবেক মিশ্র আল-জাজিরাকে বলেন, ভারত ও চীনের মতো বড় ক্রেতা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়া আলোচনা চালাতে পারে এবং মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা চালু করতে পারে। তবে বিবেক মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে ইউরোপ থেকে রাশিয়া যে রাজস্ব পেত, তা পূরণ করা যাবে না ঠিকই, তবে তা মস্কোর অর্থনৈতিক মন্থরতায় কিছুটা হলেও গতি জোগাবে। বিবেক আরও বলেন, “আমি মনে করি, রাশিয়ার তেলের বড় ক্রেতা হিসেবে ভারতের খুব বেশি একটা ক্ষতি হবে না। রাশিয়া ও ভারত দুই পক্ষের বিবৃতি খেয়াল করলে আমরা দেখি, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখবে।”
(লেখাটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তৈরি।)