ভারতবর্ষের স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষে আমরা সশ্রদ্ধ সম্মান জানাচ্ছি সেই সকল স্বাধীনতা সংগ্রামী ও মহান শহীদদের যাঁরা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কব্জা থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করেছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলন ভারতকে সংবিধান স্বীকৃত সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র হিসাবে গঠনের লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে এক সমৃদ্ধ চিন্তাধারা ও লড়াইয়ের উত্তরাধিকার দিয়েছে। আজ আমরা এই সাধারণতন্ত্রের কাঠামো ও সাংবিধানিক ভিত্তির উপর এবং দেশের মিশ্র সংস্কৃতি, সামাজিক বিন্যাস, জনগণের জীবন-জীবিকা আর নাগরিকদের ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর এক অভূতপূর্ব আক্রমণ লক্ষ্য করছি। আমরা আবারও দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের উজ্জ্বল উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এবং সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সার্বভৌম ভারত গঠনের লড়াইকে আরো জোরদার করার শপথ নিচ্ছি।
গত ২ আগস্ট, ২০২২ ভারতের রাষ্ট্রপতি মাননীয়া দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে সিপিআইএমএল লিবারেশনের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
মহাশয়া,
দেশের স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ উদযাপনের জন্য প্রতিটি বাড়ির ছাদ থেকে তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলনের এক বিশেষ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। আমরা এটাও জেনেছি যে, ডাক ব্যবস্থার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সারা দেশে ২৫ টাকার বিনিময়ে এক একটি পতাকা সংগ্রহ করা যাবে। আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ, মারাত্মক মূল্যবৃদ্ধি ও আর্থিক সংকটে নাজেহাল খেটে খাওয়া মানুষের উপর জাতীয় পতাকা কেনার অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি না করে সরকার নিজে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার মাধ্যমে বিনামূল্যে জাতীয় পতাকা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিক।
মেশিনে তৈরি ও পলিয়েস্টার নির্মিত পতাকা ব্যবহারের ছাড়পত্র দেওয়ার লক্ষ্যে ভারতের পতাকাবিধিতে আনা কিছু সংশোধনীও আমরা লক্ষ্য করেছি। আমরা আশঙ্কা করছি যে, এই উদ্যোগ বিশাল পরিমাণ আমদানিকৃত পতাকা দেশে ঢোকার পথ প্রশস্ত করবে। আমরা আপনাকে এই পতাকাবিধি সংশোধনী ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য এবং হাতে বোনা বা হাতে কাপড় কেটে বানানো পতাকা তৈরির জন্য খাদি ও গ্রামোদ্যোগ নেটওয়ার্কের উপর নির্ভর করার আবেদন জানাচ্ছি, যা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে খাদির ঐতিহাসিক ভূমিকা ও স্বদেশী আন্দোলনের ভাবাবেগের প্রতি বিশেষ সশ্রদ্ধ স্বীকৃতি হয়ে উঠবে।