খবরা-খবর
দ্রৌপদি মুর্মুকে অভিনন্দন জানিয়ে আদিবাসী স্বার্থে উদ্বেগ ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করল বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন
Congratulating Draupadi Murmu

এমন এক সময়ে দেশবাসী একজন আদিবাসী মহিলাকে সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে পেল যখন আদিবাসীদের সংবিধান-স্বীকৃত ও বহু লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে গড়ে তোলা অধিকারগুলিকে দ্রুত কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। মাননীয়া দ্রৌপদি মুর্মুকে অভিনন্দন জানানোর সাথে সাথে আদিবাসীদের অবস্থা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছে যে, তিনি তাঁর হাতে যেটুকু ক্ষমতা আছে তা প্রয়োগ করে আদিবাসীদের ওপর নেমে আসা নানাবিধ প্রাতিষ্ঠানিক হামলাকে রুখতে সচেষ্ট হবেন।

সামনেই আছে নতুন ‘বন সংরক্ষণ আইন ২০২২’। বহু সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে পাস হওয়া ‘বনাধিকার আইন ২০০৬’-কে অকেজো করে দেবে নতুন বন সংরক্ষণ আইন। অরণ্যভূমি ও সম্পদের ওপর আদিবাসী সমাজের স্বাভাবিক অধিকারের স্বীকৃতি অনেকাংশে নাকচ হয়ে যাবে, অরণ্যকেন্দ্রীক আদিবাসী গ্রামের গ্রামসভাকে যে সর্বোচ্চ স্বায়ত্ব ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল সেটাও আর কর্যকর থাকবে না। ফলত কর্পোরেট হাউসগুলো আরও অবাধে উচ্ছেদ করবে আদিবাসী গ্রামগুলিকে। আদিবাসী সংঘর্ষ মোর্চার পক্ষ থেকে মাননীয়া দ্রৌপদি মুর্মুকে অভিনন্দন জানিয়ে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় যে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল থাকাকালীন তিনি সিএনটি ও এসপিটি আইনের সংশোধনীতে সই না করে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে তাঁর হাত দিয়ে কোনও অন্যায় কাজ সম্পন্ন হবে না। কেন্দ্রের আনা নতুন বন সংরক্ষণ আইনসহ সমস্ত আদিবাসী বিরোধী সংশোধনীর ক্ষেত্রেও তাঁর কাছে এই সদর্থক ভূমিকা প্রত্যাশা করা হয়। দ্রৌপদি মুর্মুর সাথে সাক্ষাৎ করে একই দাবি তুলেছেন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের প্রতিনিধিরাও। একই সাথে দাবি করা হয়েছে বনাধিকার আইনকে আরও ব্যাপক ও কঠোরভাবে কার্যকর করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহনের। ৯ আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবসে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবি করা হয়।

উঠে এসেছে সমতলের সমস্ত আদিবাসী- প্রধান এলাকাকে পঞ্চম তপশীলভূক্ত করে ‘পেশা’ আইন লাগু করার দাবি। আসামের কার্বি আদিবাসীদের জন্য সংবিধান স্বীকৃত স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের দাবিও এসেছে। আদিবাসীদের ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রশ্নও উঠে এসেছে। আদিবাসী সংঘর্ষমোর্চার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, হিন্দু ও অন্য সংগঠিত ধর্ম থেকে আদিবাসীদের ধর্ম-সংস্কৃতি আলাদা হওয়া সত্বেও রাষ্ট্রের কাছে তার স্বীকৃতি নাই। অন্যদিকে খ্রিষ্টান মিশনারিদের দিকে আঙুল তুলে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের পরিবেশ তৈরি করা হয়। এই অন্যায়ের অবসান ঘটানোর আবেদন জানানো হয় নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে। আবেদন জানানো হয়েছে আদিবাসীদের জন্য শিক্ষা, জমি, চিকিৎসা ও আবাসনের ন্যুনতম প্রাপ্য সুযোগগুলি নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রপতি যেন সচেষ্ট হন।

খণ্ড-29
সংখ্যা-30