বিবৃতি
না প্রধানমন্ত্রী, ৫ আগস্ট ১৫ আগস্টের সাথে মেলে না, মেলে কেবল ৬ ডিসেম্বরের সঙ্গে
dd

নরেন্দ্র মোদি তার বক্তব্যে তাহলে আপাত বিচ্ছিন্ন বিন্দুগুলিকে এক রেখায় জুড়ে দিলেন। ৫ আগস্টকে এবার ১৫ আগষ্টের সাথে একই বন্ধনিতে রেখে দেওয়া হল! আমাদের প্রজাতন্ত্রের সাংবিধানিক বুনিয়াদ ও কাঠামোর পক্ষে এর থেকে ভয়ানক ক্ষতিকর প্রস্তাবনা আর কী হতে পারে।

১৫ আগস্ট আমাদের সংবিধান ও ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের দিশার সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আর ৫ আগস্ট ২০২০ তো এসেছে ৬ই ডিসেম্বর ১৯৯২-এর কু-কর্মের পথ বেয়ে যে ঘটনাকে ১৯৯৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট ‘জাতীয় লজ্জা’ বলে অভিহিত করেছিল।

এমনকি জমি মালিকানা মামলার শেষতম রায়েও সর্বোচ্চ আদালত ৬ ডিসেম্বরের ধ্বংসকাণ্ডকে অপরাধমূলক কার্য তথা আইন-কানুনের চরম উল্লঙ্ঘন বলেছে, এবং ১৯৪৯ সালে বাটপারি করে মূর্তি বসিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে একটি মসজিদের অপবিত্রকরণের ঘটনা হিসেবে ব্যক্ত করেছে।

সৌধ ধ্বংসের মামলাটি কিন্তু এখনও চালু আছে। ভূমিপূজনকে সরকারী কর্মসূচীতে পরিণত করে নরেন্দ্র মোদি যে কেবলমাত্র ধর্ম থেকে সরকারকে দূরে রাখার ধর্মনিরপেক্ষ ভাবধারা অবমাননা করলেন তা নয়, তিনি ১৯৪৯ থেকে শুরু করে ১৯৯২ পর্যন্ত একগুচ্ছ অপরাধমূলক কাজকে বৈধতাও দিলেন।

এই কাজ সংবিধান বর্ণিত আধুনিক গণতান্ত্রিক ভারতের ধারণাকে প্রকটভাবে নস্যাৎ করে। কিন্তু মোদি দেশের স্বাধীনতার সাথে তাকে একাকার করে দিতে আর জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি হিসেবে অভিহিত করতে চায়।

এতদসত্বেও আগস্ট মাসটা ৯ আগষ্টের ভারত ছাড়ো আন্দোলন আর ১৫ আগস্টের স্বাধীনতা দিবস হিসেবেই স্মরণীয় বরণীয় হয়ে থাকবে। আর, ৫ আগস্ট ২০২০ একাসন পাবে কেবলমাত্র ৬ ডিসেম্বর ১৯৯২-এর সাথে।

খণ্ড-27
সংখ্যা-27