আমাদের পার্টির পুনর্গঠনের স্থপতিদের অন্যতম নেতা তথা বিহারের ভোজপুরের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক কমরেড অরূপ সেনগুপ্ত (দীনা জী) ১৫ এপ্রিল রাতে নাইটিঙ্গেল হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যুকালে ওঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
মধ্যবর্তী একটা বিচ্ছিন্নতার পর্যায়ের পরে কিছুদিন আগে রাজ্য পার্টি কমিটির তরফ থেকে ওঁকে আর ওঁর স্ত্রী কমরেড কৃষ্ণা সেনগুপ্তকে তাঁদের বর্তমান বাসস্থান হুগলির কোন্নগরের গভর্নমেন্ট হাউজিংয়ে গিয়ে পার্টির বিহার রাজ্য সম্পাদক কুণালজী, পলিটব্যুরো সদস্য অমরজী ও কার্তিক পালের উপস্থিতিতে পুনরায় পার্টি সদস্যপদ প্রদান করা হয়। কমরেড অরূপ দুরারোগ্য কিডনির ক্যান্সারে শেষ কয়েক বছর যাবৎ অসুস্থ ছিলেন এবং শেষের দিকে মাল্টি অর্গ্যান ফেইলিওর হয়ে বারংবার হাসপাতাল-বাড়ি-হাসপাতাল এই চক্রে তাঁর জীবন কাটছিল। অবশেষে তাঁর জীবনদীপ নিভে যায়। পরের দিন সকালে কোন্নগর যাওয়ার পথে তাঁর মরদেহ পার্টির রাজ্য অফিসে নিয়ে আসা হলে সেখানে কার্তিক পাল, পার্থ ঘোষ, অভিজিৎ মজুমদার, তরুণ সরকার প্রমুখ পার্টির পক্ষ থেকে অন্তিম শ্রদ্ধাসহ বিদায় জানান। তাঁর মরদেহ কোন্নগরে পৌঁছালে সেখানে পার্টির জেলা সম্পাদক প্রবীর হালদার সহ সমস্ত স্তরের নেতা-কর্মীরা শ্রদ্ধা জানান। স্থানীয় পার্টি কমিটির অফিসে পার্টির পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
কমরেড অরূপ সেনগুপ্ত আদতে ষাটের দশকে বোকারো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরি করতেন। সেখান থেকেই পার্টির সংস্পর্শে আসা। তারপর এক দীর্ঘ সময় যাবত তিনি পার্টির ভোজপুর জেলা সম্পাদক হিসাবে কাজ করেছেন। সংগঠন গড়ে তোলার প্রশ্নে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সুদক্ষ ও সাবলীল। পার্টি কর্মী ও সমর্থক জনগণের সাথে খুবই একাত্ম হয়ে কাজ করার কারিগর ছিলেন। তারপরে জীবনের গতিপথের আঁকবাঁকে বিহারের পরে পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুর-আসানসোল অঞ্চলে বেশ কিছুকাল সংগঠনের কাজ করতে থাকেন। মাঝে এক সময় অপ্রত্যাশিতভাবে পার্টি যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায়। যখন আবার খোাঁজখবর পাওয়া গেল তখন তিনি জটিল কালান্তক কর্কট রোগে আক্রান্ত। অবশেষে চলে গেলেন চিরঘুমের দেশে। তাঁর জীবনসঙ্গী, ছেলে, মেয়ে ও অন্যান্য পরিজনদের গভীর শোকের আমরা অংশীদার। কমরেড অরূপ সেনগুপ্ত লাল সেলাম।