“একুশের বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল বিজেপি যেন আসাম, ত্রিপুরার পর পশ্চিমবঙ্গেও ক্ষমতায় আসতে না পারে। তাদের ক্ষমতা দখলের মরিয়া প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করতে আমরা বলেছিলাম “নো ভোট টু বিজেপি”, বিজেপি’কে একটিও ভোট নয়।
একুশের নির্বাচনে বাংলার মানুষ বিজেপি’র ক্ষমতা দখলের আগ্রাসী অভিযানকে ব্যর্থ করে দেয়। তৃতীয়বার ক্ষমতায় চলে আসে তৃণমূল কংগ্রেস। সরকারের তৃতীয় দফার প্রথম বছর অতিক্রান্ত। এই একবছরের অভিজ্ঞতা একুশের গণরায়ের ধারাবাহিক অপমানের অভিজ্ঞতা। এই অপশাসনের বিরুদ্ধে আমাদের আহ্বান “নো লাইসেন্স টু টিএমসি”, তৃণমূল সরকারকে একটুও ছাড় নয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও অধিকারের দাবিতে রাজ্যব্যাপী জনগণের সমস্ত আন্দোলনে আমরা জনগণের সঙ্গে আছি।
বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দলের আসনে আজ বিজেপি। বিরোধী শক্তির এই স্বীকৃতিকে কাজে লাগিয়ে সংঘ বাহিনী এরাজ্যে তাদের সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিবাদী অভিযানকে তীব্র করে তুলতে সচেষ্ট। রাজ্যে বিরোধী রাজনীতির পরিসরে বিজেপি’কে দুর্বল করে বামপন্থীদের প্রধান শক্তি হিসেবে উঠে আসতে হবে। বালিগঞ্জ উপনির্বাচনের বিজেপি’কে তৃতীয় স্থানে ঠেলে দিয়ে বামপন্থী প্রার্থী দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন। এটাই যেন গোটা রাজ্যের ছবি হয়ে উঠতে পারে সেই চ্যালেঞ্জ বামপন্থীদের গ্রহণ করতে হবে।
বামপন্থী ঐক্য বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে সামনে এসেছে। চৌত্রিশ বছর ক্ষমতায় থাকার সুবাদে বামফ্রন্টের পরিচিতি সরকার কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছিল। আজ বিরোধী রাজনীতিতে ভিন্নতর বামপন্থী ঐক্য প্রয়োজন। বামফ্রন্টের অন্তর্ভুক্ত দল ও বামফ্রন্টের বাইরে থাকা বামপন্থী শক্তিকে ধারাবাহিকভাবে একযোগে আন্দোলন করতে হলে ঐক্যের আলাদা পরিবেশ ও কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে চেষ্টা চালাব। জাতীয় স্তরে পাঁচটি বামপন্থী দল ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচী নিয়ে চলেছে। রাজ্যেও বিভিন্ন প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ বামপন্থী উদ্যোগ ও আন্দোলন চাই।”
- দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন