সংযুক্ত কিষান সভার ডাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ভারত বনধের সমর্থনে এবং জেলার চটকল মজদুর, রন্ধন কর্মী এবং নির্মাণ শ্রমিকদের ৭ দফা দাবি নিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর বারাসাত ও বারাকপুরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা এআইসিসিটিইউ'র অবস্থান ও ডেপুটেশন কর্মসূচী নেওয়া হয়েছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বারাকপুরের কর্মসুচী বাতিল হয়ে যায়। বারাসাতে জেলা শাসকের কাছে স্মারক লিপি দেওয়া হয়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার সম্প্রতি ঘোষণা করেছে রাজ্যের চটকলগুলিতে এক লক্ষ লোক নিয়োগ করা হবে। এআইসিসিটিইউ সরকারের এই ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করে এই দাবি করছে যে বর্তমানে প্রতিটি মিলে হাজার হাজার শ্রমিক জিরো নম্বরে কাজ করেন। নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে এই সমস্ত দীর্ঘ দিন কাজ করা এবং একেবারেই অস্থায়ী, শ্রমিকদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রতিনিধিদলের কাছে জানতে চাওয়া হয় এদের সংখ্যা কত এবং কেনই বা বিষয়টি ডিএলসি-তে আলোচ্য হবে না? প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বলা হয় নীতি নির্ধারণের প্রশ্নে সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্যজুড়ে এবং জেলায় রন্ধন কর্মীদের এখনো ১২ মাসের সান্মানিক, পূজার সময়ে বোনাস বা উৎসব কালের অনুদান কোন কিছুই দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিনিধি দলের নেত্রী এবং এআইসিসিটিইউ'র জেলা সহ সম্পাদিকা জয়শ্রী দাস উল্লেখ করেন যে রাজ্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য রিলিফের ব্যবস্থা করছে কিন্তু রন্ধন কর্মীদের প্রতি কোনও মানবিক দৃষ্টি নেই। ২০১৩ সালের পর তাদের সান্মানিকের কোনও বৃদ্ধি ঘটেনি। অতিমারীর সময়েও রন্ধন কর্মীরা তাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালন করেছেন কিন্তু তাদের ১২ মাসের সান্মানিক নিশ্চিত হচ্ছে না। ভাটপাড়া পৌর সভা অঞ্চলে ৫৩ জন রন্ধনকর্মীকে এখনো পর্য্যন্ত বকেয়া অনুদান দেওয়া হয়নি। ভাটপাড়া পৌর এলাকার স্কুলগুলিতে নো ওয়ার্ক নো পে চালু করতে চাইছে যা আইন বিরুদ্ধ। বোনাস আইনের ৮(১) ধারায় যখন বছরে ৩০ দিন কাজ করলে কোন একজন বোনাস পাওয়ার যোগ্য হন তাহলে একজন রন্ধনকর্মী বোনাস পাবে না কেন? নির্মাণ কর্মীদের জন্যই তৈরি করা ওয়েলফেয়ার ফান্ডের টাকা রাজ্য সরকারের আটকে রাখার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় এবং আবিলম্বে ফান্ড রিলিজ করার দাবি জানানো হয়। জেলা শাসকের তরফে ডেপুটি সেক্রেটারি জেলা পরিষদ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন এবং আগামী ৭ দিনের মধ্যে জেলা শাসকের পদক্ষেপ আমাদের সংগঠনকে অবগত করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা সত্বেও এদিনে অর্ধ শতাধিক রন্ধনকর্মী এবং নির্মাণ শ্রমিক বারাসাত স্টেশনে জমায়েত হয়ে মিছিল করে জেলাশাসকের দফতরে যান সেখানে সভা করা হয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন জয়শ্রী দাস সহ রন্ধন কর্মী ইউনিয়নের জেলা সম্পাদিকা সুলেখা বর্ধন, নির্মাণ ইউনিয়নের শংকর সাহা এবং এআইসিসিটিইউ সদস্য সুজিত ঘোষ।