রাজ্যের চটকল শ্রমিকদের প্রতিনিধিস্থানীয় ২৩টি ইউনিয়ন এক যৌথ আবেদন মারফত সদ্য নবনির্বাচিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে একটি দাবিপত্র পেশ করেছে। ঐ দাবিপত্রে বলা হয়েছে, গোটা দেশ সহ এই রাজ্যজুড়ে কোভিড-২’র প্রবল সংক্রমণকে মোকাবিলা করতে আপনার সরকার একপ্রস্থ পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, কোভিডের থাবা একই সাথে শ্রমজীবী মানুষের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিরাট আঘাত নামিয়ে এনেছে। আমরা এই রাজ্যের চটশিল্পে, দলমত নির্বিশেষে নিম্নস্বাক্ষরিত ২১টি ট্রেড ইউনিয়ন চটকল শ্রমিকদের বেশ কয়েকটি সমস্যা তুলে ধরে তা সমাধানের জন্য আপনার কাছে পেশ করছি।
১) রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, প্রতিটি চটকলে ৩০ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে মিল চলবে। আপনি জানেন, এরফলে বিরাট সংখ্যক শ্রমিক নিয়মিত কাজ না পেয়ে চরম আর্থিক দুর্দশার কবলে পড়বেন। প্রতিটি মিলে প্রতিটি শিফটে ৩৩ শতাংশ শ্রমিক দিয়ে ৮ ঘন্টা মিলগুলো চালাতে হবে। সাধারণত চটকলগুলোতে শ্রমিকরা তাদের কাজেরধরন অনুযায়ী শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই কাজ করেন, তাই মিলে প্রবেশ ও নিষ্ক্রমণের সময় দূরত্ববিধি বজায় রাখার উপর বিশেষ নজরদারি রাখা প্রয়োজন।
যে সমস্ত শ্রমিকরা কাজ পাবেন না, তাঁদের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট আইন অনুসারে পুরো মজুরি বা লে-অফ দিতে হবে।
২) ইতিমধ্যেই কাঁচা পাটের অভাব দেখিয়ে মালিকপক্ষ রাজ্যের প্রায় ৮টি চটকল বন্ধ করেছে। বেশ কিছু মিল চলছে দু’টো শিফটে। আমরা এবিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে গত ২৮ এপ্রিল চিঠি দিয়েছিলাম। জুট কমিশনার, কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় শ্রম কমিশনারের কাছেও একই বিষয়ে চিঠি দিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই সমস্যার সমাধান হলো না।
আমরা আপনার কাছে আবেদন করছি, জুট কমিশনারের দপ্তরের সাথে কথাবার্তা চালিয়ে কাঁচা পাট সরবরাহের সমস্যা সমাধানে আপনি ইতিবাচক ভূমিকা নেবেন, সমস্ত বন্ধ চটকল খোলা এবং রাজ্যের এই গুরুত্বপূর্ণ শ্রমনিবিড় শিল্পকে সংকটের হাত থেকে রক্ষা করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৩) চটকল শ্রমিকদের নিজ নিজ কর্মস্থলে টিকাকরণের জন্য ইএসআই’কে দায়িত্ব নিতে হবে। সমস্ত চটকল শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারকেও দ্রুতই টিকাকরণের আওতায় আনতে রাজ্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। কোভিড স্বাস্থ্যবিধি কঠোর ভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা তার উপর নজরদারি রাখা একান্তই প্রয়োজন।
৪) বিভিন্ন জেলার ইএসআই হাসপাতালগুলো কোভিড হাসপাতাল হওয়ায় কোভিড বহির্ভূত অসুখের জন্য শ্রমিকদের পাঠানো হচ্ছে মানিকতলার ইএসআই হাসপাতালে। লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায়, বাস চলাচলও অনিয়মিত হওয়ায় শ্রমিকরা রীতিমতো হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
আমরা আবেদন করছি, জেলাগুলোতে ইএসআই’র সাথে যে সমস্ত হাসপাতালের টাই-আপ আছে, সেখানে নন- কোভিড রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই বর্তমানে এই চলতে থাকা হয়রানি বন্ধ করা যাবে।
৫) গতবছর লকডাউনের সময় মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য এসটিএল থেকে বঞ্চিত করে। সেই বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য আপনার কাছে আবেদন রাখছি।
অতিমারি সৃষ্ট এই মারাত্মক পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতে সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষকেই একযোগে পথে নামতে হবে। সামাজিক সংহতিকে আরও মজবুত করতে শ্রমিকদের আর্থিক বিপন্নতা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংকটকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সমাধান করাটা আজ পরিস্থিতির দাবি।
আশাকরি, আপনি গুরুত্বের সাথে সমস্ত ইউনিয়নগুলোর পক্ষ থেকে উত্থাপিত বিষয়গুলো বিবেচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
BCMU, NUJW, FCMU, RCMU, JTWU, BPCMU, PBCMF, AIJTWF, NUJW, AIJWF, INJWF, BCMF, IFJTW, WBNJMSU, JWF, AIFJW, BJMS, BJMWU, WBCSKU, NUJTW, NUJTW, NFJW, BJSS.