বাসুদেব বসুর বার্তা
দীর্ঘদিনের পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ প্রদীপদার প্রয়াণে গভীর শোক ও সমবেদনা রইল। প্রদীপ ব্যানার্জি ৭০ দশকের নকশালবাড়ী আন্দোলনের নেতা ছিলেন। অবিভক্ত পিসিসিসি সিপিআই(এমএল)-এর নেতা ছিলেন। বহু গণ আন্দোলনে প্রদীপদার সাথে চলার স্মৃতি আছে। গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে তালতলা শহীদ স্মৃতি রক্ষার কর্মসূচীতে শেষ দেখা হয়েছিল। প্রদীপদা পরবর্তীতে তৃনমূল দলের ট্রেড ইউনিয়ন INTTUC র সসর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন। প্রদীপদার প্রয়াণে জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা।
কমরেড কার্তিক পালের পাঠানো শোক বার্তা
প্রদীপ ব্যানার্জি এক সময়ে (৭০ দশকে) ডেবরা গোপীবল্লভপুর জোনে সিপিআই(এমএল)-এর কাজ করেছেন। ধাক্কা পরবর্তী পর্যায়ে পিসিসি সিপিআই(এমএল)-এর হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেন। পিসিসি বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেলে আমার সাথে একবার দেখা করেন। খোলামেলা, উদার ও মানবিক বোধ সম্পন্ন ছিলেন। সিঙুর-নন্দীগ্রামের কৃষক আন্দোলনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। এই প্রক্রিয়ায় তূলমুল কংগ্রেসের সাথে যুক্ত হন। আমরা যখন সিংগুরে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে মেট্রোর চ্যানেলে অবস্থানে বসি তখনই প্রদীপ ব্যানার্জি ও মুকুল রায়-রা আমাদের অবস্থান মঞ্চে আসে কথা বলতে। একসাথে মমতা ব্যানার্জিরা আলাদা করেই পাশে বসতে চান। আমরা আপওি করি। সেই সময়ে প্রদীপ ব্যানার্জি বারবার অনুরোধ করে। তখন থেকেই তৃণমুলের সাথে যুক্ত। অনেক বার দেখা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতেন। বন্ধুর মতো ব্যবহার করতেন। সহজ সরল জীবন যাপন করতেন। মৃত্যুর খবর শুনে আঘাত পেলাম, একজন ভালো বন্ধুকে হারালাম।
অপূর্বমুক্তিকামীর স্মৃতিচারণ
গতকাল রাতে সুদীপ্তদা, আজ সকালে প্রদীপদা, দু’জনেই যাদবপুরের কেপিসিতে। সুদীপ্তদার জন্য আজ সকালে লাল পতাকা মেলে লাল সেলাম জানিয়েছেন যাদবপুরের সাথীরা, কোভিড তো, তাই শেষ মিছিল করা যায়নি। প্রদীপদাকে আগে চিনতুম, তালতলার কমরেড প্রদীপ ব্যানার্জীকে তো চিনতেই হবে। কিন্তু প্রদীপদার সঙ্গে যখন প্রথম ভালো করে কথা হল তখন আর কমরেড বলতে পারি না, প্রদীপদা ডানকুনি হাউসিংয়ে থাকতেন, একদিন ডানকুনির চায়ের দোকানে কথা হল, মানে তর্কই হলো, প্রদীপদা তো তখন আইএনটিটিইউসি-র বড়ো নেতা, মানে রাজ্যের শাসকদলের পক্ষের লোক, ফলে যা হয় আর কী। চেনা মানুষরা সব হারিয়ে যাচ্ছে, আর তো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ দেখা হবে না, চায়ের দোকানে চেঁচিয়ে বলতে পারবো না, “কমরেড কাজলের কথা এখন আপনি বলেন কী করে?”, সেদিনের আমার বলায় যে ঔদ্ধত্য ছিল সেটাও আর স্বীকার করার সুযোগ রইলো না।