গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির(এপিডিআর) রাজ্য নেতা তথা মানবাধিকার কর্মী সুদীপ্ত সেন ৬ মে ২০২১ রাত ৯-৪৫ মিনিটে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন। আমরা হারালাম এক নির্ভীক লড়াকু মানবধিকার কর্মীকে। হারালাম এক অসীম দরদী মানবিক সহযোদ্ধাকে। এ ক্ষতি অপূরণীয়।
“সুদীপ্তর বাড়িতে বসে কথা হচ্ছিল। গণ আন্দোলন, নাগরিক আন্দোলন ও অধিকার আন্দোলনের মিটিং পয়েন্ট নিয়ে। কথা বলতে বলতে একটু আসি বলে চলে গিয়ে ৩-৪ মিনিটের মধ্যে চলে আসলো। ওর বাড়ির নীচের মিষ্টির দোকানটা ওদের। কিন্তু সুদীপ্ত মিষ্টি খায় না। ওর মধুমেহ (ডায়াবেটিস) আছে। আমাদের কথা বলার উপলক্ষ্য ছিল জঙ্গলমহলের গণআন্দোলন ও জাগরণের পরিণতি নিয়ে। অত্যন্ত প্রাণবন্ত, পরিশ্রমী, এক সহযোদ্ধার এভাবে চলে যাওয়া খুবই বেদনার। লাল সেলাম কমরেড সুদীপ্ত।” – হাসপাতালের বেড থেকে লিখে পাঠিয়ছেন কমরেড পার্থঘোষ।
“সুদীপ্ত নেই ভাবতে পারছি না। দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব। লেক গার্ডেন্সে সুদীপ্তর বাডিতে বহুদিনের যাতায়াত ছিল। একসময় ও পার্টি ইউনিটির সাথে যুক্ত ছিল। মানবাধিকার আন্দোলনর এক নিরলস কর্মী ছিলেন। লকডাউনের প্রথম পর্যায়ে বহু কর্মসূচীতে একসাথে ছিলাম। নির্বাচনের আগে বাঘাযতীন – সুলেখায় এপিডিআর আহুত কর্মসূচীতে সুদীপ্তর সাথে চলেছি। বড় বেদনাদায়ক এই মৃত্যু। গভীর শোক ও সমবেদনা রইল। সুদীপ্ত সেন অমর রহে।” – বাসুদেব বসু
“ঠিক গতবছরের অভিজ্ঞতা যেন ফিরে এলো – ফাঁকা স্টেশন, ফাঁকা ট্রেন ! কোভিড অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউ আরও আতঙ্ক, আরও আঘাত নিয়ে ফিরে এসেছে। গতবার বহু বিখ্যাত মানুষদের কেড়ে নিয়েছিল এই মারণ রোগ, এইবারেও শঙ্খ ঘোষ প্রয়াত হলেন এই রোগে, গতকাল রাতে প্রয়াত হলেন এপিডিআর-এর সহ সভাপতি সুদীপ্ত সেন। আমার বহু সহকর্মীকে হারিয়েছি এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে। অক্সিজেনের অভাব, ওষুধের অভাব, ভ্যাকসিনের অপ্রতুলতা, বেডের হাহাকার সব মিলিয়ে সরকারের ব্যর্থতা প্রকট। ভোটের সময় রাজনৈতিক নেতাদের কাণ্ডজ্ঞানহীনতা প্রত্যক্ষ করেছি আমরা, সেই ফল আরও বহুদিন ভুগতে হবে আমাদের। এখন আবার ট্রেন বন্ধ হওয়াতে হকার থেকে শুরু করে, শহরে কাজ করতে যাওয়া অসংগঠিত শ্রমিক, দোকান কর্মচারী, অফিস কর্মচারীরা কাজ এবং মজুরি হারাবেন। শুনছি জুলাইয়ে নাকি তৃতীয় ঢেউ আসবে – ঢেউ তো নয় যেন একেকটা সুনামি। এই সময়ে কোভিডের বিরুদ্ধে সমবেত লড়াইটা সবচেয়ে জরুরি, জরুরি কাজ হারানো মানুষদের পাশে দাঁড়ানো। এই সময় সন্ত্রাস আর দাঙ্গা যারা করতে চাইছে তাদের ক্ষমা নেই।”
- সংগ্রাম ভিয়েত স্ফুলিঙ্গ