সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি ২৬ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যসচিব এবং স্বাস্থ্যসচিবের কাছে সারা দেশ জুড়ে কোভিড অতিমারির যে দ্বিতীয় ঢেউ চলছে তার জন্য কার্যকরী ও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে নিম্নলিখিত দাবিসনদ পেশ করেছিল। যেহেতু তখনও পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা বাকী ছিল তাই দাবিপত্রের শুরুতেই রাজ্য প্রশাসনের মাধ্যমে একযোগে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে জরুরি করণীয় বিষয়গুলি জানানো হয়।
১) ভারত সরকারকে তাদের সংক্রামক ব্যাধির নিয়ন্ত্রণের কর্মসূচী অনুযায়ী রাজ্য সরকারগুলিকে বিনামূল্যে কোভিড ভ্যাকসিন যোগান দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
২) প্রতি ৪-৫ ঘন্টা অন্তর হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা, অক্সিজেন যোগানের সর্বশেষ পরিস্থিতি বুলেটিন মারফত জনসাধারণকে জানাতে হবে। সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন প্ল্যান্ট গড়ে তোলার পরিকল্পনা ও তার অগ্রগতির রিপোর্ট জনসাধারণকে জানাতে হবে।
৩) কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও ভ্যাকসিন প্রয়োগের দায়িত্ব নিতে হবে।
৪) সমস্ত সরকারী এবং বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বেসরকারী হাসপাতাল ও নার্সিং হোমে বিনামূল্যে কোভিড ভ্যাকিসিন অবশ্যই দিতে হবে।
৫) অক্সিজেন সিলিন্ডার, ভেন্টিলেটর, মাস্ক, জীবনদায়ী ওষুধ, হাসপাতালে শয্যার অবাধ লভ্যতার জন্য আর্থিক সংকট বা প্রশাসনিক ব্যর্থতার অজুহাত দেখানো চলবে না।
৬) কোভিড চিকিৎসা এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য মন্ত্রক বা প্রশাসনিক স্তরের যে কোন পর্যায়ে কোনো অবহেলা বা দায়িত্বের অভাব শাস্তিযোগ্য অপরাধসম অবহেলা বলে গণ্য করতে হবে।
৭) জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার কোভিড চিকিৎসার ও ভ্যাকসিনের যে বিধিনিয়ম এবং গাইডলাইন আছে তা সঠিকভাবে মানতে হবে।
৮) কোভিড সংক্রমণ নিয়ে অবৈজ্ঞানিক ধারণা, কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস প্রচার বন্ধ করতে হবে।
৯) ভাইরাস এবং ব্যাকটিরিয়া (জীবাণু) ঘটিত সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার জন্য দীর্ঘস্থায়ী কর্মসূচী নিতে হবে।
১০) কেন্দ্রীয় বাজেটের কমপক্ষে ৬ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ করতে হবে।
১১) দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্য প্রকল্প চালু করতে হবে।
১২) সমস্ত ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সম্মুখসারির অন্যান্য কর্মীদের প্রত্যেকের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার বীমা সরকারকে চালু করতে হবে।
১৩) সামাজিক সংগঠনগুলিকে অতিমারী নিয়ন্ত্রণে অংশগ্রহণ করতে হবে।
১৪) সমস্ত কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে কোভিড ট্যাক্স দিতে হবে।
১৫) শবদেহ সত্কার বা কবরের জন্য নির্দিষ্ট গাইডলাইন জানাতে হবে।
১৬) ভ্যাকসিনের জন্য যাঁরা লাইনে দাঁড়াবেন তাদের অবশ্যই কুপন দিতে হবে অযথা ঝামেলা এড়াবার জন্য। যদি সেই দিন কেউ ভ্যাকসিন না পান, পরের দিন যেন অবশ্যই তারা সুযোগ পান।
১৭) প্রত্যেকটি শিল্পক্ষেত্রে ও সরকারী অফিসে ভ্যাকসিন প্রয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৮) বেসরকারী হাসপাতালে কোভিড রুগীদের চিকিৎসার জন্য চড়ামূল্য নেওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ও কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে।