রাজ্যে যখন কোভিড ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পরছে, তখনই সিবিআই’কে দিয়ে গণরায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে সর্বত্র প্রতিবাদ হওয়া উচিত, কোভিড সতর্কতাকে মান্যতা দিয়ে বিকল্প অভিনব উপায় ও পদ্ধতিতে প্রতিবাদ চলুক।
দেশজুড়ে (আয়ারলা’র) সারা ভারত কৃষি ও গ্রামীণ মজুর সমিতির ডাকে সংগঠিত হল প্রতিবাদ দিবস। দেশজুড়ে দাবি উঠছে কৃষক-ক্ষেতমজুর-শ্রমিক-ছাত্র ঐক্যের পক্ষ থেকে।
১) দেশে ‘জাতীয় স্বাস্থ্য জরুরী অবস্থা’ ঘোষণা করে বিনা খরচে স্ক্রিনিং, টিকা দেওয়া, চিকিৎসার এবং খাদ্যের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হবে। গরিব মেহনতী পরিবারগুলিকে মাসিক ন্যূনতম ৬,০০০ টাকা করে ৬ মাস সহায়তা করতে হবে।
২) সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে কোভিড কেয়ার সেন্টার তৈরী করে বিনা খরচে স্ক্রিনিং, ভ্যাকসিন ও কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও জেলা হাসপাতালে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা, অক্সিজেন সমৃদ্ধ শয্যা, আইসিইউ, পর্যাপ্ত বেড, উপযুক্ত ডাক্তার ও পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩) মহামারীর সময়ে সমস্ত মৃত্যুকে কোভিড মৃত্যু হিসাবেবিবেচনা করে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অনাথ শিশুদের লালনপালনের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
৪) কোভিডকে ঘিরে ভুল ধারণা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সরকার থেকে প্রচার করতে হবে। গোবর বা গোমুত্র দিয়ে কোভিড চিকিৎসার কুসংস্কারের বিরুদ্ধেও সরকারী প্রচার মাধ্যমকে সরব হতে হবে।
৫) মহামারী চলাকালীন ৫০টি শ্রম দিবসের মজুরি এমএনআরইজিএ শ্রমিকদের দিতে হবে। পরিযায়ী শ্রমিক সহ সমস্ত কাজ হারানো মেহনতীদের কাজ দিতে হবে। ৫০ বছর বয়সসীমা নির্ধারণের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে।
৬) সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক, আশা, অঙ্গনওয়ারী ও মিড-ডে-মিল কর্মীদের জন্য ১০,০০০ টাকার করোনা ভাতা দিতে হবে। সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের মাসিক ৫,০০০ টাকা পেনশন দিতে হবে।
৭) রেশন কার্ডধারী সহ সমস্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারী কৃষকদের পরিবার পিছু মাসিক ৩৫ কেজি দানাশস্য ও ৫,০০০ টাকা মাসিক বিশেষ সহায়তা দিতে হবে। কৃষকদের লাভজনক দামে ফসল ক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
৮) তিন মাসের মধ্যে শিশু সহ সমস্ত নাগরিককে বিনাখরচে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৯) সরকারী বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষার্থীদের স্মার্ট মোবাইল দিয়ে অনলাইন শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
১০) কৃষক ও গরিব মেহনতীদের সমস্ত ঋণ মকুব করতে হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীসহ মাইক্রোফিনান্স সংস্থার ঋণ মকুব করতে হবে। ঋণ আদায় ও কিস্তির টাকা আদায় স্থগিত রাখতে হবে।
বিজেপির ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচী নদীয়া জেলায় সংগঠিত হয়েছে। নাকাশীপাড়ায় গাছা বাজারে কৃষক কর্মীরা সমাবেশিত হন। লকডাউন বিধি মেনে হাতে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ডনিয়ে প্রতিবাদ করা হয়। কেন্দ্রের চক্রান্তর পাশাপাশি করোনা সংকটকালে রেশনে গরীব পরিবারগুলিকে ৩৫ কেজি খাদ্যদ্রব্য, সমস্ত জবকার্ডধারী গরিব মানুষকে ৭৫০০ টাকা লকডাউন ভাতা, সরকারী দরে ধান কেনা প্রভৃতি দাবীও তুলে ধরা হয়। বেথুয়াডহরী পার্টি কার্যালয়ের সামনেও অনুরূপ কর্মসূচী হয়।
২০ মে নদীয়া জেলার চাকদায় বসন্ত স্মৃতি পাঠাগারের সামনে এক প্রতিবাদ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সকাল ৯টায় স্থানীয় কর্মীরা আধঘন্টাব্যাপী স্লোগান দিয়ে বুকে দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ডনিয়ে এই কর্মসূচী সংগঠিত করে, মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
বজবজে এআইএআরএলএ-র কর্মসূচী সারা দেশ জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচীর অঙ্গ হিসাবে বজবজ গ্ৰামাঞ্চলে গত ১৭ মে প্রতিবাদ কর্মসূচী হয়। উপস্থিত ছিলেন সমিতির জাতীয় কাউন্সিল সদস্যা দেবযানী গোস্বামী, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন বজবজ গ্রামীণ লোকাল কমিটির সদস্য শ্যামসুন্দর গোস্বামী সহ আরো অনেকে। শ্লোগান ওঠে অতিমারী পরিস্থিতিতে সমস্ত মাইক্রোফাইনান্স ঋণ মকুব করতে হবে, অবিলম্বে সকলের করোনা টিকাকরণ নিশ্চিত করতে হবে।