বিশ্বভারতীর চিঠি
Letter from Visva Bharati

সাথী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজেপি-আরএসএসের অঙ্গুলিহেলনে চলা উপাচার্যের নেতৃত্বে নেমে আসছে একের পর এক আক্রমণ। এর বিরুদ্ধে মুখ খুললেই ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মী, আধিকারিকদের উপর চাপানো হচ্ছে মুচলেকা, শোকজ অথবা সাসপেনশনের ফতোয়া। ইতিমধ্যেই প্রায় ১৫০ জনকে করা হয়েছে শোকজ, সাসপেন্ড হয়েছেন ২০ জনেরও অধিক।

গত ১৪ জানুয়ারী উপাচার্যের এহেন অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধাচরণ করার কারণে ৩ জন ছাত্রছাত্রীকে সম্পূর্ণ স্বৈরাচারী ভঙ্গিতে মিথ্যা অভিযোগে কোনরকম নোটিশ ছাড়াই ৩ মাসের জন্য সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। বিগত ১৪ এপ্রিল এই সাসপেনশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল অথচ ১৯ এপ্রিল উপরোক্ত ছাত্রছাত্রীদেরকে একটি অজ্ঞাতপরিচয় মেইলের মাধ্যমে জানানো হয় তাদের সাসপেনশন পুনরায় আগামী ৩ মাসের জন্য বহাল করা হচ্ছে। আমরা আইসা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তকে ধিক্কার জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এই স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি। পুনরায় সাসপেনশন বহাল রেখে প্রতিবাদী ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাক্ষেত্রে ভবিষ্যৎকে অন্ধকারের মুখে ঠেলে দেওয়ার চক্রান্তকে যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। এই নোটিশে কর্তৃপক্ষের তরফে কোন সাক্ষর না থাকা, এবং অজ্ঞাতপরিচয়ে মেইল আসা আদপে এই নোটিশের বৈধতাকেই প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেয়। এরই সাথে অন্যান্য অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মী, আধিকারিকদের উপর নেমে আসা ফতোয়াগুলির বাতিলের দাবিও আমরা রাখছি।

ইতিমধ্যেই এই অগণতান্ত্রিক নোটিশের বিরুদ্ধে সাস্পেনডেড ছাত্রছাত্রীরা অবস্থান আন্দোলন শুরু করেছেন শান্তিনিকেতন কাঁচমন্দিরের সামনে। আমরা আইসার পক্ষ থেকে এই আন্দোলনকে সংহতি জানাই এবং বাংলার সমগ্র ছাত্র-ছাত্রী সমাজকে প্রতিবাদী ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানাই। এর পাশাপাশি শিক্ষা সম্বন্ধিত রবীন্দ্রনাথের ভাবনার সম্পুর্ণ বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে বিশ্বভারতীর আদর্শকে, তার মুক্তচিন্তার পরিসরকে সম্পূর্ণ ফ্যাসিবাদী কায়দায় বিনষ্ট করার যে চক্রান্ত উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে চলছে, তা রুখতে অবিলম্বে আমরা বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।

সংগ্রামী অভিনন্দন সহ,
আইসা, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট

খণ্ড-28
সংখ্যা-15