নতুন ভারতের সরকার যখন নাগরিকদের জীবিকা, গণতান্ত্রিক অধিকার এমনকি মতপ্রকাশের অধিকার ও কেড়ে নেওয়ার পর ভারতীয় পরিচয়টুকু পর্যন্ত কেড়ে নিতে চায়, তখন আমরা ভারতীয় নাগরিক এই পরিচয়টুকু রক্ষা করতে, নাগরিকত্ব সুরক্ষা যাত্রা করতে হচ্ছে আজকের ভারতে।
২৬ ফেব্রুয়ারী নদীয়া জেলার সীমান্তঘেঁষা বেতাই থেকে শুরু হয়ে ছিল এই যাত্রা।
নাগরিকপঞ্জি-বিরোধী যুক্তমঞ্চের উদ্যোগে ২৬ ফেব্রুয়ারী নদীয়া জেলার গ্রাম বেতাই, তেহট্ট, কৃষ্ণনগর, বাদকুল্লা, রানাঘাট, কুপার্স ক্যাম্প, ধানতলা, পানিখালি, ট্যাংরাখাল, ভায়না, বগুলা, দত্তফুলিয়া হয়ে এই যাত্রা উত্তর ২৪ পরগনায় ঢোকে ১ মার্চ। সিন্দ্রানি, হেলেঞ্চা, বনগাঁ, গাইঘাটা, মছলন্দপুর, বাদুরিয়া হয়ে বারাসাতে পৌঁছয় ৩ মার্চ। পরের দিন বাদুতে প্রচার চালিয়ে বিকেলে হাতিয়ারা, সন্ধ্যেবেলা যাত্রাগাছির মৃধা মার্কেটে সভা করা হয়। প্রতিদিন সকালে ২টি বা ৩টি পথসভা আর সন্ধ্যে বেলা ২টি জনসভা ছিল যাত্রার প্রচারের অংশে ছাড়া অসংখ্য লিফলেট বিলি করা হয় পুরো যাত্রা পথে।
যাত্রাপথের একটা বিরাট অঞ্চলের সাংসদ নিজেকে ভারতীয় নাগরিক না বলতে পারেন ও তার নির্বাচকমন্ডলী বা ভোটারদের বিশেষত মতুয়ারা ভারতীয় নাগরিক নয় একথা প্রচার করতে পারেন। এই অদ্ভুত প্রচারের বিরুদ্ধে নাগরিকদের সচেতন করাই ছিল যাত্রার মূল উদ্দেশ্য।
এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের বার্তা, বিশেষত তাদেরকে দিয়ে ৪৮ সালের পরে বাংলাদেশ থেকে আসার লিখিত স্বীকৃতি আদায় করাই যে এই মিথ্যা প্রচারের উদ্দেশ্য তা মানুষের কাছে তুলে ধরা হয়। বিজেপির বিষাক্ত প্রচারে এই অঞ্চলের বহু মানুষ প্রভাবিত থাকলেও এবং নাগরিক পরিচয় পত্রের প্রতি স্বাভাবিক আকর্ষণ থাকলেও আমাদের প্রচার বিরাটভাবে তাদের সমর্থন লাভ করে।
এনআরসি বিরোধী প্রচার স্বাভাবিকভাবেই বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গে আগামী নির্বচনে পরাস্ত করার আহ্বানে পরিণত হয়। যাত্রা শেষে যাত্রার অন্যতম আহবায়ক প্রসেনজিৎ বোস স্পষ্ট করে বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলার গ্রামাঞ্চলে এই ধরনের প্রচার আগামীদিনে বহু মানুষকে বিজেপির মিথ্যা প্রচারকে মোকাবিলা করে বিজেপি বিরোধিতায় সংগঠিত করতে পারবে এই বিশ্বাস যাত্রা থেকে অর্জন করেছি।
প্রতিবেদক : তমাল চক্রবর্তী