হুগলির দুটি কেন্দ্রে সিপিআই(এমএল) লিবারেশন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে — গ্রামীণ এলাকা ধনেখালি ও শহরাঞ্চলের উত্তরপাড়া কেন্দ্রে। দুই তরুণ প্রার্থী সজল দে ও সৌরভ রায় শিক্ষকতা পেশার সাথে যুক্ত — একজন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক অন্যজন কলেজে অধ্যাপনা করেন। কিন্তু পেশাগত এই পরিচয়কে ছাপিয়ে যায় মানুষের দাবি দাওয়া আন্দোলনের পাশে থাকা ও তাকে সংগঠিত করার সংগঠকের পরিচয়। ধনেখালিতে লকডাউন পর্বে কাজ হারানো মানুষ বিশেষত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ঋণ মুক্তি, গ্রামীণ দরিদ্র জনগণের জবকার্ড, আদিবাসীদের লোকশিল্প ভাতা, কৃষি শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিতে, উত্তরপাড়া এলাকায় ফিল্ম সিটি তৈরির নামে ইটভাটা তথা ইটভাটা শ্রমিক উচ্ছেদ, মহিলা নিপীড়ন, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবি কিংবা পরিবেশ রক্ষার মতো বহু দাবিতে সিপিআই(এমএল) ও তার গণসংগঠনগুলি ধারাবাহিক আন্দোলনে থেকেছে। এই নির্বাচনেও বাংলাকে বিজেপির হাত থেকে রক্ষা করা এবং মানুষের দাবিগুলি নিয়ে বাম আন্দোলনের উঠে দাঁড়ানো, পারষ্পরিক সম্পর্কযুক্ত এই গুরুত্বপূর্ণ কাজে হাত লাগিয়েছেন প্রার্থী এবং দলীয় সংগঠক ও কর্মীরা। রঙ তুলি নিয়ে দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গেছে, গ্রামের চুন করা মাটির দেওয়াল কিংবা শহরের বড় রাস্তার পাশের আর অলি-গলির দেওয়াল ভরে উঠছে বিজেপি রুখে দেওয়া, জনগণের বিভিন্ন দাবিতে লড়াইয়ের স্লোগান আর প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আবেদনে। ৮ মার্চ শ্রমজীবী নারী দিবস উপলক্ষ্যে প্রগতিশীল মহিলা সমিতির সদস্যরা এই দুই নির্বাচনী কেন্দ্রে কর্মসূচী পালন করেন, আমাদের দুই প্রার্থীকে আহ্বান জানিয়ে প্রচার পত্র বিলি করা হয়, এই কর্মসূচীতে প্রার্থীও উপস্থিত ছিলেন। ইতিমধ্যে ধনেখালির আদিবাসী ও কৃষিমজুরদের গ্রামে বাড়ি বাড়ি প্রচার গাড়ি নিয়ে প্রার্থী ও সংগঠকরা যেতে শুরু করেছেন। উত্তরপাড়ায় বিজ্ঞানমঞ্চ, পরিবেশ সংগঠন এবং বিভিন্ন ক্লাবের সাথে কোভিড মোকাবিলায় সম্পর্ক শুরু হয়েছিল, সংগঠনের কিছু মানুষ ‘একুশের ডাক’ নিয়ে কর্মসূচীতে এসেছিলেন, নির্বাচনী কাজেও তাঁরা যুক্ত হচ্ছেন। এই বিধানসভায় দীর্ঘদিনের বসবাসকারী অথচ নিজের বাড়ি নেই এইরকম ভাড়াটিয়া ভালোসংখ্যক মানুষদের সাথে পার্টির পক্ষ থেকে একটি বৈঠক হয়। উত্তরপাড়ার অন্তর্গত পঞ্চায়েত এলাকাতে দেওয়াল লিখন হচ্ছে, এই এলাকায় আমাদের সংগঠন না থাকলেও, প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাকে কাজে লাগিয়ে বিজেপির অনুপ্রবেশের চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রচার শুরু হয়েছে।
নির্বাচন পর্যন্ত সময়কালে ব্রাঞ্চস্তর পর্যন্ত সংগঠনকে সক্রিয় করে, সমস্ত পার্টি সদস্য এমনকি দূরবর্তী সমর্থকটিকে সামিল করে এই কঠিন লড়াই লড়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা হয়েছে, শুরুর কাজে তারই এক উৎসাহব্যাঞ্জক ছবি চোখে পড়ছে এই দুই কেন্দ্রে।