জাতীয় রাজনীতিতে গুজরাত এবং বাংলার মধ্যে মাঝে মাঝেই তুলনা করা হয়। এই তুলনা আরো বেশি জোরালো হয়েছে বাংলা ছেড়ে টাটা ন্যানো কারখানা গুজরাতে চলে যাওয়ার পর৷ বাংলাকে দেখা হয় ভারতীয় পুঁজিবাদী উন্নয়নের পথের কাঁটা হিসেবে। গুজরাত সেখানে পুরো ভারতের জন্য একটি মডেল হিসেবে প্রচার পায়। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দেখতে গেলে গুজরাতের মাথাপিছু রাজ্যের উৎপাদন পশ্চিমবঙ্গের থেকে প্রায় দু’গুণ বেশি। কিন্তু সম্প্রতি জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সার্ভেতে উঠে এসেছে যে বাংলার বাচ্চারা গুজরাতের বাচ্চাদের থেকে স্বাস্থ্যের দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে৷ সার্ভেতে যেই তথ্যগুলো উঠে এসেছে সেগুলো গ্রাফে দেখুন।
১৯৯৪ থেকেই গুজরাত এবং বাংলার মধ্যে ব্যবধান বেড়েই চলেছে। কিন্তু এই সময়তেই গুজরাতের শিল্পে উন্নতির সিংহভাগটা হয়েছে। প্রশ্ন হল গুজরাতের এই বিপুল শিল্পে উন্নতি তার রাজ্যের পরবর্তী প্রজন্মের কাজে এল না কেন?
প্রবীর চ্যাটার্জি একজন ডাক্তার যিনি গ্রামবাংলায় কাজ করেন৷ তার বক্তব্য অনুযায়ী রেশন ব্যবস্থার তূলনামূলক কার্যকরী নেটওয়ার্ক এবং মহিলাদের উচ্চ শিক্ষার বেশি প্রসার বাংলাকে এগিয়ে দিয়েছে। পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা শক্তিশালী হওয়াও আরেকটা কারণ।
রেশন ব্যবস্থায় একসময় বাংলা পিছিয়ে থাকলেও ২০১৬ সালের সার্ভেতে উঠে এসেছে যে পশ্চিমবঙ্গ রেশন ব্যবস্থায় রাজ্যগুলোর মধ্যে ওপরের দিকে উঠে গেছে।
বাংলায় সরকার বেশ অনেকদিন ধরেই জনস্বাস্থ্যের ওপর জোর দিচ্ছে। বাংলায় সরকারী হাসপাতাল বেড প্রতি ১,০০০ জনে ২.২৫টা। এতে সব রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে পশ্চিমবঙ্গ।
জ দ্রেজ বলেছেন যে পশ্চিমবঙ্গ যে খুব ভাল নিজেদেরকে করে ফেলেছে তা নয়। বরং গুজরাত এতটাই খারাপ যে পশ্চিমবঙ্গকে তার তুলনায় ভাল লাগছে। তিনি গুজরাতকে মডেল না বলে একটি ধাঁধা ভাবতে বেশি পছন্দ করেন। গুজরাত নারীর স্বাধীনতার দিক দিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে। তিনি বলেন যে শিশুস্বাস্থ্য আর নারী স্বাধীনতা যে পরস্পরের সাথে যুক্ত সেটা এখন সবার জানা।
গুজরাত সরকারের প্রাইভেট পার্টনারশিপের ওপর বেশি জোর তার রেশন ব্যবস্থাকে খুব একটা উন্নত করতে পারেনি।
তবুও জ দ্রেজের মতে গুজরাতের সামাজিক সূচকে খারাপ অবস্থার কারণ এখনো ভাল ভাবে বোঝা যায়নি৷