১৫ নভেম্বর ছিল বিরসা মুন্ডার জন্মদিন। ১৮৭৫ সালের এই দিনেই ঝাড়খন্ডে জন্মগ্রহণ করেন বীর বিরসা মুন্ডা। জমির মালিকানা থেকে সমাজ সংস্কার, সমাজে সকল বিষয়েই আমূল পরিবর্তনের বীজ পুঁতেছিলেন বিরসা। ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনে তিনি আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়কে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৯০০ সালের ৩ মার্চ ব্রিটিশ শাসকরা তাঁকে সহ ৪৬০ জনকে জামকোপাই অরন্য থেকে বন্দী করে। বিচার চলাকালীন ৯ জুন, ১৯০০ সালে রাঁচী জেলে চিকিৎসার অভাবে ও ব্রিটিশ পুলিশ কর্তৃক অকথ্য অত্যাচারে শহিদ হয়ে যান বিরসা মুন্ডা।
আজ বাসুদেবপুর গ্রামে বিরসা মুন্ডা হল্ট স্টেশনে বিষ্ণুপুর আইসা ইউনিট এর পক্ষ থেকে বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে একটি স্মরণসভা করা হলো। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কমরেড মঙ্গল মুর্ম্মু, তিতাস গুপ্ত, সুশান্ত ধীবর এবং ফারহান। সংগঠনের মতে আজকের দিনে বিরসা মুন্ডাকে স্মরণ করা, তাঁর ঐতিহ্যকে স্মরণ করে ঝাড়খণ্ড রাজ্য সৃষ্টি হওয়া এমন কি, উল্গুলানের ফসল হিসাবে 'ছোটনাগপুর টিন্যান্সি অ্যাক্ট'কে পাওয়া এক অতি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ভারতবর্ষের ইতিহাসে। এখন সামনের দিন গুলিতে জোট বেঁধে জল-জঙ্গল-জমি-বাতাস-জীবিকা বাঁচানোর, অধিকারের লড়াইকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। যে মুহূর্তে দাঁড়িয়ে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিরসা মুন্ডার ইতিহাস ভুলে গেছেন সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমরা আজ বিরসা মুন্ডার ইতিহাস চর্চা করি এবং আলোচনা করি বিরসার আন্দোলন আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কতটা প্রাসঙ্গিক। আজ এই স্মরণসভা যেখানে অনুষ্ঠিত হয় সেখানে, মানে বাসুদেবপুর ও তার পার্শ্ববর্তী ৭/৮ কিমি পরিধিতে কোন গ্রামেই তেমন কোনো সরকারী ভালো উচ্চমাধ্যমিক স্কুল নেই। এখানকার গ্রামবাসী ও বনবাসীরা নিজেদের ফসল বিক্রি, পেশাগত প্রয়োজনীয়তার দিক থেকে এখনও বিচ্ছিন্ন। তায় এই বিষ্ণুপুর-তারকেশ্বর রেলপথ নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি তুলছে আইসা। যখন হুগলি আর বাঁকুড়ার সব এম.পি রা বিজেপির তখন কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা রেল-কে তাঁরা আরো ভালো না করে বিক্রি করতে চাইছে কেন? বিরসা মুন্ডা হল্টের এমন দশা কেন চোখে পড়ে না মন্ত্রীর? এই রেল চালু হলে এখানকার চাষীরা তাদের ফসল রপ্তানিতে ব্যাপক লাভবান হবেন এবং ব্যবসা থেকে শুরু করে পর্যটন এই রেলের রুট ধরেই আগামীতে এখানকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। বিকল্প কৃষিজ ফসলের সঠিক দাম পাওয়া, বিভিন্ন হাতের তৈরি উপকরণ, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উপকরণ এই পথে অনায়াসে শহর-কলকাতায় পৌছে যেতে পারে। গ্রামীণ দরিদ্ররা পেতে পারেন চিরদারিদ্র্যতা থেকে মুক্তি।