কৃষক সংগঠনগুলোর ডাকা ভারত বনধে সাড়া দিয়ে শত-শত সিপিআই(এমএল) ও কিসান মহাসভা কর্মী পাটনার রাস্তায়-রাস্তায় প্রতিবাদ সংগঠিত করেন। এই প্রতিবাদগুলোয় নেতৃত্বদানকারী কমরেডদের মধ্যে ছিলেন সিপিআই(এমএল)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এবং সারা ভারত কিসান মহাসভার সাধারণ সম্পাদক রাজারাম সিং। এরআগে কৃষকরা বুদ্ধ স্মৃতি পার্ক থেকে ডাক বাংলা চক পর্যন্ত মিছিল করে গিয়ে সেখানে চাক্কা জ্যাম সংগঠিত করেন। প্রতিবাদে আরও যাঁরা নেতৃত্ব দেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন সিপিআই(এমএল)-এর বিহার রাজ্য সম্পাদক কুনাল, ধীরেন্দ্র ঝা, মীনা তেওয়ারি, উমেশ সিং, রাজেন্দ্র প্যাটেল, শম্ভুনাথ মেহতা, অভ্যুদয় ও অন্যান্যরা।
এক জনসভায় তাঁর ভাষণে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, সারা দেশই অসংখ্য স্থানে বনধ ও রাস্তা অবরোধ সংগঠিত করে কৃষক স্বার্থের বিরোধী এই বিলগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এই বিলগুলো কৃষকদের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক। রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা সত্তেও জোরজবরদস্তি যেভাবে বিলগুলোকে পাশ করানো হয়েছে তা গণতন্ত্রের হত্যা ছাড়া অন্যকিছু নয় এবং দেশ কখনই এটাকে মেনে নেবে না। তিনি আরও বলেন, মোদী সরকার যেভাবে কৃষিকে নিলামে চড়াচ্ছে এবং কর্পোরেট সংস্থাগুলোর তোষণ করছে, আমরা কোনভাবেই তাকে মেনে নিই না। আজ ছাত্র, যুবক এবং সাধারণ জনগণ কৃষকদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। কৃষক-বিরোধী সরকারকে কখনই দেশ শাসন করতে দেওয়া যাবে না। আমরা কোম্পানি রাজকে প্রত্যাখ্যান করছি। আগে দেশে ব্রিটিশ রাজ বলবৎ ছিল; আজ যদি ওরা মনে করে থাকে যে দেশে এবার আম্বানি-আদানি রাজ কায়েম হবে তবে ওরা মস্ত ভুল করবে। এই বিলগুলো যতদিন প্রত্যাহার করা না হয় ততদিন আমাদের লড়াই চলবে। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এটা একটা ইস্যু হবে এবং কৃষকরা আগামী নির্বাচনে তাঁদের ক্রোধের প্রতিফলন ঘটাবেন।
সারা ভারত কিষান মহাসভার সাধারণ সম্পাদক রাজারাম সিং বলেন, দেশের কৃষক সংগঠনগুলো আজ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। শ্রমিক সংগঠনগুলোও এই আন্দোলনে পুরোমাত্রায় সমর্থন জানাচ্ছেন। আমরা মোদী সরকারকে কৃষক-বিরোধী বিলগুলো দেশে প্রয়োগ করতে দেব না। দেশের সমস্ত সম্পদকে ওরা একে-একে বেসরকারী কোম্পানিগুলোকে বিক্রি করে দিচ্ছে। আমরা এটাকে মেনে নেব না। এই সরকার ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে কোনো আইন করেনি, কিন্তু কৃষকদের কাছ থেকে কৃষিকে ছিনিয়ে নিতে ওরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। এটা কখনই ঘটতে দেওয়া যাবে না।
পালিগঞ্জের প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেন এআইএসএ-র সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ সৌরভ। গোপাল রবিদাসের নেতৃত্বে সিপিআই(এমএল) ও সারা ভারত কিসান মহাসভার কর্মীরা মাসৌরির চৌরাস্তা অবরোধ করেন।
আরা, তারারি এবং আগিয়াঁওতে প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেন যথাক্রমে রাজু যাদব, বিধায়ক সুদামা প্রসাদ এবং মনোজ মঞ্জিল। সিওয়ান, জাহানাবাদ ও আরওয়ালের প্রতিবাদী মিছিলগুলোতে নেতৃত্ব দেন অমরনাথ যাদব, রামবলি সিং যাদব এবং মহানন্দ।
পূর্ণিয়া, দ্বারভাঙ্গা, মধুবনী, মুজাফ্ফরপুর, সমস্তিপুর ও বেগুসরাইয়ে সংগঠিত প্রতিবাদগুলোয় চাক্কা জ্যাম, মিছিল সংগঠিত হয়, প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানো হয় এবং ৫৭নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। গয়াতে প্রতিবাদী মিছিল ও প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানোয় নেতৃত্ব দেন কিসান নেতা জীতেন্দ্র যাদব। বৈশালিতে সংগঠিত প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেন সারা ভারত কিসান মহাসভার রাজ্য সভাপতি বিশ্বেশ্বর যাদব। সুপৌল, খাগারিয়া, রোহতাস, গোপালগঞ্জ, নওয়াদা, ঔরঙ্গাবাদ, কৈমুর, বক্সার, চম্পারণ, ভাগলপুর এবং অন্যান্য জেলাতেও কৃষকরা উৎসাহের সঙ্গে প্রতিবাদে অংশ নেন।